প্রথম পরাজয়
ছবি ঋণ- ইন্টারনেট
চন্দন মিত্র
সকাল থেকে ডুবকি এমন কান্নাকাটি শুরু করেছে যে, ছুটির দিনটা মাটি হয়-হয়। ছ-মাস পেরিয়ে আজ দ্বাদশতম দিনে পড়েছে সে। আজ পর্যন্ত একদিনের জন্যেও সে এমন অদ্ভুত আচরণ করেনি। কেবল খিদে পেলে কাঁদে। বাকি সময় সে নিজের মতো খেলে। মাস দুয়েক ধরে সে এক নতুন খেলা শুরু করেছিল, পায়ের আঙুল চোষা। ক্রমান্বয়ে একটি করে পা নিয়ে মুখে পুরে সে আনন্দে চুষত। মনোজের মা বলে, মেয়ে মেধাবী হবে, পা-খাওয়া মেধাবী হওয়ার লক্ষণ। আর হবে নাই বা কেন ! কার মেয়ে দেখতে হবে তো ! ও মেয়ে বাপের মতোই হবে । মিতু, মনে করিয়ে দেয়, মা, চাকরি করি না বটে আমিও কিন্তু এমএ বিএড !
ডুবকি সাধারণত সকাল আটটা পর্যন্ত ঘুমায় । সেই ফাঁকে মিতু ঘর ধোয়ামোছা, রান্নাবান্নাসহ সব কাজ সেরে নেয়। মনোজও হাতমুখ ধুয়ে স্নানটান সেরে খাওয়া দাওয়া করে অফিস বেরোনোর জন্য প্রস্তুত হয়। ছুটির দিনগুলোতে মিতুর রুটিন পালটায় না, মনোজের পালটায়। সে নটার আগে বিছানা ছাড়ে না। আজ ডুবকির কান্নাকাটি আর অস্থিরতায় তার ঘুম ভেঙে যায়। মিতুও হাতের কাজ ফেলে ছুটে আসে। দুজনে তাকে কোনোভাবে থামাতে পারে না। ডাক্তারের কাছে যেতে হবে ভেবে দুজনেই এক প্রকার মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে, এমন সময়, মিতু মেয়ের অসুখটা ধরে ফেলে। ডুবকি কান্নাকাটি করতে করতে পাদুটি ধরে প্রাণপণে মুখে ঢোকাতে চাইছে, কিন্ত পারছে না। আর প্রতিক্রিয়াস্বরূপ সে রাগেদুঃখে ও হতাশায় পাদুটিকে উঁচুতে তুলে কচি দুই হাত দিয়ে যথাসম্ভব সজোরে অনবরত আঘাত করে চলেছে ।
--------------------------------------