৪০
আশ্রমের অনেকেই কোভিড নাইনটিন এ আক্রান্ত।তার তো শুনে চিন্তা খুব বেড়ে গেছে। হাসপাতাল থেকে অনেকে এসে আশ্রমের চিকিৎসা করছে। আপনার বাবুদের অবসর নেই তারা নিজের জীবনকে পরোয়া না করে লোকের সেবা করে চলেছে এবং বেঁচে আছে অনেকেই বেশিরভাগই ভেসে যাচ্ছে হয়তো 100 জনের মধ্যে 5 জন মরে যাচ্ছে তাদের কিছু করা যাচ্ছে না এখনো তো টিকা আবিষ্কার হয়নি বা টিকা আবিষ্কার হলে হয়তো এই রোগকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে। বিরাজুল আবার বলল, করোনা ভাইরাসে আমেরিকায় ১১,০০০ মৃত্যু হয়েছে। সেই মৃত্যু আরও বাড়ছে। সংক্রামিত আরও কয়েক হাজার। মড়কের অবস্থা তৈরি হয়েছে। প্রতিদিন মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। ২৪ ঘণ্টা ১৫০০ জনেরও মৃত্যু হয়েছে আমেরিকায়। প্রবল সংকট তৈরি হয়েছে গোটা দেশে। ভারতের কাছে ম্যালেরিয়ার ওষুধ চেয়ে প্রচ্ছন্ন হুমকি পর্যন্ত দিয়েছে ট্রাম্প। দিশেহারা অবস্থা হয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের।এদিকে, মঙ্গলবারই করোনা সংক্রান্ত তথ্য স্বীকার করেছে চিন। মঙ্গলবার চিনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে ডিসেম্বরের শেষে উহান শহরে ধরা পড়েছিল এই ভাইরাস।
বিশ্ব জুড়ে যখন করোনা ভাইরাসের উৎস নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তখন চিন জানান যে ২০১৯-এর ডিসেম্বরে মাসের শেষে উহান শহরেই প্রথম ধরা পড়ে এই ভাইরাসের সংক্রমণ।চিনে এই ভাইরাসে ৩,৩৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। আ্ক্রান্নত হয়েছে ৮১,৭৪০ জন। চিনে এখনও ১২০০ জনের চিকিৎসা চলছে। বাকিদের চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।করোনা ভাইরাসের প্রকোপ এবং লকডাউনের ফলে মারাত্মক রকম প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে। তার জেরে শহরাঞ্চলে বেকারত্ব বেড়ে ৩০.৯ শতাংশ এবং সার্বিকভাবে বেকারত্ব বেড়ে ২৩.৪ শতাংশে পৌঁছেছে। এমনই তথ্য দিচ্ছে সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি (সিএমআইই)-র সমীক্ষা রিপোর্ট। ৫ এপ্রিল শেষ হওয়া সপ্তাহের সাপ্তাহিক রিপোর্ট সোমবার সন্ধ্যায় প্রকাশ হয়েছে। যাতে সিএমআইই জানাচ্ছে, মার্চের মাঝামাঝি থেকে বর্তমান অবস্থায় ৮.৪ শতাংশ বেকারত্ব বৃদ্ধি পেতে দেখা গিয়েছে।ভারতের প্রাক্তন মুখ্য সংখ্যাতত্ত্ববিদ প্রণব সেন মোটামুটি হিসেব করে মনে করেছেন লক ডাউনের দুটি সপ্তাহে প্রায় ৫০ মিলিয়ন লোক চাকরি হারিয়েছেন। তার মতে, এখন বেশ কিছু লোককে বাড়ি পাঠানো হয়েছে, প্রকৃত বেকারত্ব সম্ভবত আরও কিছুটা বেশি যেটা আরও কিছুদিন পরে বোঝা যাবে।ডাক্তারবাবুবললেন,আইসিএমআরএর সংক্রামক রোগ ও মহামারী বিভাগের প্রধান গঙ্গাখেড়কর বলেন, কত দিনে সংক্রামিতদের সংখ্যা দ্বিগুণ হচ্ছে, তার হার দেখেই বোঝা যাবে করোনা নিয়ন্ত্রণে এসেছে কি না। তঁার মতে, পরবর্তী তিন সপ্তাহে কতজন কোভিড–১৯ পজিটিভ রোগীর খেঁাজ মিলছে, তার ওপরেই লকডাউন প্রত্যাহারের বিষয়টি নির্ভর করবে। লকডাউন কতটা শিথিল হবে, সেই সিদ্ধান্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে সংক্রমণের হটস্পটগুলি। গঙ্গাখেড়কর বলেন, গোষ্ঠী সংক্রমণের পর্যায়ে এখনও পৌঁছোয়নি ভারত। তবলিগি জমায়েতের প্রভাব ২০০ জেলায় পড়লেও একে গোষ্ঠী সংক্রমণ বলা যাবে না।এর আগে সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি সরকার। তারপর পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশের অতিরিক্ত মুখ্য সচিব অবনীশ অবস্থি এদিন বলেছেন, 'লকডাউন তখনই পুরোপুরি খোলা হবে যখন রাজ্যে আর করোনার রোগী থাকবেন না। যতক্ষণ একজনও করোনা পজিটিভ মানুষ থেকে যাবেন, ততক্ষণ লকডাউন তোলা কঠিন। কাজেই এর জন্য সময় লাগতে পারে।' এ সবের পাশাপাশি এখনকার মতো লকডাউন চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হল, এর গেরোয় আটকে পড়েছেন অসংখ্য দরিদ্র মানুষ। কাজ হারিয়ে দু'বেলা অন্নের সংস্থান নিয়ে চিন্তায় বহু মানুষ। সবচেয়ে বড় কথা, সার্বিক লকডাউন দীর্ঘায়িত হলে দেশের অর্থনীতি গভীর থেকে গভীরতর সঙ্কটে চলে যাবে।
এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী এদিন বিজেপি–র ৪০তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বক্তৃতায় বলেছেন, 'সামনে দীর্ঘ লড়াই। এজন্য দেশবাসীকে প্রস্তুত থাকতে হবে। করোনার বিরুদ্ধে জয় না–আসা পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।' আরও বলেছেন, 'এবার এমন এক সময়ে দলের প্রতিষ্ঠা দিবস পালিত হচ্ছে যখন শুধু ভারতই নয়, সমগ্র বিশ্ব এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলেছে। মানবতার এই সঙ্কটের সময় একনিষ্ঠভাবে দেশের সেবা করে যেতে হবে।' করোনার সংক্রমণের জেরে ২৪ মার্চ দেশ জুড়ে ২১ দিনের লকডাউন ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন করোনা পরিস্থিতিতে নিজেদের জীবনপণ করে যাঁরা কাজ করে চলেছেন, সেই চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত মানুষকে ধন্যবাদপত্র পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যের প্রসিদ্ধ মিষ্টির একটা অংশ হাতে গড়া হয়। যখন সাধারণ নাগরিককে দিনে দশ বার রগড়ে রগড়ে সাবান, স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুতে বলার উপদেশ দেওয়া হল, তখন স্বাস্থ্যবিধি ভেঙে কোনরকম পরিদর্শন ছাড়া স্বাস্থ্যকর বা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে হাত স্যানিটিজেড কিনা জানা-নেই, বানানো-মিষ্টি বাঙালিদের খেতে দেওয়ার রাস্তা উন্মুক্ত করা প্রশাসনিক অর্বাচীনতার নামই বটে। আসলে Covid -১৯ শুধু একটা সাদামাটা, প্লেইন-ভ্যানিলা বায়োলজিক্যাল ভাইরাস-ই নয়, এটা মানব সভ্যতার বড়াই করা আর্থ-সামাজিক-চিকিৎসা-প্রশাসনিক উৎকৃষ্টতার লিটমাস টেস্ট আর অ্যাসিড টেস্ট, যেখানে আমরা অনুত্তীর্ণ। সেখানে, পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচিত প্রতিনিধিকে ঠান্ডা মাথায় কাজ করা উচিত যাতে নিরীহ আইনানুগ সর্বসাধারণের জনস্বাস্থ্যের কোনও ঝুঁকি না তৈরি হয় কারো ব্যক্তিগত অবিবেচকতার জন্য। সেখানে কিছু জনগণকে খুশি করার চেষ্টা বুমেরাং হয়ে, সর্বনাশী করাল ছোবল আনতে পারে অজ্ঞতার সামান্য ভুলে প্রথমে এক দিনের জনতা কার্ফু, তারপরে রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে তিন দিনের জন্য লকডাউন ঘোষণা এবং সেটি চলাকালীনই দেশজুড়ে লকডাউন। তার ফলে বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েছেন এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে কাজ করতে যাওয়া শ্রমিকরা। এই কারণে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়াতেও আটকে পড়েন বিহারের ভাগলপুর থেকে আসা অন্তত ১৫০ জন শ্রমিক। প্রতি বছরই এই সময় বিহারের ভাগলপুর থেকে মহিলা ও শিশু সহ প্রায় ১৫০ জনের একটি দল পূর্ব বর্ধমানের কালনা মহকুমার লক্ষ্মীপুর গ্রামে চাষের কাজ করতে আসেন। এবছরও তাঁরা এসেছিলেন সেই কাজেই। তবে তাঁরা আসার পরেই ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শুরু হয় লকডাউন। তার ফলে তাঁরা কাটোয়ায় আটকে পড়েন। কাটোয়া মহকুমা প্রশাসন ও কাটোয়া পুরসভার তরফ থেকে স্থানীয় আরএমসি মার্কেটে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়। শুধু থাকার ব্যবস্থা করাই নয় সেই সঙ্গে তাঁদের খাওয়াদাওয়ার ব্যবস্থাও করে স্থানীয় প্রশাসন। চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে ওই শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের প্রত্যেকের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হয়। কয়েক দিন এভাবে কাটার পরে ওই শ্রমিকরা কাটোয়া থানায় যোগাযোগ করে তাঁদের পোশাকের সমস্যার কথা জানান। তাঁরা দীর্ঘ দিন ধরে একই জামাকাপড় পরে আছেন বলে জানান। এর ফলে তাঁদের যে সমস্যা হচ্ছে সেকথাও গোপন করেননি।এই সমস্যার কথা জানার পরে কাটোয়া থানার পক্ষ শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের জন্য জামা-কাপড়ের ব্যবস্থা করা হয়। কাটোয়া থানার আইসি বিকাশ দত্ত বলেন, "শ্রমিকরা একই জামাকাপড় দীর্ঘদিন ধরে পরে আছেন একথা জেনে কাটোয়া থানার পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। দলে কত জন স্ত্রী, পুরুষ ও বাচ্চা আছে তা জেনে নেওয়া হয়। তারপরে মহিলাদের জন্য শাড়ি, সায়া ও ব্লাউজ, বাচ্চাদের জন্য জামা ও প্যান্ট, কম বয়সী মেয়েদের জন্য চুড়িদার এবং পুরুষদের জন্য লুঙ্গি ও বারমুডার ব্যবস্থা করা হয়। তাঁদের হাতে ইতিমধ্যেই সেই পোশাক তুলে দেওয়া হয়েছে।"করোনাভাইরাস দূরে রাখতে যে সব উপায়ের কথা বলা হচ্ছে তার মধ্যে একটি হল পরিচ্ছন্ন থাকা।
৪১
এই শ্রমিকদের পক্ষে নিজেদের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কঠিন ঠিকই তবে প্রশাসনের উদ্যোগে এখন তাঁরা অনেকটাই পরিচ্ছন্ন ভাবে থাকতে পারবেন। নিয়মিত ভাবে পোশাক বদলও করতে পারবেন। লকডাউন উঠলে তাঁরা কাজ পেয়ে যাবেন। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী অজিত কুমার কুন্ডু, সভাপতি কালাচাঁন কুন্ডু, সাধারন সম্পাদক যুগল দেবনাথ এবং সনাতন যুব সেবা সংঘের সভাপতি শ্রী বিবেকানন্দ দেবনাথ এর উদ্যোগে হিন্দু মুসলিম জাত ধর্ম নির্বিশেষে মন্দিরের নিজস্ব তহবিল ও স্থানীয় সনাতন ধর্মাবলম্বী তরুন যুবকদের নিজ নিজ ব্যক্তি দানের টাকায় এই ত্রানসামগ্রী বিতরণ করা হয়৷ এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদ হোসেন রিয়াদ৷ মন্দির কমিটির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মন্দিরের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী অজিত কুমার কুন্ডু বলেন, "মানবসেবার চেয়ে বড় ধর্ম অার কিছুই হয় না৷ আমাদের সনাতন ধর্মে মানবসেবা ও দানের কথা বলা আছে।"প্রায় তিনদিনের খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে ছিলো ৩ কেজি চাল, ২ কেজি অালু, ১ কেজি ডাল, হাফ লিটার তেল, ১ কেজি লবন এবং ১টি সাবান। উল্লেখ্য যে, এই উদ্যোমী তরুনরা নিজ এলাকায় সবসময় মানবসেবায় অতুলনীয় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছে।কিছুই বড় নয় জীবনের থেকে। তাই বন্ধুত্বকে পাশে সরিয়ে রেখে হুঁশিয়ারি দিতে শোনা গেল মার্কিন প্রেসিডেন্ট তথা নরেন্দ্র মোদির বিশেষ বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ভারত যদি অ্যান্টিম্যালেরিয়াল ওষুধ মার্কিন মুলুকে রপ্তানির অনুরোধ নাকচ করে, তাহলে তার ফল ভুগতে হবে ভারতকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ফোন করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। অনুরোধ করেন যাতে হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইনের রপ্তানির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হোক। হোয়াইট হাউসে ব্রিফিংয়ের সময়ে ট্রাম্প জানান, 'আমেরিকার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক খুব ভাল। আমি বলেছি, আপনি যদি নিষেধাজ্ঞা তুলে নেন, তাহলে খুবই ভাল হবে। যদি তিনি একান্তই এদেশে ওই ওষুধ আসতে না দেন, তাহলেও আমি অবাক হব। আমার কিছু বলার থাকবে না। তবে তার ফল ভুগতে হতে পারে ভারতকে।সূত্রের খবর, হাইড্রোঅক্সিক্লোরোকুইনের অর্ডার মার্চ মাসে দিয়েছিল আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি বার্তায় বলেন, 'বহু বছর ধরে ভারত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমেরিকার সুবিধে নিয়েছে। তাই এখন যদি ভারত পিছিয়ে যায় আমি অবাকই হব। তবে যাই সিদ্ধান্ত হোক না কেন প্রধানমন্ত্রীকে আমায় তা জানাতে হবে।' ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির পর নয়াদিল্লি থেকে কোনও জবাব এখনও দেওয়া হয় নি। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার জন্য ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীকে রবিবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।ডাউনিং স্ট্রিটের ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে বলা হয় যে, বরিস জনসনের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন যে, কিছু পরীক্ষার জন্য তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে হাসপাতালে। বরিস জনসন ছাড়াও তাঁর অফিসের স্বাস্থ্যসচিব ম্যাট হ্যানকক এবং জুনিয়র স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাদিন ডরিসও করোনায় আক্রান্ত।গত ২৬ মার্চ বরিস জনসন করোনায় আক্রান্ত হন। এরপরই আইসোলেশনে চলে যান তিনি। আগের থেকে তিনি অনেক সুস্থ রয়েছেন বলেও জানান তিনি। বিগত দিনগুলিতে ডাউনিং স্ট্রিটের বাসভবন থেকেই অফিসের কাজকর্ম করছিলেন বরিস জনসন।উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই সারা দেশে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গিয়েছেন পাঁচ হাজারের বেশি মানুষ।লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানো হোক৷ কেন্দ্রর কাছে এমনই আর্জি রেখেছে বিভিন্ন রাজ্য৷
৪২
করোনা মোকাবিলার এর থেকে আর ভাল পথ নেই বলেই মনে করছে রাজ্যগুলি৷ সেই কারণেই এমন আর্জি করা হচ্ছে বল সূত্রের খবর৷ যদিও এই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী৷ লকডাউন ওঠার ৪৮ বা ৭২ ঘণ্টা আগেই পরবর্তী পরিস্থিতির কথা স্থির করবেন তিনি৷ মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে অনেকের পক্ষ থেকেই দাবি করা হয় যে লকডাউন চললে করোনার সঙ্গে লড়াইয়ে অনেকটা সুবিধা মিলবে৷ যদিও বিভিন্ন করোনা স্পর্শকাতর জোনগুলিকে চিহ্নিত করে সেই জায়গায় চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে, এমনই ভাবনা চিন্তা চলছিল কেন্দ্রীয় স্তরে৷ কিন্তু রাজ্যগুলির আর্জির পর সেই ভাবনার বদল হতে পারে বলে সূত্রের খবর৷ তাই মনে করা হচ্ছে ২১ দিনের পর আবার লকডাউনের সয়মসীমা বাড়তে পারে৷ যদিও এই চিন্তা নিয়ে দুরকম মত উঠে আসছে৷ কারণ অনেকেই মনে করছেন যে লকডাউন না উঠলে রুটিরুজির টান পড়বে অনেকের৷ অন্যদিকে লকডাউন না থাকলে করোনার সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে৷ এখন প্রধানমন্ত্রী চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ৷
লতিকা বললেন,শারীরিক অসুস্থতা বোধ করছেন। ডাক্তারবাবুর কাছে না গেলেই নয়। কিন্তু লকডাউনে কোথায় পাবেন টোটো? অবশেষে, পৌরসভার হেল্প লাইনে ফোন করে ডাক্তার দেখাতে যাবার জন্য পৌরসভার টোটো পেলেন বাসিন্দা মিতা রায়। তিনিও গ্রামে থাকেন।
তাঁকে মেডিক্যাল চেক আপের পর পুনরায় বাড়িতে দিয়ে আসা হয়।
তাঁকে সাহায্য করতে পেরে আমরা গর্বিত।
COVID19 সংক্রান্ত যে কোন প্রয়োজনে ফোন করুন পৌরসভার হেল্পলাইন নাম্বার 6296434721 তে।
রাতে ভরতি হল হাসপাতালে।ভোরে প্যাকেটেে মুুুুড়েে তার লাশ চলে গেল স্বজন ছাড়া হয়ে।
গ্রামের মৃত ফেব্রুয়ারি থেকে কান্না কাটির রোল পড়ে গেছে কিন্তু কিছু করার নেই সবাই দূর থেকে সান্ত্বনা দিচ্ছে কাছে গিয়ে সান্তনা দেবার ক্ষমতা নেই কারো কাছে গেলেই হয়তো সংক্রমিত হয়ে যাবে সবাই।
একে একে চোখের সামনে দেখা গেল মিতা দেবীর বাড়ির সকলে একত্রিত হয়ে পড়লেন হাসপাতালে গিয়ে।
৪৩
একই পরিবারের 5 জন দুদিন তিনদিন অন্তরে মরে গেলেন আমি একটা আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে কিন্তু বিরাজিল লতিকা এবং মিনতি সকলে মিলে সকলকে বোঝাবার চেষ্টা করতে লাগলেন তথ্য থেকে মাইকে করে তারা আবার সচেতনতা শিবির করলেন চারিদিকে শুধু বলে বেড়াতে লাগলেন যে আপনারা ভয় পাবেন না এবং মারাত্মক হলেও সাবধানতা অবলম্বন করলে কোন ভয় নেই আপনার সাবধান হয়ে যান হাতে সাবান দিমু সাবান দিমু যেখানে সেখানে থুথু ফেলবেন না এইসব করে বেড়াতে লাগলেন।
বড় বড় দেশ আমেরিকা চীন রাশিয়ার মতো দিয়ে যখন হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে এই লোককে নিয়ে ভারত বর্ষ কি করে পারবে একাই সামলাতে তবু চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এখনো যদি আবিষ্কার হয় তাহলে মরন রোগ থেকে বাঁচা যাবে।
সকলে রাসুলের আসামি থাকে শুনলে তাদের সঙ্গে থাকে আর বাড়ি যায় না সকলকে নিয়ে এখানেই থাকে এবং তাদের চিকিৎসা করে সারাদিন দূরে দূরে থেকে মুখের মাক্স পড়ে।
লতিকা তার জীবনের অনুভূতি শেয়ার করে সকলের সঙ্গে। সে বলে
আঁধার কালো, কালো সুন্দর, অকৃত্রিম আনন্দের সাজি সাজায় কালো । এইসব চিন্তা করতে করতে রাত নামে । আলো জ্বালিয়ে বুড়োদের তাসখেলার আসর শেষ হয়। সমস্ত প্রবীণ অভিমান তারা ঝেরে ফেলে ঝরঝরে নবীন মনে বাড়ি ফেরেন তারা ।
গল্প করতে করতে কখন যে রাত হয়ে গেছে বুঝতে পারেনি সে।
৪৪
আশ্রমের এক সেবক দীপ। দীপের বৌ মানে লতিকার বৌমা। পাশের বাড়ির বৌমা। জয় মরার পরে আমি একা। ওরা ঘুরতে এসেছিল মাসির বাড়ি।মাসি ওদের একমাত্র অভিভাবিকা।আমার মন খারাপ দেখে বৌমা বললো,আজ রাতে আপনারা আমাদের বাড়িতে থাকুন। আজ যেতে দেবো না।তুলি আর দীপ সকলকে নিয়ে বেশ সুখে আছে। ঈশ্বর দর্শন ওদের মানুষের মাঝেই হয়ে গেছে।
রাত জেগে ওরা ঠিক করেছে, আগামীকাল ওরা আবার অন্যস্থানে ঘুরতে যাবে। কিন্তু ওরা অন্য কাউকে তাদের গোপন কথা বলে না।
দশদিন বন্ধু অমর দীপদার দেখা পায় নি। তাই একবার ওদের বাসা বাড়িতে দেখা করতে গিয়ে মাসিকে জিজ্ঞাসা করলো,দীপ দাদা কোথায় গেছে।
মাসি বললো,বড় ভালো মানুষ পেয়েছিলাম গো। আমাকে এক মাসের খাবার টাকা বেশি দিয়ে চলে গেছে।
অমর বললো কোথায় গেছেন বলতে পারবেন।
-----না, বাবা। ওরা বললো আমাদের নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা নেই। সব সাধু লোক গো। সংসারে কে যে কোন রূপে থাকে চেনা যায় না বাবা। এই বলে হাতটা কপালে ঠেকালেন।অমর মাথা নীচু করে বাড়ি ফিরে চললো।
লতিকা ভাবে, দিবারাতি নিজেকে ঠকিয়ে কোন ঠিকানায় ঠাঁই হবে আমি সর্বস্য মানুষের ।নিজেকে নিজের প্রশ্ন কুরে কুরে কবর দেয় আমার অন্তরের গোপন স্বপ্ন । জানি রাত শেষ হলেই ভোরের পাখিদের আনাগোনা আরম্ভ হয় খোলা আকাশে । আমার টোনা মাসিকে টোন কেটে অনেকে অভিশাপ দিতো । আমি দেখেছি ধৈর্য্য কাকে বলে । আজ কালের কাঠগোড়ায় তিনি রাজলক্ষ্মী প্রমাণিত হয়েছেন । কালের বিচারক কোনোদিন ঘুষ খান না । তাই তাঁর বিচারের আশায় দিন গোনে শিশুর শব, সব অবিচার ,অনাচার কড়ায় গন্ডায় বুঝে নেবে আগামী পৃথিবীর ভাবি শিশু প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি। অপেক্ষায় প্রহর গোনে নিজের অন্তরের প্রদীপ শিখা জ্বালিয়ে । সাবধান খুনীর দল ,একবার হলেও অন্তত নিজের সন্তানের জন্য শান্ত পৃথিবী রেখে যা । ঋতু পরিবর্তন কিন্তু তোর হত্যালীলায় বন্ধ হবে না নির্বোধ ।শান্ত হোক হত্যার শাণিত তরবারি ।নেমে আসুক শান্তির অবিরল ধারা। রক্ত রঙের রাত শেষে আলো রঙের নতুন পৃথিবী আগামী অঙ্কুরের অপেক্ষায়।
তারপর সংসারের টানা পোড়েন।রাগ,হিংসা,ক্রোধের সংমিশ্রণে সংসার স্রোতে ভাসতে ভাসতে জীবন প্রবাহ এগিয়ে চলে। হয়তো এর ফলেই দাদুর শেষজীবনে সেবার সুযোগ পেয়েছিলাম আমরা। আমি নিয়ম করে দাদুকে গীতাপাঠ করে শোনাতাম। দাদু কত গল্প বলতেন। কোনোদিন হা পিত্যেশ করতে দেখিনি। আমার সময় কাটতো দাদুর কাছেই বেশি। পড়াশোনার ফাঁকে চলতো গীতাপাঠ। আমি জিজ্ঞেস করতাম,দাদু মরণের পরে আমরা কোথায় যাই? দাদু বলতরন,জানি না ভাই। তবে।।মরণের পরে যদি যোগাযোগ করা যায়,তাহলে আমি তোকে নিশ্চয় জানাবো। দাদু বলতেন, আমি যখন শেষ বিছানায় শোবো,তখন আমি ঈশারা করবো হাত নেড়ে। তখন তুই গীতার কর্মযোগ অধ্যায় পড়ে শোনাবি। তোর মঙ্গল হবে। আমিও শান্তিতে যেতে পারবো। হয়েছিলো তাই। কর্মযোগ পাঠ করা শেষ হতেই দাদুর হাত মাটিতে ধপাস করে পরে গেলো। দাদু ওপাড়ে চলে গেলেন হেলতে দুলতে চারজনের কাঁধে চেপে। মাথাটা দুই বাঁশের ফাঁক গলে বেরিয়ে ঝুলছিলো। আমি বলে উঠলাম, ওগো দাঁড়াও দাদুর লাগবে। মাথাটা ঠিক কর বালিশে দি। কেঁধো বললেন,মরে গেয়েচে। ছেড়ে দে। আমি বললাম, না ঠিক করো। তারপর ঠিক করলো দাদাভাই,দাদুর মাথাটা বালিশে দিয়ে।
আমি ভাবতে শুরু করলাম,মৃত্যু কি জীবনের আনন্দ কেড়ে নিতে পারে? পারে না। লতিকা শ্মশানে যেত। বড় স্বাধীনচেতা মেয়ে। সে বলে সব কিছুর মাঝেই ঋতুজুড়ে আনন্দের পসরা সাজাতে ভোলে না প্রকৃতি। সংসারের মাঝেও সাধু লোকের অভাব নেই। তারা মানুষকে ভালোবাসেন বলেই জগৎ সুন্দর আকাশ মোহময়ী, বলেন আমার মা। সব কিছুর মাঝেও সকলের আনন্দে সকলের মন মেতে ওঠে। সকলকে নিয়ে একসাথে জীবন কাটানোর মহান আদর্শে আমার দেশই আদর্শ। সত্য শিব সুন্দরের আলো আমার দেশ থেকেই সমগ্র পৃথিবীকে আলোকিত করুক।
মিনতি বললো এক নাগাড়ে বকে গেলি অনেকক্ষণ। লতিকা বললো, তুমি আরও কিছু বলো। সেই জন্যই তোমার কাছে আসা। আমি আবার বলতে শুরু করলাম,আমার কথা আমার গোপন কথা। আমার অনুভবের কথা। কবি বন্ধু আমার কথা শুনতে ভালোবাসে। সে সংসারী। তবু সব কিছু সামলে তার কবিতা ত লিখে চলে। আমি বন্ধুকে বলতে শুরু করলাম শরত জীবনের কথা।
শিউলি শরতের ঘ্রাণে শিহরিত শরীর। শিউলি নামের শিউলি কুড়োনো মেয়েটি আমার শৈশব ফিরিয়ে দেয়।
মনে পড়ে পিসির বাড়ির শিউলি গাছটার তলায় অপেক্ষা করতো ঝরা ফুলের দল। সে জানত ফুল ঝরে গেলেও
তার কদর হয় ভাবি প্রজন্মের হাতে । সে আমাদের ফুল জীবনের পাঠ শেখায়। মানুষও একদিন ফুলের মত ঝরে যায়। । শুধু সুন্দর হৃদয় ফুলের কদর হয়। শিমূল ফুলের মত রূপ সর্বস্ব মানুষের নয়। শরত আমাদের তাই শিউলি উপহার দেয় শিমূল নয়।
শিউলি ফুল তোলার পরে আমাকে দিত। শরতের মেঘ। হঠাৎ বৃষ্টি।।
আমার মনে পড়লো মাধবী আমাকে বৃষ্টির একটা বর্ণনা লিখে পাঠিয়েছিলো। সে বলেছিলো, তুমি তো লেখালেখি করো। আমার লেখাটা পড়ো। সে লিখেছিলো, বর্ষার কথা।
ঝরে চলেছে অবিশ্রান্ত। রাস্তায় বর্ষাতি ঢাকা প্রেমঋতুর আনন্দ বরিষণ বাড়িয়ে চলেছে উদ্দাম বৃষ্টির গতি । আনন্দে সে ভাসিয়ে চলেছে খাল বিল নদীর প্রসারিত কামদেশ। এখন ভাসাতে ব্যস্ত । তার সময় মাত্র দুই মাস । তারপর তাকে ময়দান ছাড়তে হবে । তাই সে নিজেকে উজার করে ঢেলে সাজাতে চায় ভিজাতে চায় শুকিয়ে যাওয়া ফুরিয়ে যাওয়া হৃদয় ।মাঝে মাঝে খেয়ালের বশে এত বেশি উচ্ছল হয় বর্ষাহৃদয় যে নদীর ধারা উপচে পড়ে ঘটায় অনর্থ । বন্যারাণী আবেগের ধারায় ভাসিয়ে দেয় গ্রাম শহরের সভ্যতা । মানুষের প্রতি রাগ যেনো ধ্বংসাত্মক হয়ে ওঠে । মানুষ তবু শিক্ষা পায় কি ?কিছু অর্বাচিন গাছ কেটে সাহারাকে ডেকে আনতে চায় । কিছু মানুষ প্রকৃতির গতি হাতের মুঠোয় বন্দী করতে চায় । ফল হয় বিপরীত ।
অমর পৃথিবীর মানুষকে বলতে চায় তার অন্তরের কথা।
এসো বন্ধু আমরা সবাই বর্ষাহৃদয়ে ভিজি। যতদিন বাঁচি ভিজি,আনন্দ করি,বৃষ্টির সাথে খেলা করি। তারপর আমরা সকলে মিলিত হবো শেষ সম্মেলনে ধনী, দরিদ্র নির্বিশেষে। সেখানে কি খুঁজে পাবো এই বৃষ্টিহৃদয়?
এইসব ভাবতে ভাবতে সে পথের সন্ধান পেলো। পথ চলাই জীবন। এখনও তাকে চলতে হবে অনেক অজানা আকাশের পথ। তারপর শুরু হবে সোনার ধানের মরশুমে নতুন ভোর...
৪৫
সুনীল সকালে উঠে খবর শুনে বলল, দেশজুড়ে লকডাউন চলছে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। তবে তারপর কি লকডাউন উঠে? সেই প্রশ্নই এখন ভাবাচ্ছে দেশবাসীকে। কারণ একদিকে যেমন সংক্রমণ না ছড়ানোর দিকে নজর দিচ্ছেন সকলে, অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির কথাও মাথায় রাখতে হচ্ছে। লকডাউনের ফলে যা তলানিতে আসার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ২১ দিনের লকডাউনের পর জোন বা হটস্পট ভাগ করে লকডাউনের কথা ভাবা হচ্ছিল বলে সূত্রের খবর। তবে করোনার যাতে না ছড়াতে পারে তাই এই ঘরবন্দির পক্ষে সওয়াল করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করেছেন বহু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তাই সেই নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে। এর মাঝে ওড়িশা সরকারের এই ঘোষণা অত্যন্ত তাৎপর্য পূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে লগোয়া এই রাজ্য। সেখানে লকডাউ ঘোষণা হলে বাংলার সরকারের ওপরও লকডাউন বাড়ানোয় একটা চাপ থাকবে।
বিরাজুল বলল চিনে76 দিন পর লকডাউন তুলেছে।আংশিক কিছু কিছু ক্ষেত্রে কাজ হচ্ছে। কিন্তু দেড় লাখ মানুষই কিন্তু এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেনি অটোমেটিক্যালি আমেরিকার এখনো লকডাউন ওঠেনি কারণ প্রত্যেক দিন মারা যাচ্ছে কত তার হিসাব নেই বিশ্বজুড়ে লেগেছে জীবন কি শেষ করে দেবে।
সুনিল বলল আমরা মানুষ কত ওয়াক্ত অহংকার এ বুকে বুকে মরি প্রকৃতিকে আমরা বিশ্বাস করি না ঈশ্বরে বিশ্বাস করিনা আজ এই রোগের আক্রমণে আমরা মানুষরা বুঝতে পারছি প্রকৃতির সর্বশেষ্ঠ প্রকৃতি তার নিজের হিসাব বুঝে নিতে জানে এখন প্রকৃতি কত সুন্দর ভাবে সেজেছে মানুষ তার অপব্যবহার করেছে মাত্র তাই মানুষের আজ এই শাস্তি।
৪৬
অনেকদিন পরে বাবুর সঙ্গে দেখা। বাবু বলল, গ্রামে করোনার প্ররকোপ কম কেন?
দীপ বলল জানি না। তবে গাছ পালার জন্য হতে পারে কম। বাবু বলল চল একটু ঘুরি।
দীপ আর তুলি ছিল বর্ধমান জেলার বেলুন গ্রামে সেখানে তার মাসি থাকতো। লতিকা যে মাসির কথা বলেছিল দিপাতলি পূর্ব বর্ধমান জেলার এই গ্রামে থাকতো আর দ্বীপের গ্রাম হলো মাসির বাড়ি থেকে মাত্র কয়েক মিনিট পরে নিজেকে নিজের গ্রামে।
তারপর বেলুন স্টেশন থেকে হাঁটা পথে তে আধঘণ্টা যেতে হবে। কিংবা বড় বাস স্টপেজে নেমে ঢালাই রাস্তা ধরে নবগ্রাম গ্রাম পঞ্চায়েতের অফিস পেরিয়ে, সর্দার পাড়া পেরিয়ে চলে এলাম ভট্টাচার্য পাড়ায়।পুরোনো মন্দির আর মসজিদ,গির্জা আমার মন টানে। কালের প্রবাহে সেগুলো অক্ষত না থাকলেও পুরোনো শ্যাওলা ধরা কোনো নির্মাণ দেখলেই আমি তার প্রেমে পড়ে যাই।অমরবাবু ছিলেন ষষ্টি তলায়। তিনি মা মঙ্গল চন্ডীর মন্দিরে নিয়ে গেলেন আমাকে।নবগ্রাম অজয় নদীর ধারে অবস্থিত। সবুজে ঘেরা এই গ্রাম। ভট্টাচার্য পাড়ার রঘুনাথ ব্যানার্জী বললেন,মা মঙ্গল চন্ডীর মন্দির অতি প্রাচীন।মায়ের পুজোর পালা পাড়ার সকলের একমাস করে পড়ে।মা দুর্গার পুজোর পালা তিন বছর পর এক একটি পরিবারের দায়ীত্বে আসে।সকলে মিলে পাড়ার পুজো চালায় বছরের পর বছর।হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম বাজারে পাড়ায়।এখানে,ঘোষ,পাল,মুখার্জী পরিবারের বাস। মুখার্জী পাড়ার ধ্রুবনারায়ণ বললেন,আগে মুখুজ্জে পুকুরের পাড়ে শিবপুজো হতো।মন্দির প্রায় দুশো বছরেরে পুরোনো হওয়ায় ভেঙ্গে পড়েছিলো।কৃষিকাজের সময় জল না হলে আমাদের বাবা, কাকারা শিবলিঙ্গ বাঁধ দিয়ে জলে ডুবিয়ে দিতেন। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই মেঘ হতো ও বৃষ্টি হতো।মানুষের বিশ্বাসে সবকিছু।তারপর গোস্বামী পাড়ায় গেলাম। সেখানে বদরী নারায়ণ গোস্বামীর সঙ্গে দেখা হলো।তিনি বললেন,আমরা নিত্যানন্দ মহাপ্রভুর বংশধর। মেয়ের বংশধর,দৌহিত্র বুঝলেন।আমার কাছে বংশলতিকা আছে। আমি বললাম,বলুন, আমি শুনি।তিনি শুরু করলেন,গঙ্গামাতা, তার স্বামী ছিলেন মাধব চট্টোপাধ্যায়, তার ভিটে এটা।তারপর প্রেমানন্দ,অনন্তহরি,পীতাম্বর,গৌরচন্দ্র,লালমোহন,শ্যামসুন্দর,নিকুঞ্জবিহারী,রামরঞ্জন, বংশগোপাল, বদরীনারায়ণ,বিনোদগোপাল।তারপর তিনি মন্দিরের গাত্রে লেখা বংশলতিকা দেখালেন।আমি ছবি তুলে নিলাম।পড়া যাবে নিশ্চয়।রাধা মাধবের মন্দিরে বারোমাস কানাই, বলাই থাকেন।অগ্রহায়ণ মাসে এই মন্দিরে রাধামাধব আসেন।তখন সারা গ্রামের লোক প্রসাদ পান। দীপের মনে পড়ছে এই আমার জন্মস্থান। আমার গ্রাম। স্বপ্নের সুন্দর গ্রামের রাস্তা বাস থেকে নেমেই লাল মোড়াম দিয়ে শুরু ।দুদিকে বড় বড় ইউক্যালিপ্টাস রাস্তায় পরম আদরে ছায়া দিয়ে ঘিরে রেখেছে । কত রকমের পাখি স্বাগত জানাচ্ছে পথিককে । রাস্তা পারাপারে ব্যস্ত বেজি , শেয়াল আরও অনেক রকমের জীবজন্তু।.চেনা আত্মীয় র মতো অতিথির কাছাকাছি তাদের আনাগোনা । হাঁটতে হাঁটতে এসে যাবে কদতলার মাঠ। তারপর গোকুল পুকুরের জমি, চাঁপপুকুর, সর্দার পাড়া,বেনেপুকুর । ক্রমশ চলে আসবে নতুন পুকুর, ডেঙাপাড়া ,পুজোবাড়ি, দরজা ঘাট, কালী তলা । এখানেই আমার চোদ্দপুরুষের ভিটে । তারপর ষষ্টিতলা ,মঙ্গল চন্ডীর উঠোন , দুর্গা তলার নাটমন্দির । এদিকে গোপালের মন্দির, মহেন্দ্র বিদ্যাপীঠ, তামালের দোকান, সুব্রতর দোকান পেরিয়ে ষষ্ঠী গোরে, রাধা মাধবতলা । গোস্বামী বাড়ি পেরিয়ে মন্ডপতলা । এই মন্ডপতলায় ছোটোবেলায় গাজনের সময় রাক্ষস দেখে ভয় পেয়েছিলাম । সেইসব হারিয়ে যাওয়া রাক্ষস আর ফিরে আসবে না ।কেঁয়াপুকুর,কেষ্টপুকুরের পাড় । তারপর বাজারে পাড়া ,শিব তলা,পেরিয়ে নাপিত পাড়া । এখন নাপিত পাড়াগুলো সেলুনে চলে গেছে । সাতন জেঠু দুপায়ের ফাঁকে হাঁটু দিয়ে চেপে ধরতেন মাথা ,তারপর চুল বাটি ছাঁটে ফাঁকা । কত আদর আর আব্দারে ভরা থাকতো চুল কাটার বেলা ।এখন সব কিছুই যান্ত্রিক । মাঝে মাঝে কিছু কমবয়সী ছেলেমেয়েকে রোবোট মনে হয় । মুখে হাসি নেই । বেশ জেঠু জেঠু ভাব ।সর্বশেষে বড়পুকুর পেরিয়ে পাকা রাস্তা ধরে ভুলকুড়ি । আর মন্ডপতলার পর রাস্তা চলে গেছে খাঁ পাড়া , কাঁদরের ধার ধরে রায়পাড়া । সেখানেও আছে চন্ডীমন্ডপতলা , কলা বা গান, দুর্গা তলার নাটমন্দির সব কিছুই । পুজোবাড়িতে গোলা পায়রা দেখতে গেলে হাততালি দিই ।শয়ে শয়ে দেশি পায়রার দল উড়ে এসে উৎসব লাগিয়ে দেয়। পুরোনো দিনের বাড়িগুলি এই গ্রামের প্রাণ তারপর চলে এলাম গ্রামের মন্ডপতলায়। এই গ্রামে আমার জন্ম। লেখিকা সুজাতা ব্যানার্জী এই গ্রামের কন্যা।তার দাদু ছিলেন ডাঃ বিজয় বাবু।এখনও এই বাড়িগুলো গ্রামের সম্পদ।ডানদিকের রাস্তা ধরে হাঁটলেই খাঁ পাড়া। গ্রামের মাঝে গোপাল ঠাকুরের মন্দির,কৃষ্ঞ মন্দির। তারপরেই রক্ষাকালীতলা। কত ধর্মপ্রাণ মানুষের বাস এই গ্রামে। গোপাল মন্দিরের পুজো হয় বাড়ুজ্জে পাড়ায়গ্রামের গাছ, পাথর,আমার গান আমার প্রাণ।সেখান থেকে অম্বলগ্রাম পাশে রেখে দু কিলোমিটার টোটো রিক্সায় এই গ্রাম। একদম অজ পাড়াগাঁ। মাটির রাস্তা ধরে বাবলার বন পেরিয়ে স্বপ্নের জগতে প্রবেশ করতে হবে।তন্ময়বাবু গবেষক।এন জি ও সসংস্থার প্রধান কারিগর বনের সবকিছু ঘুরিয়ে দেখালেন। তার জগৎ।পশু,প্রাণীদের উন্মুক্ত অঞ্চল।বিভিন্ন প্রজাতির সাপ ঘুরে বেড়াচ্ছে এখানে, সেখানে।মা কালীর মূর্তি আছে। কাঁচের ঘরে ইকো সিষ্টেমের জগৎ।কেউটে সাপ, ব্যাঙ থেকে শুরু করে নানারকমের পতঙ্গ যা একটা গ্রামের জমিতে থাকে। বিরাট এক ক্যামেরায় ছবি তুলছেন তন্ময় হয়ে।আমি ঘুরে দেখলাম প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে বানানো রিসর্ট।ওপেন টয়লেট কাম বাথরুম।পাশেই ঈশানী নদী।এই নদীপথে একান্ন সতীপীঠের অন্যতম সতীপীঠ অট্টহাসে যাওয়ার ব্যবস্থা করতে চায় এন জি ও, নৌকায়। তন্ময়বাবু হাতে সাপ ধরে দেখালেন। শিয়াল,বেজি,সাপ,ভ্যাম আছে। তাছাড়া পাখির প্রজাতি শ খানেক।একটা পুকুর আছে। তার তলায় তৈরি হচ্ছে গ্রন্হাগার।শীতকালে বহু বিদেশী পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন। তন্ময়বাবু বললেন,স্নেক বাইটের কথা ভেবে সমস্ত ব্যবস্থা এখানে করা আছে। ঔষধপত্র সবসময় মজুত থাকে।বর্ষাকালে ঈশানী নদী কিশোরী হয়ে উঠেছে।এই নদীকে মাঝখানে রেখে বেলুনের চাষিরা চাষ করছেন আনন্দে।এখানকার চাষিরা জৈব সার ব্যবহার করেন। কোনো রাসায়নিক সার প্রয়োগ করেন না। এক চাষি বললেন,আমরা সকলে একত্রে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, জৈব সার প্রয়োগ করেই আমরা চাষ করবো।তাতে বন্ধু পোকারা মরবে না। ফলনও হয় বেশি। এক এন জি ও সংস্থার পরামর্শে তাদের এই সঠিক সিদ্ধান্ত অন্য চাষিদের অনুকরণযোগ্য।এই এন জি ও সংস্থার যুবকরা গ্রামের ভিতর কুকুরদের নি-বিজকরণ কাজে লেগেছে।একটা লম্বা লাঠির ডগায় সূচ বেঁধে তাতে ওষুধভরে চলছে কাজ।কোনো প্রাণী আহত হলে তার সেবাশুশ্রূষা করেন যুবকবৃন্দ।সাপ ধরতে জানেন এই যুবকবৃন্দ।কোনো গ্রামে কোনো সাপ দেখা গেলে এই যুবকেরা সেটি ধরে নিয়ে এসে তাদের সংরক্ষিত বনে ছেড়ে দেন।এখনও এই যুবকবৃন্দ কাজ করে চলেছেন মানুষ ও প্রাণীজগতকে ভালোবেসে। বর্ষাকালে প্রচুর বিষধর সাপের আনাগোনা এই অঞ্চলে।এখানে পা দিলেই সাবধানে থাকার পরামর্শ দেন এখানকার কর্মিবৃন্দ।ঘুরে দেখার জন্য গামবুট দেওয়া হয় পর্যটকদের। প্রচুর দেশি বিদেশি গাছ গাছালিতে ভরা এই প্রাঙ্গন। একটি কৃত্রিম জলাধার আছে।তার নিচে লাইব্রেরী রুম তৈরির কাজ চলছে।ওপরে জল নিচে ঘর। কিছুটা তৈরি হয়েছে। শীতকালে প্রচুর পরিযায়ী পাখি এসে হাজির হয়। সেই পাখিদের নিয়েও চলে গবেষণা। তাদের জন্য সব রকমের উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা হয়।আর একটি জলাধারে বিভিন্ন ধরণের মাছ রাখা হয়। পা ডুবিয়ে জলে দাঁড়িয়ে থাকলে পায়ের চামড়ার মৃত কোষ খায় এইসব বিদেশি মাছেরা। ওপেন বাথরুমে ঈশানীর জল উপলব্ধ।এই রিসর্টগুলিতে সর্বসুখের ব্যবস্থা আছে।শীতকালে অনেক বিদেশি পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন।
৪৭
রাতে থাকা, খাওয়ার ব্যবস্থাও খুব সুন্দর।বেলুন গ্রামে ঢুকতে গেলে বাবলার বন পেরিয়ে মাটির আদরে হেঁটে যেতে হবে। এখন অবশ্য শিবলুন হল্ট থেকে নেমে বেলুন যাওয়ার পাকা রাস্তা হয়েছে।টোটো,মোটর ভ্যান চলে এই রাস্তা ধরে।চারিদিকে সবুজ ধানক্ষেতে হারিয়ে যায় মন এক অদ্ভূত অনাবিল আনন্দে।বেলুন ইকো ভিলেজ কাটোয়া মহুকুমার গর্ব।পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম থানার অন্তর্গত কাটোয়া মহুৃুকুমার পুরুলিয়া গ্রামে অবস্থিত মহেন্দ্র বিদ্যাপীঠ স্কুলে প্রায় চার শতাধিক ছাত্রছাত্রী পড়াশুনা করে। এই স্কুল গৃহটির পূর্ব মালিক ছিলেন মহেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তাঁর পুত্র শ্রী অতুলবাবু এই গৃহটি পিতার নামে দান করেন বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে।তারপর শুরু হয় কয়েকজন ছাত্র ছাত্রী নিয়ে পড়াশোনা। আজ সেই বিদ্যালয় পঞ্চাশ বছরে পদার্পণ করতে চলেছে।এবারে মাধ্যমিক পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপক বিপুল পাল। সে পেয়েছে মোট ৬৪৬নম্বর।বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে পুরস্কৃত করেছে স্বাধীনতা দিবসের দিনে। এক অখ্যাত গ্রামে এই বিদ্যালয় অবস্থিত হলেও এখানে পঠন পাঠন হয় খুব সুন্দরভাবে। প্রত্যেক শিক্ষক ও শিক্ষিকা মহাশয়ের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় প্রত্যেকবার মাধ্যমিকে ভালো ফল হয়। স্কুল বিল্ডিং অনেক পুরোনো। নবসাজে সজ্জিত হওয়ার প্রয়োজন আছে । কন্যাশ্রী ক্লাব,কম্পিউটার রুম, মেয়েদের ক্যারাটে প্রশিক্ষণ,পিরামিড গঠন প্রভৃতি অনেক কিছুই পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে শেখানো হয়। নানারকম অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা প্রভাত ফেরি করে।নাচগান, কবিতা আবৃত্তি ও আলোচনায় অংশগ্রহণ করে তারা। কন্যাশ্রী ক্লাব মেম্বারের মেয়েরা গ্রামে গ্রামে ঘুরে বাল্য বিবাহ বন্ধ করার চেষ্টা করে। মেয়েদের কোনো শারীরীক সমস্যা হলে বাড়িতে সাইকেলে চাপিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসে।এখন এই বিদ্যালয়ে নিয়মিত মিড ডে মিল খাওয়ানো হয় ঠিফিনে।আয়রন ট্যাবলেট ও স্যানিটারি ন্যাপকিন বিলি করা হয় নিয়মিত। প্রধান শিক্ষক মহাশয় শ্রী ভক্তি ভূষণ পাল। কম্পিউটার শিক্ষক শ্রী মেঘনাদ সাঁই মহাশয় ছাত্র ছাত্রীদের অতি যত্ন সহকারে পঞ্চম শ্রেণী থেকে কম্পিউটারে দক্ষ করে তোলেন। এই গ্রামে এ এক অতি পাওয়া বরের মত। যে বরে, ছাত্র ছাত্রীরা আধুনিকতার আলোয় আলোময় হয়ে ওঠে।খেলার দিদিমণি মৌ মজুমদার মহাশয়া ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে হিউম্যান পিরামিড,ক্লাপিং ডান্স,হিল পিরামিড প্রভৃতি অভ্যাস করান। স্কুলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে এগুলির প্রদর্শন করানো হয়। সকল শিক্ষক,শিক্ষিকা মহাশয়ের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে স্কুলের সুন্দর পরিবেশ।শ্রী রাজীব নন্দী মহাশয় ছাত্র ছাত্রীদের নিয়ে বৃক্ষরোপণ উৎসব পালন করলেন মহা সমারোহে।এছাড়া শ্রী বিশ্বরঞ্জন রানো,সুবীর কুমার ঘোষ,শারদশ্রী মন্ডল,সুবীর ঘোষ,শমীক ব্রষ্মচারী,মৌসুমী বিশ্বাস,মৌমিতা বৈরাগ্য, দেবযানী বিশ্বাস,সুদীপ ঘোষাল নীরবে নিভৃতে কাজ করে চলেছেন স্কুলের স্বার্থে।অনিমা পাল,সম্পদ ভাই,নন্দিতাদি নন টিচিং স্টাফের মধ্যে আছেন। বিভাসদা ও আছেন। তারা সকলেই স্কুলের স্বার্থে কাজ করেন।স্বাধীনতা দিবসে ছাত্র ছাত্রীরা অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিভিন্ন পিরামিড প্রদর্শন করলো।তাদের পিরামিড খুব সুন্দর দর্শনীয় এক ব্যালান্সের খেলা।স্কুল প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যারা জড়িয়ে ছিলেন তাদের মধ্যে অগ্রগ ঁহেমন্ত ঘোষাল,ঁশরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়,অলোকময় বন্দ্যোপাধ্যায়,শ্রী বিজয় চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ। তখন প্রধান শিক্ষক ছিলেন ঁধ্রুবনারায়ণ চট্ট্যোপাধ্যায়।অন্যান্য শিক্ষক মহাশয়রা ছিলেন কাশীনাথ ঘোষ,পন্ডিত মহাশয়,হরেরামবাবু,সত্যনারায়ণবাবু,নারায়ণবাবু,অধীরবাবু,চন্ডীবাবু দীপকবাবু,সুকুমারবাবু,মৌসুমী ভট্টাচার্য্য মহাশয়া,কাকলি ম্যাডাম প্রমুখ।সিদ্ধেশ্বরবাবু, গীতা থান্দার,বৃন্দাবনবাবু ছিলেন অশিক্ষক কর্মচারীবৃন্দ।স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির আজীবন সদস্য হলেন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শ্রী প্রকাশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মহাশয়।ঠিক সাড়ে দশটায় স্কুলের প্রার্থনা সভা শুরু হয়। ছাত্রছাত্রীরা এই সভায় নিয়মিত পিটির মাধ্যমে একটু শরীরচর্চা করে। তারপর, জনগণ মন অধিনয়ক,এই জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়। তারপর যথারীতী ক্লাস শুরু হয়। ক্লাস প্রত্যেকদিন একদম শুরু থেকে শেষ অবধি হয়। সুবীর ঘোষ মহাশয়ের নিজস্ব উদ্যোগে স্কুলের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় থাকে।শ্রী বিশ্বরঞ্জন রানো মহাশয়ের অবদান অপরিসীম। এক কথায় তা প্রকাশ করা অসম্ভব।পুরুলিয়া গ্রামের আমাদের এই স্কুলটি গৌরবের শ্রেষ্ঠ চূড়ায় পৌঁছবে এই আশা রাখেন অভিভাবকবৃন্দ। তুলি আর দীপ মন দিয়ে শুনল কাহিনী গ্রামের বাসিন্দ বাবুর কাছে। দিলিপদা, রিমি ও ছিল।
দীপ আর বাবুকে সিভিক পুলিশ দুজন বলল আপনারা তো খুব সাহসী তাহলে আমাদের একটু হেল্প করুন।
৪৮
দীপ আর বাবু সিভিক পুলিশদের সঙ্গে বাড়ি বাড়ি ঘুরে সচেতন করতে লাগলো সবাইকে একটাই কাজ লকডাউন সফল করা।
পুলিশ রা সারাদিন না খেয়ে তারা সেবা করে চলেছে মানুষদের মানুষদের দীপা বাবু কি করল পুলিশ এবং বাকি পুলিশদের খাবার ব্যবস্থা করল পুলিশ বলল আপনারা ভালো কাজ করেছেন কিন্তু আপনারা এভাবে বাইরে বেরিয়ে বেড়াবেন না জান বাড়ি যান দূরত্ব বজায় রাখুন ঘরে থাকুন সুস্থ থাকুন।
রিপার বাবু ফেরার সময় দেখল কত পশুপাখি মনে পড়ে আছে কি করে এরা মূল্য দিতে খুব ভয় হলো এই প্রাণীকূলকে অরণ্যকে ধ্বংস করে দেবে এই মহামারী।
দীপ রাতে শুন্য বাউরী পাড়া কান্নার আওয়াজ সে বুঝল কিন্তু নিশ্চয় মারা গেছে তার চিৎকার-চেঁচামেচি সে ভেবেছিল হয়তো গ্রামে কর্ণাটক পড়েনি কিন্তু না গ্রাম কেউ এই মহামারী ছাড়বে না।
৪৯
এদিকে নদীয়ার বিরহাট্টা গ্রামে লতিকা বিরাজুল সুনীল আর মিনতি কাজ করে চলেছে পূর্ণোদ্যমে। পুলিশকে সহায়তা করেছে তারা আশ্রম থেকে। খাবার বিলি করছে সবকিছুই করছে। কিন্তু মৃত্যু হার কমছে না। আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
লতিকা বলল, করোনার জেরে দেশজুড়ে চলছে ২১ দিনের লকডাউন। আগামী ১৪ই এপ্রিল লকডাউন শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা। লকডাউন বাড়ানোর স্বপক্ষে দেশের বেশকিছু রাজ্যের সরকার। ভারতের প্রথম রাজ্য হিসেবে লকডাউন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিলো ওড়িশা সরকার। আগামী ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন সেরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি কেন্দ্র সরকারকেও একই সিদ্ধান্ত নেবার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
ওড়িশা সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে কোরোনাভাইরাস গত ১০০ বছরের ও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিপদ। মানুষকে একসাথে দৃঢ়বদ্ধভাবে এর প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।আগামী ১৭ জুন পর্যন্ত ওড়িশার সমস্ত স্কুল, কলেজ ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ট্রেন ও বিমান বন্ধ রাখার আবেদন জানিয়েছেন ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েক।
মিনতি বলল, আমাদের এ লড়াই চলতে থাকবে পৃথিবী জুড়ে।এস প্রকৃতির সঙ্গে দোস্তি পাতাই প্রাণীকুল।
একশ বছর পর যখন কোভিড ১৯ পরাস্ত হবে মানুষের কাছে তখন পৃথিবী কেমন হবে, প্রশ্ন করল মিনতি।
সুনীল সায়েন্স নিয়ে পড়াশুনা করেছে। সে বলল তখন দেখবে প্রাণীকুল নিশ্চিন্তে থাকবে। আগামী ১০০ বছরে পৃথিবী কোন দিকে যাবে, সেটা বরং জানার চেষ্টা করা যাক। জিন সম্পাদনা করে নীরোগ, নির্মেদ মানুষ তৈরি করার বিদ্যা মানুষ আগামী ১০০থেকে ১৫০ বছরের মধ্যে খুব ভালোভাবেই রপ্ত করবে মানুষ।লতিকা বলল আগে টিকটিকির প্রজাতিগুলো এখন কেমন ভ্যানিস হয়ে গেছে। সুনীল বলল আবার তারা ফিরে আসবে পৃথিবীর বুকে। টিকটিকিরা সরীসৃপদের মধ্যে সবচেয়ে বড় গ্রুপ এদের মধ্যে 3700 প্রজাতি আছে। এখনো অনেক প্রজাতি আবিষ্কার করা যায়নি।
বর্ষবরণে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে এদের খুব বেশি দেখা যায়।
কেবল বরফঢাকা উত্তরতম আন্টার্টিকা অঞ্চলে দেখা যায় না।
এই প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বড় টিকটিকি এদের বেশিরভাগ উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল দেখা যায়।
কিছু প্রজাতিকে মাদাগাস্কার এবং ফিজি অঞ্চলে দেখা যায়।
একবার যুক্ত টিকটিকি দেখতে একই রকম থাকে সেই অস্ট্রেলিয়া এবং একটি প্রজাতি দেখতে পাওয়া যায়। বহুরূপী বা ক্যামেলিয়ন গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে যেমন আফ্রিকা মহাদেশ এবং ভারতে দেখতে পাওয়া যায়।এরা বিশেষ করে গাছে বাস করার জন্য অভিযোজিত হয়েছে।ক্যামেলিয়ন তার পরিবেশ অনুযায়ী দেহের ত্বকের বর্ণ পরিবর্তন করে।কিছু ইন্ডিয়ানা এবং বড় আকারের টিকটিকি বলে পরিচিত এদের দৈর্ঘ্য 50 সেন্টিমিটার এবং এটি দেখা যায় এবং গাছে বাস করে। এরা দিনের বেশিরভাগ সময় ব্যস্ত থাকে এরা কীটপতঙ্গ এবং অন্যান্য ছোট ছোট প্রাণী শিকার করে তবে কয়েকটি প্রজাতি এবং মরুভূমি উত্তর আমেরিকায় বাস করে এরা উদ্ভিজ্জ খাদ্য খেতে পছন্দ করে ভালোবাসে কিছু বড় আকারের এক আমাকে ড্রাগন বলা হয় এরা দক্ষিণ এশিয়ায় বাস করে এদের রং নীল নীল ড্রাগন বলা হয় বড় ঘন পিছনে থাকে এদের কান বলা হয় এরা কানে শুনতে পায় এবং খুব দ্রুত দৌড়ায় ইন্ডিয়া দক্ষিণ আমেরিকার দেখতে পাওয়া যায় এদের পেছনে পাগলি শক্তিশালী মাংসপেশি যুক্ত এবং আঙুলগুলি লম্বা উপজাতিদের মধ্যে অন্যতম পেছনের পায়ে ভর দিয়ে 10 কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায় দৌড়াতে পারে। সামুদ্রিক গুয়ানা গ্যালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের 532 মধ্যে বেশিরভাগ সময় কাটায় অভিজ্ঞ সাধারণত এরা এদের নিজে সাজে নিজেকে প্রোফাইল করে জলের মধ্যে এগিয়ে যায় এরা জলের গভীর সমুদ্রের আগাছা খেতে ভীষণ ভালোবাসে কিছুই এবং থাকে বিশেষ করে মাথার কাছাকাছি অঞ্চলে মিলনের সময় পুরুষ টিকটিকি মাথাবাড়ি দেওয়া এবং পাবলিকে বিশেষভাবে আকর্ষণ করার জন্য করে থাকে শ্বাস নেওয়ার জন্য কিন্তু এরা সমুদ্রের জলের মধ্যে ভজন পর্ব সমাধা করে দেয় এবং সমুদ্রের গভীরে প্রবেশ করে তখন এর গতি কমিয়ে দেয় যাতে এদের অক্সিজেনের প্রয়োজন অনুভূত হয় এর নিচে অনেকক্ষণ থাকতে পারে। ঝালরযুক্ত টিকটিকি একপ্রকার আগামীর এরা অস্ট্রেলিয়া নিউগিনি অঞ্চলে বাস করে এদের লেজ খুব লম্বা এদের উজ্জ্বল রঙের চামড়া কলাগাছে জায়েদের ঘার কে ঠিক রাখার মতো অবস্থান করছে সাধারণত ঘাড়ের কাছে এপ্রিল বাচ্চাদের কাছে চ্যাপ্টা হয়ে আছে যদি টিকটিকি কোন বিপদের সংকেত বাবার তা পায় তবে সতর্ক হয় এবং মুক্তিকে খুলে দেয় এবং মাথার চারদিকে আলো ছড়িয়ে দেয় এর ফলে এলাকার অনেক বড় এবং ভয়ানক হয়ে যায় এবং এদের 70 পালিয়ে যায় উড়ন্ত ড্রাগন এক প্রকারের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াতে দেখা যায় যেখানে আছে সেখানে বেশি দেখা যায় এরা উড়তে পারেনা কিন্তু সুনীল আকাশে ভেসে থাকতে পারে এর মধ্যে এক গাছ থেকে অন্য গাছে করে লাফিয়ে আকাশে ভেসে যায় সেজন্যই তো হয়না এদের উপর থেকে দেখলে গোলাকার দেখাবে। গাছের মধ্যে বাস করে ক্যামেলিয়ন কীটপতঙ্গ সুন্দরভাবে স্বীকার করতে পারে এরা পা দিয়ে গাছকে জড়িয়ে ধরে এবং গাছের ডালের একদিকে তিনটা আঙুল ঢুকিয়ে রাখে এবং অপরদিকে দুটিকে রাখে এলিয়েনদের একটি শক্তিশালী সহজে নাড়ানো জায়েজ আছে কি বলে এটা গাছের ডাল কে ধরতে পারে এতে একটি অতিরিক্ত পায়ের মতো কাজ করে এরা পরিবেশের অনুযায়ী বর্ণ পরিবর্তন করতে পারে যখন এদের শিকার কীটপতঙ্গ কাছাকাছি আসে তার দিকে ছুঁড়ে দেয় কীটপতঙ্গ তাতে আটকে যায় তখন এরা শিক্ষার্থীকে মুখে ভরে খেয়ে নেয়। বিরাজুল বলল,মানুষ এখন জানে না কোনো গ্রহের সঠিক খবর। তখন মস্তিস্কের উন্নতি ও অটোমেটিক নার্ভাস সিষ্টেমের মাধ্যমে সবকিছু ধরাছোঁয়ার মধ্যে এসে যাবে।
৫০
অন্তিম পর্ব।
আগামী ১০০ বছরে পৃথিবী কোন দিকে যাবে, সেটা বরং জানার চেষ্টা করা যাক। জিন সম্পাদনা করে নীরোগ, নির্মেদ মানুষ তৈরি করার বিদ্যা মানুষ আগামী ১০০থেকে ১৫০ বছরের মধ্যে খুব ভালোভাবেই রপ্ত করবে। ক্রিস্পার ক্যাসের মতো জিন এডিটিং টুল এখনই চলে এসেছে। আর ক্যানসারের নিরাময়ে অর্জিত অগ্রগতির কারণে বয়স ১০০ বছরের নিচে কেউ আর ক্যানসারের বলি হবে না। কাজেই মানুষের গড় আয়ু আরও বাড়বে, যেমনটা গত দেড় শ বছরে ধরে বেড়েই এসেছে।কিন্তু আগামী দেড় শ বছরের মধ্যে মানুষ একবাচনিক পয়েন্টে, অর্থাৎ মানুষ অমর হবে না। সুনীল বলে উনিশ শতকে মানুষ গড়ে মাত্র ৩৭ বছর বাঁচত, আজকে বাঁচছে ৯০ বছর। কাজেই সিঙ্গুলারিটি পয়েন্টে পৌঁছাতে না পারলেও আগামী ১০০ বছরে যে গড় আয়ু বেড়ে ১০০ পার করবে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে যাবে।ভাবুন তো, একদিকে মানুষ ১০০ বছর বাঁচছে, অন্যদিকে জনসংখ্যা বেড়ে ছাড়িয়ে গেছে কয়েকশ বিলিয়ন। পৃথিবীর বর্তমান জনসংখ্যায় এ রকম এক পৃথিবী ১০০ বছর পরে সামান্য আর্থসামাজিক ভারসাম্যহীনতাতেই কিন্তু ভীষণ রকম ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। দেখা দিতে পারে আরও বেশি অসাম্য; সেখান থেকে হতাশা ও নৈরাজ্য।কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা খাটিয়ে উৎপাদনে রোবটের ব্যবহার এমন একপর্যায়ে পৌঁছতে পারে যে আফ্রিকা ও এশিয়ার বিশাল জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ধনী দেশগুলোর সম্পদের পার্থক্য বিশাল হয়ে উঠবে।লতিকা বলল ঠিক। উন্নত দেশগুলোর ত্রুটিহীন মানবজিনোমের অধিকারী বড়লোকেরা হয়তো আজ থেকে ১০০ বছর পর স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করবেন না। এরা তাঁদের বিপুল সম্পদ নিয়ে প্রথমে পৃথিবীর আন্তর্জাতিক সীমানায় নিজস্ব কৃত্রিম দ্বীপ বানিয়ে ধনী শহর স্থাপন করবে।কৃত্রিম দ্বীপ কেন? কারণ মোনাকো বা সুইজারল্যান্ড বা পশ্চিম পাম বিচ যতই বিত্তবান এলাকা হোক না কেন; উত্তর আফ্রিকা বা মধ্যপ্রাচ্য বা লাতিন আমেরিকা থেকে কিন্তু বেশি দূরে নয়। খোদ উত্তর আমেরিকায় সাদারা তখন ভীষণ সংখ্যালঘু এক জাতি। 'বেআইনি' আর 'অসম্পূর্ণ' সাধারণ মানুষে ছয়লাপ হয়ে যাবে উত্তর আমেরিকা ও ইউরোপ ও সারাবিশ্বে।
আর তাই আটলান্টিক বা প্যাসিফিকে সাগরের মাঝখানে সমুদ্রের ওপরের লেভেলে প্রতিষ্ঠিত হবে কিছু নতুন অতি সমৃদ্ধশালী সার্বভৌম রাষ্ট্র। এই দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর মহা বিত্তবান প্রায়-অমর মানুষেরাই পরে প্রথম সুযোগে চাঁদে বা মঙ্গল গ্রহে বা অন্য গ্রহগুলোতে বসতি স্থাপন করবে। আর জলবায়ুর দিক থেকে বিধ্বস্ত, প্রাকৃতিক সম্পদের দিক থেকে নিঃস্ব এই পৃথিবীতে পড়ে থাকবে গরিব দেশগুলোর জেনেটিকভাবে দূর্বল' মানুষের দল।এত কিছুর পরেও আগামী দেড় শ বছরে ভিন গ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণের অস্তিত্বের সঙ্গে মানুষের দেখা না হওয়ার সম্ভাবনা বেশিই।
সুনীল বলল বিজ্ঞানী, গবেষকরা এখনই ভাবতে শুরু করেছেন কেমন হতে পারে আজ থেকে ১০০ বছর পরের পৃথিবী। কোনদিকে যাচ্ছি আমরা, পৃথিবীর ভবিষ্যৎ কী? যে উত্তরগুলো তথ্য-উপাত্ত থেকে আসছে তাতে আশাবাদী হওয়ারই কথা। তবে সংকটও রয়েছে। প্রযুক্তির উৎকর্ষে দৈনন্দিন জীবন হয়ে উঠবে।
প্রতিদান দিতে হবে মানুষকেই। নাগাদ মানুষ বন সৃষ্টির জন্য নতুন পরিকল্পনা নিয়ে উঠে পড়ে লাগবে। এ পরিকল্পনায় থাকবে শহরে বনায়ন। বনাঞ্চলে নগর প্রসারিত হলেও উদ্ভিদ ও প্রাণীকুলের কোনো ক্ষতি যেন না হয় সেটা প্রাধান্য পাবে। মানুষের আকাশছোঁয়া দালান হবে একেকটি ছোট বন। পুরো শহর বনের কোনো ক্ষতি যেন না করে এমন পরিকল্পিতভাবে সাজানো হবে। সেখানে মানুষের প্রয়োজন মেটানোর আগে বন ও প্রাণীজগতের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা নিশ্চিত করা হবে। ইকোবিল্ডিং হবে বিশ্বজুড়ে। সময় বাঁচাতে মানুষ আরামদায়ক ও নিরাপদ যানবাহন উদ্ভাবনে মন দিয়েছে। ইতিমধ্যে সাফল্যেরও দেখা মিলেছে। তবে ২০৫০ সালের মধ্যেই এর পুরো ফলাফল মানুষ ভোগ করবে। দ্রুতগতির ট্রেন, প্রাইভেট কার, উড়োজাহাজ ও জাহাজ মানুষ ব্যবহার করতে পারবে। এগুলোর গতি হতে পারে ঘণ্টায় ৫০০ কিলোমিটারের মতো। এছাড়া সম্পূর্ণ বিদ্যুত্চালিত গাড়িও তখন রাস্তা দাপিয়ে বেড়াবে। প্লাস্টিক তৈরিতেও মানুষ সালের মধ্যে সফল হবে বলে ধারণা করা হয়। এছাড়া উন্নত সংকর ধাতুও তৈরি করতে সক্ষম হবে মানুষ। বিভিন্ন নতুন পদার্থের খোঁজ মিলতে পারে এ সময়ের ব্যবধানে। এগুলো দিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য তো বটেই উড়োজাহাজ, রকেট তৈরিতেও মানুষ অভাবনীয় সাফল্য পাবে। কার্বন গ্রাফাইট ব্যবহার করে মানুষ স্বচ্ছ ধাতু পাত আবিষ্কার করতে পারে। এগুলো ওজনে হবে হালকা কিন্তু পুরুত্ব হবে বেশি। মাত্র কয়েকশ টন হবে আকাশছোঁয়া দালানের ওজন।
বিদ্যুৎ ব্যবস্থাকে আরও আধুনিকায়ন করা হবে এর মধ্যে। স্মার্ট গ্রিড সেই পথেরই একটি সম্ভাব্য পদ্ধতি। বর্তমানে প্রতিবছর পৃথিবীতে শক্তির চাহিদা দুই শতাংশ করে বাড়ছে। বর্তমানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে এমনটাই বলছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি। স্মার্ট গ্রিডের মাধ্যমে বিদ্যুৎ অপচয় কম হবে ও পুরো বিশ্ব একটি বৈদ্যুতিক যোগাযোগের মধ্যে আসবে। ফলে সহজেই প্রয়োজন মতো গোটা বিশ্বে প্রয়োজনীয় শক্তি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এই নেটওয়ার্ক স্মার্ট গ্রিড হিসেবে পরিচিত হবে।তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। একই সঙ্গে বৃদ্ধি পাচ্ছে সমুদ্রতলের উচ্চতা। তাই আশঙ্কা করা হয় মধ্যেই নিউইয়র্ক বা মুম্বাইয়ের মতো শহরগুলো বন্যায় ডুবে যাবে। বিশ্বের প্রধানতম শহরগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে ভাসমান শহর প্রযুক্তি মানুষের হাতে চলে আসবে। ফলে সমুদ্রে দেখা যাবে বিভিন্ন ভাসমান শহর। এগুলো বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে হবে না। এই শহরগুলো মাল্টিস্টোরেড দালানের মতোই গড়ে উঠবে।মহাকাশে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনার কথা শোনা যায়। এটি আরও বড় পরিসরে এগোবে। তখন পৃথিবীর বুকে তেল, গ্যাস, কয়লা বা সোনা খোঁজার মতো করেই মহাকাশের বিভিন্ন প্রান্তে, গ্রহে মানুষ খোঁড়াখুঁড়ি শুরু করবে। পৃথিবীর বাইরে প্রাকৃতিক সম্পদের খোঁজ মিলতে পারে। বিরাজুল বলল, ঠিক। মানুষ আশায় বাঁচে। এর মধ্যে মানুষকে অনেক কঠিন চ্যালেঞ্চের মধ্যদিয়ে যেতে হবে। তেল, গ্যাস ও খাওয়ার ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তো রয়েছেই। সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ। তবে আশার কথা, মানুষ এই সময়েই পাবে উন্নত ভ্যাকসিন বা টিকা। রোগ মোকাবিলায় মানুষ আশাতীত সাফল্যের দেখা পেতে পারে। মানুষের গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১২০ বছরের কাছাকাছি। শিশুমৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে যাবে। গবেষকরা আশাবাদী শিশুমৃত্যু হার কমিয়ে চমকপ্রদ এক পৃথিবীর সঙ্গে মানুষকে পরিচয় করে দেবে এই সুফল পরবর্তী ১০০ বছর ভোগ করতে পারবে পৃথিবী। এইচআইভি ও ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি পুরোপুরি নিরাময় করা যাবে। এছাড়া মস্তিষ্কের রোগেও মানুষকে আর ধুঁকে ধুঁকে মরতে হবে না বলে দাবি করেন গবেষকরা। এর মধ্যেই মানুষের মস্তিষ্ক মানচিত্র তৈরি ও বিশ্লেষণ করা সম্ভব হতে পারে। ফলে সহজেই মানুষের স্মৃতিশক্তি সংরক্ষণ করা ও চিন্তাশক্তির পূর্ণ ব্যবহারে যুগান্তকারী সাফল্য আসতে যাচ্ছে। মানুষের মস্তিষ্ক তখন কম্পিউটারের মতোই নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবহার করা যাবে। চাইলে যে কেউ তার স্মৃতি কম্পিউটারে জমা করে রাখতে পারবে। অঙ্গ প্রতিস্থাপনেও দেখা মিলবে অবিশ্বাস্য প্রযুক্তির। আজকের পৃথিবীতে যা অবিশ্বাস্য।তা হবে একেবারেই সাদামাঠা ব্যাপার। এখন মানুষের হাত-পা প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। কিডনি প্রতিস্থাপন করা হচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত থেকে আরও উন্নত হবে চিকিৎসা জগৎ। তখন মানুষের হূিপণ্ড ও মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনেও সাফল্য আসতে পারে। রোবোটিক হাত-পা ব্যবহার করতে পারবে মানুষ। অঙ্কুর কোশ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী মানুষ থাকবে না। তখনকার কিশোর তথা মানুষেরা সৌভাগ্যবান কত একবার ভেবে দেখ সোনা।
সুদীপ ঘোষাল নন্দন পাড়ার খাজুরদিহি কাটোয়া কুড়ি নম্বর ওয়ার্ড পূর্ব বর্ধমান 713150
মো ৮৩৯১৮৩৫৯০০
সমাপ্ত।