আনন্দের রাগিণী
আরতি মিত্র
প্রকৃতির অভিপ্রায় হ'ল নতুন প্রজন্মকে আনন্দে , সঙ্গীতে পূর্ণ করে নবরূপে রূপায়িত করা। একটি কথা সবারই জানা। প্রভাতের যে মিষ্টসঙ্গীত মানবসভাকে মধুময় করে তোলে তা প্রকৃতির আশ্রিত পাখিদেরই কলকাকলী।
বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। আধুনিক সভ্যতা বস্তুতান্ত্রিক । এ সভ্যতায় লালিত মানবসমাজ বারংবার প্রকৃতির স্নেহস্পর্শবিজড়িত অরণ্যসভাকে অপবাদ দেয়। আজ বিজ্ঞান পুরাতনকে ভেঙে নূতন সৃষ্টিতে মগ্ন।
যে অরণ্যসভায় মানুষ অনাবিল শান্তি ও আনন্দের স্পর্শ লাভ করতো যেখানে স্বাধীনভাবে নির্জনে নিমগ্ন হয়ে বিশ্বজনের সঙ্গে একাত্ম হয়ে থাকতো আজ সে সভাকেই মানুষ অপবাদের অলংকারে ভূষিত করছে।
মানুষ গর্বে অন্ধ হয়ে দৃঢ় কন্ঠে প্রকৃতির অভিপ্রায়কে ব্যক্ত করছে। ভবিষ্যতে এই অরণ্যসভায় মরুভূমির শুষ্কতা বিরাজ করবে। প্রাণের স্পন্দন যাবে স্তব্ধ হয়ে। কিন্ত মানবের এই অহংকৃত বাক্যে বনলক্ষ্মী অভিমান করবে না।
প্রতি প্রভাতে নতুন আলোক স্নানে এই ধরণীর বুকে রচিত হয় নানা রসমূর্তি , পাখিদের গানে বাজে আনন্দের রাগিনী। সে যে হীন সে যে অশ্রদ্ধার বস্তু তা প্রমাণ করা দীর্ঘসময় সাপেক্ষ। ততদিনে অরণ্যের পক্ষীসকল অবারিত প্রাণতরঙ্গে স্পন্দিত হবে,বসন্তের স্তব আকাশ বাতাসকে মুখরিত করে তুলবে।চিরন্তন বসন্তের প্রশস্তি গীত হবে পাখিদের কলতানে।আনন্দিত রবে অরণ্যসভার সৌন্দর্য্যবর্দ্ধন করে তাকে মধুময় করে তুলবে সংশয়বিহীন এই পক্ষীসকল।প্রভাত পাখির সুমিষ্ট কলকাকলী অনাবিল আনন্দের বাণী চতুর্দিকে ছড়িয়ে দেয়।সুরের ঝরণার ধারা অন্ধকার গহ্বরকেও আলোক স্নানে শুচিশুভ্র করে।
এই কলতান হেয় হতে পারে না।তাকে অশ্রদ্ধেয় প্রমাণ করতে যত সময়ের প্রয়োজন ততদিনে অরণ্যের পাখি চিরন্তন সঙ্গীতের মাধ্যমে বসন্তের আহ্বান সূচিত করবে।অরণ্যসভাকে অপবাদ দেওয়া সত্বেও এখানেই শান্তি ,পবিত্রতা , আনন্দ বিরাজ করবে।এখানেই ঘটবে ক্ষুদ্র প্রাণের সঙ্গে বিশ্বপ্রাণের মিলন।
===================
Arati Mitra.
267/3 Nayabad. Garia.
Kol. 700094