ছবিঋণ- ইন্টারনেট।
নদী কথায় ভেসে যায় .....
তীর্থঙ্কর সুমিত
কত জমানো কথা ভেসে যায় নদীবুকে।কেউ খবর রাখেনা।কোনো গল্পের শেষ হয়না। শেষ হয় কথার।ওখানেই শুরু হয় নতুন গল্পের।নতুন থেকে চিরনতুন হতে হতে আটকে যায় চোখ।সেই চোখ থেকে সৃষ্টি হয় এক একটা গঙ্গা,এক একটা পদ্মা।ভালো থাকার লড়াইয়ে জলের স্রোতে ভেসে যায় অব্যক্ত কত কথার যন্ত্রণা।হয়তো এভাবেই সৃষ্টি হয় কয়েকটা কথা, কয়েকটা চিহ্ন আর এক একটা মরুভূমি...
প্রতিটা দিন কেটে যায় রাতের আঁধার বুকে নিয়ে।কবিরা জন্ম দেয় হাজারো কবিতার।সময়ের সাথে সাথে সময়কে বুকে নিয়ে ফিরে আসে ঢেউ।আজকের প্রশ্ন আগামী কাল পুরনো।নতুন থেকে চিরনতুনের সন্ধানে আমরা সকলে । কখন যেনো একের পিঠে বহু শূন্য নিয়ে ওজন বাড়াই ।নিজের অচিরেই ফাঁকা হতে হতে কখনো আবার নদীর সাথে মিশে যাই ।গঙ্গা ,পদ্মার বুকে লিখে রাখা এক একটা যন্ত্রণা কত নষ্টা মেয়েকে সতীত্ব দিয়েছে। আর আমি নতুন হতে হতে কখন যেন ঢেউ-এর সন্ধান পেয়েছি।
নদীটা রোজ দেখি বয়ে যায় নিজের মতো। হাজার যন্ত্রণা বুকে নিয়ে নদী বয়ে যায় নিজের গন্তব্য স্থলে।এই গন্তব্য কোথায় আমরা কেউ জানিনা।তবুও অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি তার দিকে।তার গন্তব্যের দিকে।কিছু বোঝার আগেই শত ঢেউ ভিজিয়ে দেয় আমাদের।এভাবেই কত কথা ঢেউয়ের স্রোতে হারিয়ে যায়।কত লাল সাদা হয়ে ওঠে।ফিরে আসে তোমার আমার নদী স্রোতে ভেসে যায় কত কথা...
বলতে বলতে বলাটাই বাকি থেকে যায়,প্রতিদিনের আশ্চর্যতা মূলত ভাবায় না কাউকে।শুধু আঙ্গুলের পরিবর্তন। কথার সাথে বিন্দু পরিবর্তন হতে হতে কখন যে বৃত্ত ছেড়ে বেড়িয়ে গেছে বহুদূর।কেউ খবর রাখেনা।খবর রাখে স্রোতস্বিনী নদী তার ঢেউ হারিয়ে চুপ করে বসে আছে।কিন্তু তা ক্ষণিকের আবার ঢেউ এসে ভিজিয়ে দিয়েছে পাড়।এভাবেই নদী আমায় গল্প শোনায় প্রতিদিন।আমি ভেসে যাই নদী বুকে বহু বহুদূর ...
বহুদূর নয়।ঠিক যতটা দূর ভাবি ততটাও নয়।তবুও সবাই বলে অনেক অনেক দূর।কখনো কখনো আমিও তাই ভাবি। কিন্তু ভাবনার ইতি ঘটতে না ঘটতে,আবার নতুন সংগ্রামে ভেসে গেছে কত কথা ।হয়তো এইভাবেই এক একটা দিন কেটে হয় রাত্রি।আর রাতের অাঁধারে লুকিয়ে থাকে দিনের কাব্যকথা ।যে নদী বয়ে গেছে বহুদূর তার ঠিকানা আমরা কেউ রাখিনা।তবু প্রতিটা ঘরে তার বয়ে যাওয়ার স্মৃতি চিহ্ন লুকিয়ে থাকে।যে ভাবে নদী বয়ে যায় ঠিক সেভাবেই ফিরে আসে প্রতিদিনের অবাধ্য কিছু যন্ত্রণা ।তবে সব ই ক্ষণস্থায়ী ।
আর বেঁচে থাকার মানে ...
কথার সাথে সাথে কথারা বদলে যায়।দুপুরের রোদ গায়ে মেখে ভোরের কাকটা
বাড়ি ফেরে ক্লান্ত হয়ে।ঘরের সাথে সাথে ঘর বদলে যায়।নতুন নতুন মুখ খুঁজে ফেরে চিরনতুনের সন্ধানে।গল্প কথায় সাজিয়ে নেয় তথ্য।আর ফিরে আসে কিছু অবাধ্য যন্ত্রণা।যেখানে জন্ম হয় এক একটা কবির।আবার ফিরে পাওয়া মুহূর্তে নদী কথায় ফিরে আসে প্রতিদিনের বেঁচে থাকার মানে।যে নদী স্রোত হারিয়েছে সে নদীর গভীরে যেওনা ...
সময়ের সাথে সাথে সময় বদলে যায়।মুহূর্তের সাথে মুহুর্ত।সবাই কথা রাখে। শুধু সময় পেরিয়ে গেলে ভুলে যাওয়ার অভিনয় করে । তাইতো ফাঁকা পথেও কথায় যেনো একটা জট। জটের মধ্যে লুকিয়ে থাকে আমার পৃথিবী।জল আলো বায়ু সবই আছে।শুধু হারানো দিনগুলো আর নেই।নেই কোনো সীমাবদ্ধতার লড়াই।সবাই মুক্ত ।মুক্ত পৃথিবীর কথা আমরা সবাই জানি।কবি , গল্পকার , পবন্ধকার সবাই সাজিয়ে নেয় তাঁর পৃথিবীকে। আমার কল্পনায় হৃদয় ভেসে যায় __ গঙ্গা,মেঘনা,পদ্মার দিকে ...
যে পথটা বেঁকে গেছে সে পথটাই মনে হয় সবথেকে সোজা ছিল।বহুদিন আগে যে রাস্তা হারিয়ে গেছে,সে রাস্তার ই আজ বড় প্রয়োজন।কয়েকটা অক্ষর কি কয়েকটা চিহ্ন কখনো ই রাস্তার গল্প শোনায় না। শোনায় না ফেলে আসা নদী বাঁকের গল্প। যে গল্পে দুপুরের রোদ বিকালের ধুলো আর রাতের ভালোবাসা লুকিয়ে থাকে।তাইতো আমি গঙ্গার কাঁধে মাথা রেখে পদ্মাকে দেখি।আর মেঘনার গল্পে ব্রহ্মপুত্রর রূপ খুঁজি।
অক্ষরগুলো মনে হয় এইভাবেই হারিয়ে যায় মানুষের জীবন থেকে।সাদা কালো সব ই রং মাত্র।আর হারিয়ে না যাওয়ার কারণ নেই কোনো।শুধু হাততালি আর পুরস্কার কখনই সঠিক পথের সন্ধান দেয়না।ফেলে আসা স্মৃতি আর অভ্যাস একে অপরের পরিপূরক।তাইতো গানের সাথে গান,পথের সাথে পথ লুকিয়ে থাকে প্রতিটা অক্ষর বিন্যাসে।আর এখানেই সৃষ্টি হয় এক একটা নদীকথা।যেখানে সব স্রোতের পথ চলা শুরু ...
যে নদীটা রোজ দেখি বয়ে যেতে তাকে নিয়েই মানুষের যত প্রশ্ন।সকাল থেকে রাত যত ভাবনা,অনুশোচনা,ক্রমশ ভালো লাগার তাগিদ আবার নানা প্রশ্ন।এভাবেই দিন চলে যায়।কেউ এর গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করে না।কোনো কারণ ছাড়াই অকারণে নানা কথা।যুক্তিগুলো কে পাশাপাশি সাজিয়ে নতুন হয়ে ওঠা।এভাবে কি কিছু ফিরে আসে?
যখন একা দাঁড়াই রাস্তায়।মনে হয় কত রাস্তা মিশে গেছে এপাশ থেকে ওপাশ।ওপাশ থেকে এপাশ।ভালো লাগা কি না লাগার সূত্র ধরে ক্রমশ এগিয়ে যাই।আরো রাস্তার খোঁজে ।শেষ কোথায় কেউ জানিনা।তবুও শেষের নেশায় শুরুকে খুঁজি প্রতিদিন।আর হারিয়ে যাই কোনো নদীর বুকে। যার স্রোত প্রতিনিয়ত আমায় ভেজায়। যার পাড়ে দাঁড়িয়ে প্রতিনিয়ত নিজেকে নতুন করে গড়ে তুলি।
যে কথাগুলো অনেকদিন আগে বলার ছিল।সে কথাগুলো বলা হয়েছে।গভীর থেকে গভীর ভাবে।শুধু বলার প্রয়োজনীয়তা থেকে অপ্রয়াজনীয়তায় ব্যাবহার হয়েছে বেশি। অক্ষর চিহ্ন আরো কত কি?ভেসে গেছে কথামালা ।তবুও বদল হয়নি মুহুর্ত।শুধু বদলেছে সময়।বহুদিনের ব্যার্থতার ইতিহাস আজকে অব্যার্থ চাহিদার সাথে হুবহু মিল।যে পথ বেঁকে যেতে যেতে বাঁক নিয়েছে নদী বুকে,সে পথ ই আজ নদী কথা বলে।
=========================
তীর্থঙ্কর সুমিত
মানকুণ্ডু, হুগলী