অণুগল্প ।। হারানো স্মৃতি ।। দীপক পাল
হারানো স্মৃতি
দীপক পাল
তখন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছি। একটু আধটু কবিতা লিখছি। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে ঠিক করলাম হাতে লেখা একটা বই বার করবো। আমি, তুহিন, কার্তিক আর তুহিনের বড়দি তিনি কলকাতা ইউনিভার্সিটিতে বাংলা অনার্স নিয়ে পড়ছিলেন। তিনিও লেখেন ইউনিভার্সিটির ম্যাগাজিনে। সে হলো গাইড। এছাড়া আমার বন্ধু শরৎ সুনীল নন্দী যার লেখা কবিতা কৃত্তিবাসে এবং সাপ্তাহিক দেশে বেরিয়েছিল। এছাড়া উদীয়মান এক আর্টিস্ট বন্ধু নিউটনকে টানলাম বইয়ের প্রচ্ছদ ও ছবি আঁকতে। তপন সিনহার সিনেমা 'হাঁসুলি বাঁকের উপকথা 'র নিউটনের ছবির পোস্টার কলকাতার লাইটপোষ্টে টাঙানো ছিল একসময়। কিন্তু ক্যানসারে সে ঠিক পরের বছরই মারা গেল। তুহিনের বোন সুকৃতির হাতের লেখা ছিল অপূর্ব। তাকেও রাজী করানো হলো। আমার বড়দা লেখক। তার দেওয়া বইয়ের নাম মনোনীত হলো 'সমন্বয়'। আমি আর তুহীন কলেজ স্ট্রীটে গিয়ে হালকা রঙিন মোটা কাগজ নিয়ে এলাম। শুরু হলো আমাদের 'সমন্বয়ের' কাজ। লীনাদি ছিলেন সম্পাদিকা।
বইটা খুব সুন্দর ভাবে করা হলো। একদিন সেটা এক বন্ধুর বাড়ীতে লেখকরা নিজেদের লেখা পড়ে শোনালেন। কিন্তু সেটা উদ্বোধন নয়। উদ্বোধন হলো পরের দিন তুহিনদের বাড়ীর বৈঠকখানায়। লীনাদি উদ্বোধন করলেন। এখানে একটা কথা বলে রাখি শরৎ সুনীল নন্দীর কবিতার শেষ দুটো লাইন লেখা হয়নি বইতে। সুনীলের বক্তব্য ছিল শেষ দুলাইনে তার মনের প্রতিক্রিয়া সে জানিয়েছে। লীনাদির বক্তব্য ছিল তোমার কবিতাতেই তোমার মনের ভাব ধরা পড়েছে। তাই আলাদা করে আরও দুলাইন লেখার কোন দরকার নেই। সুনীল কিন্তু দুবারই তার কবিতা পড়ার সময় শেষ দুলাইন পড়েছিল। সে বই যে এখন কোথায় আছে কিংবা আদপে আছে কিনা তা আমি জানিনা।
______________
Dipak Kumar Paul
DTC Southern Heights
Block-8, Flat-1B
D.H. Road, Kol-700104