উদ্দেশ্য
প্রতীক মিত্র
ট্রেনটার যাওয়ার যেন আর ইচ্ছে নেই। দুটো স্টেশনের মাঝে সেই যে দাঁড়িয়েছে ব্যস আর নড়ছে না। আশপাশে শুধুই ধুধু প্রান্তর রোদে পুড়ে যাচ্ছে। বান্টিকে লাইনে নেমেই অন্য কামরায় যেতে হল। সেই কামরায় কষ্ট করে কোমরের ব্যথা নিয়ে উঠে দেখলো ওর কপাল ভালো। আর কেউ ঠান্ডা জল বিক্রি করছে না। ও একাই। দু'চারটে বিক্রিও হয়ে গেল। হাতে আর যে কটা রয়েছে খালি হয়ে গেলে বাঁচে। এইসব বান্টির কাজ নয়। ও উলুবেড়িয়া স্টেশনের আশেপাশে ঝুড়িতে কলা বেচে। সেখানে আজ জাকিরকে বসিয়েছে। জাকিরের পায়ে লেগেছে। সে ব্যাটা নড়াচড়া করতে পারছে না। লেগেছে তো বান্টিরও কোমরে। একই বাইক দুর্ঘটনায়।বান্টি তবু এদিক ওদিক নড়াচড়া করছে।কিন্তু যেই মনোযোগ আর স্পৃহা দিয়ে করার সেটা সে আনতে পারছে না।ওর অভ্যেস বসে বিক্রি করার। ও কি আর এতো দৌড়াতে পারে। তারপর ব্যাগের প্লাস্টিকে বরফগলা জলটাকে সাবধানে রাখতে হচ্ছে।জল ঠান্ডা না হলে কেউ নেবে না।কেন যে রাজী হয়ে গেল?পরোপকার?নাকি অন্য কোনো মতলব?আসলে বাইক চালিয়ে কেরামতি দেখানোর রাতে জাকিরের দিদি বান্টির গরম রুপটা দেখেছে। নরমটা দেখবে এখন। সেই আশায়…অথচ বান্টির এইসব মাথায় নেই ওই দিদি আছে না গেছে। বয়সে বান্টির চেয়েও বড়।তার ওপরে আবার মুসলিম। ইত্যাদি।না এগুলো ভাবা উচিৎ ছিল।উলুবেড়িয়া ফিরতে পারলে বাঁচে। বরফগলা জল সহযোগে প্যাকেটটাকে ধরে রাখাই একটা ফ্যাকড়া। ট্রেনটা চলে আর না।
কোন্নগর,পশ্চিমবঙ্গ