ভালোবাসার উপহার
সুনীপা শী
মাঝ রাতে বাবানের ঘুম ভেঙে যেতে , বিছানায় দেখে তিয়াশা নেই। বাবান তিয়াশাকে ডাকতে থাকে তিয়াশা সাড়া দেয় না। তারপর বাবান দেখে ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে তিয়াশা এক মনে সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে আছে ।
বাবান তিয়াশাকে দেখতে পেয়ে বলে ঠিক ভেবেছি কোথাও যখন তোমাকে দেখতে পায়নি তখন এখানেই আছো । তারপর বাবান তিয়াশাকে জরিয়ে ধরে বলে বিয়ের পর প্রথম হানিমুনে এসে মাঝ রাতে বরকে সময় না দিয়ে এই ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে এক মনে সমুদ্র দেখছ।
তিয়াশা বলে শুনতে পাচ্ছ বাবান। ঢেউ-এর শব্দ। এত দুর থেকেও হালকা ভাবে দেখা যাচ্ছে সমুদ্রের ঢেউ একটার পর একটা কেমন পারে এসে আছড়ে পড়ছে ।বাবান বলে সত্যি সমুদ্রের ঢেউ বলেই না এতো জরে জরে আওয়াজ হচ্ছে। না জানি কাছ থেকে দেখলে আরো কত ভালো লাগবে তোমার । তিয়াশা এক মুখ হাসি নিয়ে বলল, জান তো, বাবান আমার এখন ইচ্ছা হচ্ছে এক ছুটে আমি সমুদ্রে চলে যায় । বাবান বলে সমুদ্র দেখতে নিশ্চয়ই যাবে, তবে এখন নয় ।এখন হলো মাঝ রাত । বিয়ের পরে প্রথম আমাদের হানিমুন । হানিমুনে এসে অনেক অনেক এনজয় করব বলে বাবান তিয়াশাকে কোলে নিয়ে রুমে চলে যায়।
তিয়াশা আমি জানি তুমি নদী সমুদ্রকে খুব ভালোবাস । তাই তোমার কাছে একটা কথা জানতে বড় ইচ্ছা হচ্ছে, আমি যদি নদী কিংবা সমুদ্র হতাম তুমি এমনই আমাকে ভালো বাসতে? বাবান-এর কথা শুনে তিয়াশা হাসে । বাবান তিয়াশাকে জিজ্ঞেস করে, হাসছে কেন ? হাসতে হাসতে তিয়াশা বাবানকে জরিয়ে ধরে বলে বাবান সমুদ্র, বাবান নদীকে এই ভাবে জড়িয়ে ধরতে পারতাম না । আর যদি জড়িয়ে ধরতাম তাহলে বাবান নদী, বাবান সমুদ্রের অথৈই জলে তলিয়ে গিয়ে আমি জীবন হারাতাম । নদী সমুদ্রকে আমার ভালো লাগে । এই বাবানকে আমি ভালোবাসি । ভালোবেসে আমার জীবন আমি উজার করে দিতে পারি ।তোমাকে আকড়ে ধরে বাঁচতে পরি । আই লাভ ইউ বাবান । আই লাভ ইউ । আই লাভ ইউ টু তিয়াশা।
তোমার মনে আছে তিয়াশা ,তুমি নদী ভালোবাস বলে ছোট বেলায় তোমার জন্য একটি নদী কিনব ভেবেছিলাম ।
মনে থাকবে না আবার,খুব মনে আছে ।নদী কিনবে বলে কত যে খেলার দোকান ঘুরেছ।
ছোটবেলায় তোমাকে আমি নদী কিনে দিতে পারিনি তবে তুমি দেখ তোমাকে একদিন আমি ঠিক তোমার পছন্দের জিনিস টা কিনে দেব।
এক বছর পরে বাবান আর তিয়াশার বিবাহ বার্ষিকে বাবান তিয়াশাকে বড় একটা ফ্রেমে আকা নদী উপহার দিলো । তিয়াশা বাবান এর দেওয়া উপহার পেয়ে খুশি । বাবান তিয়াশাকে বলল আমার দে ওয়া উপহার পেয়ে তুমি খুশি হয়েছ জানি । তবে আরো বেশি খুশি হবে একটি বার তোমার চোখ দুটি বন্ধ করে মনে মনে ভাবো এই যে নদীর পারে দেখছ একটি ছেল আর একটি মেয়ে বসে আছে এরা সেই ছোট্ট বেলার বাবান আর তিয়াশা । নদীর পারে যখন ঢেউ গুলো একটা একটা এসে পরছে বাবান তিয়াশা র গুনতে ভুল হয়ে যাচ্ছে। ঐ দেখ ঐ দিকের পারে বাবান এর বয়স যখন আঠারো ,আর তিয়াশার বয়স যখন ষোলো তখন বাবান হাতে একটা গোলাপ নিয়ে তিয়াশাকে তার মনের কথা জানাচ্ছে । তিয়াশা চোখ বন্ধ অবস্থায় বলে এতো বছর ধরে যে এই দিনটার জন্য অপেক্ষা করেছিলাম। আই লাভ ইউ বাবান তোমার দে ওয়া আঁকা ছবি শুধু যে ছবি নয় ।আজ মনে হচ্ছে আমরা দুই জনে নদীর পারে দাঁড়িয়ে আছি । ছবি শুধু ছবি নয়, এলো জীবন্ত বাস্তব।
=========================
নাম -সুনীপা শী গ্রাম -মামুদপুর থানা- ফলতা পোষ্ট- রাজারামপুর জেলা -দক্ষিণ ২৪ পরগনা