মা'র ভাবনা যথার্থ। এ নিয়ে অপুর কোনো দুঃখ নেই। অপু যদি অপরাজিত না হয়ে অপর্ণা হোত, হয়তো এ্যাতো সেবাযত্ন মিলতো না।
না, অপু কোনো সফল মানুষ হতে পারেনি। কিন্তু সততা ও মাতৃভক্তিতে সে তুলনাহীন। টোটো কিনেছে একখানা। নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে।
গ্যাস, মেন্টেনেন্স ইত্যাদি বাদ দিলে, হাতে শ'পাঁচেক থাকে। খাই খরচ প্রায় ৩০০ । দু'জনের সংসার, কোনোক্রমে খুঁড়িয়ে - খুঁড়িয়ে চলে।
হঠাৎ সমস্যা মায়ের চোখ নিয়ে। গ্লুকোমা, প্রায় অন্ধ হয়ে যাওয়ার জোগাড়। হাজার আটেক টাকা জোগাড় করে কোনোক্রমে চোখদুটি বাঁচানো গ্যাছে।
এবার চশমার দু'হাজার। স্পেশাল গ্লাস লাগবে।
রাতে শেষ ট্রিপে এক খদ্দের। সে আবার গড়জয়পুর থেকে তানাসি দু'শোর বেশী দেবে না। কালকেই চশমা চাই। দু'শোতেই অপু রাজী।
অন্ধকারে
পয়সা দিয়ে গট্ গট করে অন্ধকারে মিলিয়ে গেলো। ঘরে এসে দ্যাখে দু'শো নয়
দু'হাজার। লোকটা কি তবে সাক্ষাৎ ঈশ্বর ? না ভুল করে দিয়েছে। কাল মায়ের
চশমার জন্য আর ভাবনা রইলো না। কিন্তু তার জীবনভর যে সততা তা টাল খেয়ে যাবে
না তো।
যদি তিনি, কোনোলোক কোনোদিন দাবী করে, যাচাই না করেই অপু দু'হাজার দিয়ে দেবে।
পরদিন থেকেই অপুর পকেটে রিজার্ভ ফান্ড দু'হাজার।
না, ঈশ্বরের সাথে আর দ্বিতীয়বার দেখা হয়নি।
----------------
ছবি ঋণ- ইন্টারনেট