Click the image to explore all Offers

গল্প ।। ঘুম নেই ।। প্রিশিতা পরী


                                                                                                                                                               ছবিঋণ- ইন্টারনেট।
 

ঘুম নেই

প্রিশিতা পরী

 

 একটার সময় অফিস থেকে বেরিয়ে রুদ্রনগর এর একটি হোটেলে মধ্যাহ্নভোজন সাঙ্গ করলাম । গঙ্গাসাগর থেকে পৌনে ২ টায় ভেসেলে পার হলাম। ভাগ্যিস জোয়ার ছিল না হলে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হত। 

মুড়িগঙ্গা নদীর ফুরফুরে হাওয়া উদাস মনকে চাঙ্গা করে তুললো।সপ্তাহান্তে বাড়ি ফেরার জন্য মন উদগ্রীব হয়ে আছে।

ভেসেল থেকে নেমে পিঠে ব্যাগ চাপিয়ে দ্রুত গতিতে ছুটতে থাকি বাসস্ট্যান্ড অভিমুখে ।

নানখানা কাকদ্বীপ বাসে কাকদ্বীপ স্টেশন এর কাছে নেমে পড়লাম । ৮০০ মিটার হাঁটলেই স্টেশন । তাই টোটো ভাড়া না করেই দুলকি চালে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে গেলাম টিকিট কাউন্টারে।

পঁচিশ টাকা টিকিটের দর কাকদ্বীপ থেকে শিয়ালদহ। তখন সন্ধ্যা ছয়টা চোখটা একটু লেগে আসছিল।

ফুটপাথ ধরে হাঁটতে মৌলালী পৌঁছে গেলাম। সেই দুপুরে খেয়েছিলাম পেটে ইঁদুরের বাচ্চা কামড়ে ধরেছে।এনআরএস হাসপাতালের উল্টোদিকে এক বিহারী হোটেলে ঢুকে পড়লাম। চারটে রুটি ও ডিমতড়কা অর্ডার করে তৃপ্তি সহকারে উদর ভর্তি করি। হাত মুখ ধুয়ে প্যান্টের পকেট থেকে পার্সটা বের করলাম । অফিসের সচিত্র পরিচয়পত্র , কোয়াটারের  চাবি হাজার পাঁচেক টাকা - সব কটা পাঁচশো টাকার নোট। মাসের মাইনের কিছু টাকা কাছে রেখে দিয়েছিলাম।

পাঁচশো টাকা ধরিয়ে দিতে আমাকে সাড়ে চারশো টাকা ফেরত দিলো। 

পার্স টা ব্যাগের উপরের পকেটে রেখে রাজ্য যুব আবাসের দিকে এগিয়ে চললাম। তখন রাত আটটা হবে।

রিসেপশনে নাম লিখে সই করতে বলল।এমন সময় উপর থেকে ওয়ার্ডেন তাপস প্রহরাজ ঈষৎ হাস্য বদনে বললেন, "প্রবীরবাবু আপনার ব্যাগের চেইন খোলা কেন?"

ভাবলাম উনি তামাশা করছেন। দ্বিতীয়বার ব্যাগ দেখার কথা বলতে পিঠের ব্যাগ নামিয়ে দেখি সর্বনাশ! যে পকেটে পার্স রেখেছিলাম সেটাই চেইন খোলা ।

মাথায় যেন বাজ পড়লো। পাগলের মতো ব্যাগের সব চেইন খুলে খুজতে লাগলাম পার্সটা।

পেলাম না ।চোখে সর্ষে ফুল দেখতে থাকি।কি করবো বুঝে উট তে পারছি না। থানায় জিডি করে ফিরে এলাম।

বিছানা চাদর পেতে চোখ বন্ধ করার চেষ্টা করলাম কিন্তু কিছুতেই চোখে ঘুম আসছে না। সারা মাসের পরিশ্রম করা টাকা এভাবে পকেটমার হবে ভাবতেই কেমন যেনো বিষন্নতায় মন ভরে গেলো।বাড়িতে ফোন করে সব জানালাম।মা দাদা বাবা সান্ত্বনা দেয়।"ও সব ভুলে যা ।কোনো টেনশন করিস না।"

হৃদয় কিছুতেই মানতে পারছে না এমন ঘটনা।সেই যে চিন্তা ঢুকলো তার রেশ এক সপ্তাহেও কাটলো না।

চিন্তাগ্রস্ত শরীরে ঘুম নেই।

-----------------------------


Vill & PO - Paramanandapur 
PS - Moyna
Pin - 721644

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.