পুরুর বীরত্ব
সুজয় সাহা
রাজা পুরুষোত্তম বা পুরু ছিলেন পৌরবের রাজা। এই প্রাচীন ভারতীয় রাজ্য বিতস্তা ও চন্দ্রভাগা নদীদ্বয়ের মধ্যে অবস্থিত ছিল। যা আধুনিক পাঞ্জাব, পাকিস্তান এবং বিপাশা নদীর অববাহিকার অন্তর্ভুক্ত।
রাজা পুরুষোত্তম ৩২৬খ্রিস্টপূর্বাব্দে মহামতি আলেকজান্ডারের অধীনে সামন্ত রাজা রূপে রাজত্ব করেন। কৌতুকের বশে যুদ্ধে পুরুর পরাজয় এবং গ্ৰেপ্তারের পর আলেকজান্ডার পুরুকে জিজ্ঞেস করেছিলেন যে তিনি কীভাবে তার সাথে আচরণ করতে চান। পৌরাস পরাজিত হলেও গর্বের সাথে বলেছিলেন যে তাকে রাজার মতো আচরণ করাতে হবে। আলেকজান্ডার তাঁর বিরোধী দ্বারা এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে তিনি তাকে কেবল তার নিজের রাজ্যের তত্বাবধায়ক হিসেবে পুনরুদ্ধার করেননি, বরং হাইফোসিস অবধি দক্ষিণ পূর্ব অঞ্চলে জমিগুলোতে আধিপত্য দান করেছিলেন।
আলেকজান্ডার ভারতে তার সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হন বিতস্তা নদীর তীরে রাজা পুরুষের সাথে। ৩২৬খ্রিস্টপূর্বাব্দের মে মাসে এই ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ৩৪হাজার মেসিডোনিয়ান পদাতিক সৈন্য ও ৭০০০গ্ৰিক অশ্বারোহী সৈন্য নিয়ে আলেকজান্ডার অগ্ৰসর হন। তাকে সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসেন রাজা আম্ভি, যিনি পুরুষকে নিজের পথের কাঁটা ভাবতেন। আলেকজান্ডার জানতেন যে পোরাসের বিশাল সৈন্যবাহিনীর বিরুদ্ধে সরাসরি লড়াইয়ে তার লোকেদের কোনো সুযোগ থাকবে না। ৩০,০০০পদাতিক , ৩০০রথ এবং ২০০হাতি নিয়ে, পোরাসের সৈন্যরা নদীর ওপারে অপেক্ষা করছিল। শুধু তাই নয়, পুরুষের সেনারা আলেকজান্ডারের সেনাবাহিনীর অভ্যন্তরীণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভেঙে ফেলতে সক্ষম হয় ও তার প্রধান সেনাপতিদের একজন নিকাইয়াকে হত্যা করে। রাজা পুরুষ আলেকজান্ডারকে দ্বন্দযুদ্ধে আহবান জানান, যাতে আলেকজান্ডার ঘোড়া থেকে পড়ে যান। পুরু তাকে হত্যা করবেন কিনা ভাবতে দেরী করে ফেলেন। এর মাঝে আলেকজান্ডারের দেহরক্ষীরা তাকে সরিয়ে নেয়। প্রবল প্রতিরোধের মুখে আলেকজান্ডার পিছু হটে যান যখন শোনেন মগধের রাজা নন্দ তার ২লক্ষ পদাতিক সৈন্য, ৮০হাজার অশ্বারোহী সৈন্য, ৮হাজার যুদ্ধ যান ও ৩হাজার যোদ্ধা হাতি নিয়ে তাকে প্রতিরোধের জন্য অপেক্ষা করছেন।
================================
ছবিঋণ - ইন্টারনেট।
নাম:সুজয় সাহা
162/a 3no.natungram, rishra Hooghly
Post:morepukur