Click the image to explore all Offers

অণুগল্প ।। খোকন সোনা ।। সাবিত্রী দাশ

 
                                                                                                                                                          ছবিঋণ- ইন্টারনেট।

খোকন সোনা 

 সাবিত্রী দাশ


 
খোকন সোনার আজ মন ভালো নেই । স্কুলে  ইংলিশ পড়া দিতে পারেনি বলে  মাষ্টারমশাই এর কাছে বকুনি খেয়েছে ।‌ স্কুলে মাষ্টারমশাই এবং দিদিমণিরা সব্বাই খুব ভালবাসে খোকন সোনাকে । তবু্ও আজ বকুনি দিয়েছে ,পরে অবশ্য আদরও করেছে। একা-একা অন্ধকারে মন খারাপ নিয়ে বসেছিল  খোকন  তখন তাদের বাড়ির কাজের  মেয়ে রমা  পড়াশোনায় খুব ভালো ,  সে এসে পাশে বসলো।  বললো‌ তোমার কোন ভয় নেই  , আমি তোমাকে লুকিয়ে লুকিয়ে সব পড়া তৈরি করে দেবো ।   তারপর  থেকেই ওদের মধ্যে  বেশ বন্ধুত্ব জমে উঠলো।  এবং রোজ রোজ পড়া তৈরি করার জন্যে  আসতে থাকলো, কিন্তু রমাকে পাশে বসতে দেখেই রেগে যায় খোকনের  মা । একদিন বললো তোমার জন্যই আমার  ছেলের পড়াশোনা ঠিকঠাক হচ্ছে না ,স্কুলে মাষ্টারমশাই ও দিদিমণির কাছে বকুনি খেতে হয় । রমা বললো আমার জন্য?  আমি কি করলাম? খোকনের মা বললো, তুমি যদি  ওর কাছে আজে বাজে গল্প না করতে আসতে তাহলে  ও স্কুলে বকুনি খেয়ে আসতো না।
রমা বললো  খোকন তো কাল গল্প শোনার জন্য জেদ ধরলো তাই গল্প শুনিয়েছিলাম । তারপর  রমা খোকন কে বললো এই নাও নাড়ু গুলো  খাও আমার মা বানিয়েছে । খুব সুন্দর , খোকন আনন্দে এখন সব গুলো নাড়ু খেয়ে নিলো।   এইবার শোন, তোমার মাষ্টারমশাই ও দিদিমণি তোমাকে আজ বকেছে তাই  আমি তোমাকে পড়াতে এসেছি । দেখবে আর কোনদিনও তোমাকে বকবে না।  তারপর থেকেই রমা নিজের পড়া ফেলে খোকনের পড়াটা তৈরি করে দিয়ে যায়। এর পর থেকেই  খোকনকে স্কুলে বকুনি খেতে হয়না। 
 দিদিমণি খুব খুশি হয়ে আদর করে খোকনকে।  পরিক্ষার রেজাল্ট খুব ভালো করেছে । কিন্তু রমা আগে ক্লাসে খুব ভালো ছাত্রী ছিল , এখন সে ক্লাসে অনেক পিছিয়ে যাচ্ছে কেন সে কথা কাউকে বলতে পারেনা । একদিন  হাসতে হাসতে রমার মাকে খোকনের মা বললো,কাল থেকে তুমি তোমার মেয়েকে নিয়ে আমাদের বাড়ি ছেড়ে চলে যাও । তোমার মেয়ের জন্য আমার ছেলের পড়াশোনা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পরের দিন সত্যি সত্যি  রমা ও তার মা বাড়ি ছেড়ে চলে গেলেন। খোকন স্কুল থেকে ফিরে এসে দেখে রমা ও তার মা নেই।  সেই রাতে খোকনের কিন্তু কিছুতেই ঘুম‌ এলো না। রমাকে মনে মনে খুব ভালোবেসে ফেলেছে দুজন দুজনকে না দেখে এক মুহুর্ত থাকতে পারে না। তাই তার কান্নায় গলা ভারি হয়ে  এলো । এদিকে যাওয়ার সময় খুব কান্না পাচ্ছিল রমার‌ও।  নেহাৎ চোখের জল  কাউকে না দেখিয়ে চুপচাপ  অন্তরের গভীর  যন্ত্রনা নীরবে সহ্য করে চলে যেতে হলো।
=============================

সাবিত্রী দাশ 
গ্রাম+ পোষ্ট+ দুর্গাপুর 
থানা -নন্দিগ্রাম 
জেলা -পুর্ব‌‌‌ মেদিনীপুর 
পশ্চিমবঙ্গ 
ভারত 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.