Click the image to explore all Offers

মক্তগদ্য ।। টুকরো টুকরো অনুভূতি ।। অঙ্কিতা পাল

টুকরো টুকরো অনুভূতি 

অঙ্কিতা পাল




যখন একটা সময় আসে মানুষকে কোনো এক হতাশা ক্রমশ গ্রাস করে ফেলে।
সে খাঁচার পাখির মতন ছটফট করতে থাকে, পিঠ যেন ঠেকে যায় দেয়ালে, পরে থাকে সে ঘরের এক প্রান্তে।
তখন কাউকে বলতে চেয়েও বলা হয় না অনেক কথা।।
কথার চাটুকারিতায় কেউ বা নিজেদের জয়ী বলে মনে করেন ; আবার কখনো বা বলবান হয়ে ওঠেন তিনি।
প্রতিদিনের কর্মব্যস্ততার জীবনে সেই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলে সারা দিনের অদৃশ্য লড়াই, কিন্তু এরই মাঝে সুরের তালে ভুল হলেই বিপদ। দিনের শেষে বালিশ মাথায় দিতেই যোগফল শূন্য।

বছর দুই আগের কথা ;
আমার কর্তা মশাই এক শীতের দুপুরে  দুখানি ডালিয়া, পিটুনিয়া, বাদামি বর্ণের গোলাপ  গাছ, ক্যালেন্ডুলা, ইত্যাদি নিয়ে এসেছিলেন ...............

তাদের মধ্যে সবাই সময়ের সাথে সাথে এক এক করে বিদায় নিলেও বাদামি তখনো ফুল ফোটাতে ব্যস্ত ছিলো। গাছটিতে মোটামুটি পাঁচখানি ফুল হয়েছিলো, কিছুদিনের অযত্নে সেও প্রাণ ত্যাগ করে। তারপর অবশ্য মিনি জবা ও লাল জবা এনেছিলেন - আমি বলেছিলাম জমিতে দিয়ে এসো। আমি এবং তিনি নিজের হাতে লাগিয়েছিলাম সেগুলো প্রচন্ড বর্ষণে তারাও প্রাণ হারিয়েছে একে একে। তারপর কিছু মাস বয়ে চলে গেল..........

গত বছর শীতকালে আবারো  অনেক অনেক ফুল গাছের সমাহার নিয়ে আসেন তিনি, তাদের মধ্যে সেরা সেরা ছিলো - হলুদ এবং সাদা বর্ণের গোলাপ গাছ দুটি। কিছুদিনের মধ্যে হলুদ ফুলটাও মৃত্যুর কোলে ঢলে পরে। মন খারাপ হয়েছিলো খুব;  চললাম চিলাতলার উদ্দেশ্যে - সেখানকার অপরূপা গাঁদা ফুলের রাশি আমার মনকে মুগ্ধ করেছিলো। সাথে নিয়ে এলাম ব্লিডিং হার্ড নামক সঙ্গীকে সঙ্গে করে, এই ভগ্নহৃদয় বুকে নিয়ে ছাদ বাগান করার বড়ো সাধ হলো। তারপর ভালোবাসা দিবসে একখানি ঝাউ ও ক্রিসমাস ট্রি নিয়ে উপহার দিয়েছিলেন।
হালকা সবুজ রংয়ের বনসাই  ঝাউটা এক মাসের মধ্যে চিরতরে হারিয়ে গেলেও  ক্রিসমাস ট্রি এখনো সসম্মানেই আছে, এবছরেও তার ব্যতিক্রম হয়নি  এক ছোট্ট গোলাক আকৃতির ক্যাকটাস নিয়ে এসেছিলেন আমার জন্য।।

এই টুকরো টুকরো অনুভূতি কে জড়িয়ে ধরেই , ভেবেছিলাম মর্ম বেদনা কে তাদের কাছে অর্পণ করবো কারণ তারা আমার নিত্যদিনের মিতালী। তাই প্রতি সপ্তাহে এখন দুটি করে ফুল গাছ এনে থাকি।
তারা আমার ছাদের অর্ধেকটা জুড়ে আধিপত্য বিস্তার করে আছে। তাদের  সাথে বেঁচে থাকার ভরসা খুঁজে পাই, আর রংবেরঙের আনন্দ এবং হাসি মনে দোলা দেয়  , কবিতা লেখার ছন্দে  নিজেকে ভরিয়ে রাখতে ইচ্ছে করে।
তার সাথে আমার প্রকৃত ফুলেশ্বরী দুই কন্যার ভুবন ভোলানো হাসি দেখে আনন্দে সব দুঃখ,অভিমান, মানসিক অবসাদ,ক্লান্তি যেন দূরে চলে যায়..........

=======================

ভাঙ্গড় , দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা ।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.