Click the image to explore all Offers

ছোটগল্প ।। গল্পটা শুরু হচ্ছে এখান থেকে ।। দেবনাথ সুকান্ত



ছবিঋণ- ইন্টারনেট

গল্পটা শুরু হচ্ছে এখান থেকে 

 

দেবনাথ সুকান্ত

 


 

একটি মেয়ে একদিন বৃষ্টিতে ভিজে ঘরে এল। দেখলো তার শরীর বেশ হালকা লাগছে, গের থেকে অনেক হালকা। সে একটু মোটা ছিল। তারপর এয়েকদিন বাদে আবার ভিজলো। দেখলো আরও ভালো আরও হালকা। মনে হচ্ছে সে যেন একটু রোগা হয়েছে। সাওয়ারের তলায় দাঁড়ালো কিন্তু তেমন কিছু হল না। জলের ধারা তার শরীর দিয়ে শুধু বয়েই যাচ্ছে যেন, তাকে ছুঁয়ে বইছে না। সে অনেক বার করে জল নিয়ে তার শরীরে মাখলো, তাও জল যেন তার দেহের ভিতরে ঢুকছে না। অথচ বৃষ্টি একেবারে অন্য রকম। সে সিটি সেন্টারে এক বিমা কোম্পানির ব্যাক অপিসে হিসাব দেখাশুনা করতোকেন সে কমার্স নিয়েছিল, কেনই বা ট্যালি শিখেছিল, বলতে পারবে নাএকদিন যখন সে অফিস থেকে বাড়ি এসেছে, দেখে বাইরের ঘরে একটি ছেলে বসে আছে। মুখ নিচু দুপাশে দুই মহিলা। ছেলেটিকে দেখে তার হঠাৎ করে মনে হল যেন পুরুষত্বহীন এক ক্লীব লিঙ্গ এবং সে বসে আছে। ঘরে আসতেই মায়ের সাথে চোখাচুখি হল। ইশারায় বলল ভাল না। মাও সায় দিল ঠিক আছে। সে কি মাকে বলবে তার জামাগুলি কিছুদিন যেন একটু ঢিলা হয়েছে। সেকি তার বান্ধবি যাকে সে মায়ের পরে সব থেকে ভালবাসে তাকে বলবে। নাকি তার বাবা বা ভাই কাউকে।   

  

গল্পের অন্য দিক, কয়েনের যেমন হেড আর টেল দুটোই থাকে

 

একটি কম বয়সী ছেলে যার বয়স তার সময়কে ছাড়িয়ে অনেকটা এগিয়ে গেছেসে ভাবছে --- আমি মনে করতে পারি তার কথা আমি কল্পনা করতে পারি একটি ভাঙা মন্দির চার পাশ ঘাস জাতিয় জংলি গাছে ঢেকে ছিল। সে খুব সাধারণ ভাবে এসেছিল আমার কাছে। আমি সে দিনই জেল থেকে ফিরে ছিলাম। যদিও ছমাস আগেই ছাড়া পেয়েছিলাম। একটা লোক যে কোনো কালে আমার মায়েরই খুব কাছের ছিল, আর আমাকে খুব দামি চকলেট দিত তাকে আমি ছুরি মেরে ছিলাম। যখন আমি পনের বছরের ছিলাম। এতে মা খুশি হয়ে ছিল না, না হয়ে ছিল তা আমি জানতে চাইনি, বরং কোর্টে বলে ছিলাম হ্যাঁ আমি নিজে খুব খুশি। আমার কোনো আপসোস নেই কারণ সে আমাকে অকারণে দোকানে পাঠাতো। আমরা একদিন ঐ বাড়িতে ভাঁড়া থাকতে এসে ছিলাম, কারণ তখন আমার বাবা মারা গেছিল আর ঠাকুমা আমাদের তার ঘরে ঢুকতে বাঁধা দিয়ে ছিল। আমি এখন আঠেরো বছরের জেলে যাওয়ার আগে বা বেরোনোর পরে আমি অনেক পালটে ফেলেছি নিজেকে। যে সব শিখেছি তাতে দেখেছি আমার শরীরটা কীভাবে বদলে গেছে। আমার চাওয়া গুলো পালটে গেছে। বুঝতে পেরেছি কোনো ভুলই ভুল নয় যদি তাকে ঠিক ভাবে করা যায়।

 

এখন আমি দেখছি আমার কল্পনার সাথে, আজ আমার বাস্তব কি ভাবে মিলে যাচ্ছে। যে ভাঙা মন্দিরের ছবি আমার ভিতরে এতদিন ছিল। তার যায়গায় একটি ছাদ, একা একটি মেয়ে আর বৃষ্টি। আমি নীচে থেকে বুঝতে পারছি আমাকে সে ডাকছে।   

 

মেয়েটি এখন ভিজছে

 

এ জল কতটা আলাদা, কত মিষ্টি, কত ঠাণ্ডা, সালয়ার আমার গায়ে জড়িয়ে আছে। আমাকে দুহাতে আদর করছেসালয়ারের ভিতরের ছোট প্যান্ট যেন আমার শত্রু আর আমার লজ্জা। উপরের কামিজ যেন আমার প্রেমিক ভিতরের ব্রা আমাকে দুহাতে রক্ষা করে আছে। আর জল আমার আর প্রেমিকের মাঝে এক সিক্ততা তৈরি করছে। ইচ্ছে করছে মাঝের এই বাঁধাগুলি খুব আস্তে আস্তে খুলে ফেলি। নিজেকে মুক্ত করি নিজে হাতে। কেন এই মিথ্যার দেয়াল থাকবে। কেন সে পাবে না পুরোটা।

মেয়েটি এবার খুবই আশ্চর্য ভাবে কামিজের ভিতর থেকেই নিজের বুককে মুক্ত করলো। কীভাবে জানি না খুলে দিল বুকের ছোট্ট জামা খানি। ছাদের গড়ালি জলে এভাবে ছুঁড়লও তাকে, যেন সে এক ঘৃণাকে ছুঁড়ে ফেলছে। তারপর হাত দিল যেখানে লজ্জা। কিন্তু সালয়ারের ভিতরে কীভাবে সে তার ছোট প্যান্ট কে ছিঁড়ে ফেলবে। দুটোকেই ফেলে দিল, যেন কত ক্ষমা ভরে রেহাই দিল নিজেরই শত্রুকে। আশ্চর্য জল যেন এবার তার যনিতে চুমু খাচ্ছে। তার কোমরের নীচে যেখানে কলস সেখানে ছলকে উঠছে ঢেউ। আর বুক তার কথা কীভাবে সে বলবে, তার বৃন্ত খানি ফুলে উঠে প্রায় অঙ্কুরিত হবে বলে বসে আছে।

 

এখানে ছেলেটির বিশ্বাস

 

আমি দেখছি একটি মেয়ে অকারণ বৃষ্টিতে ভিজে যাচ্ছে। দাঁড়িয়ে আছে উপরের দিকে মুখ করে, চোখ বন্ধ। ঠোঁট দিয়ে যেন কিছু অনুভব করতে চাইছে। মনে হচ্ছে কেউ চুমু খাচ্ছে তাকে। আর কিছুক্ষণ পরে পরে গা থেকে হাতে করে জল কাঁচিয়ে ফেলছে সে। যেন জলের সাথে হাতে করে গায়ের ময়লা কাঁচিয়ে ফেলতে চাইছে আবার স্থির হয়ে যাচ্ছে কিছুক্ষণ। আমি দেখছি হয়তো আমারই জন্য সে আজ ছদে এসেছে। আমাকেই চাইছে কেন সে নিজেও জানেনা।

 

আমি আজই সকালে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছি, আমি খুব ভাল হয়ে ছিলাম বলে আগেই ছাড়া পেয়েছি। কিন্তু মার কাছে যাইনি। মাও আমাকে দেখতে আসেনি ছ'সাত মাস হল। আমার মনে হয়ে ছিল, না জানিয়ে মাকে বিরক্ত করা হয়তো ভালো হবে না। যে কারণে ঐ লোকটাকে মেরে ছিলাম আবার না কাউকে আমার মারতে ইচ্ছে করে। আর তারপরে মা হয়তো আবার একা হয়ে যাবে। কাউকে খুঁজতে তার সময় লাগবে কিছুটা। তাছাড়া আনেক দিন পরে এভাবে বাইরের হাওয়া কত ভালো তাই আমি কাউকে বলিনি আমি এখন কোথায়। 

 

এখন গল্পের মুল বিষয়

 

ছেলেটি কোনো ভাবে জানালা টোপকে ছাদে উঠে এসেছে। এতক্ষণ সে রাস্তায় স্ট্রিট লাইটের কাছে একটি শেডের নীচে দাঁড়িয়ে ছিল। এবার দুজনা দুজনের মুখোমুখি। ছেলেটি দেখছে বৃষ্টিতে ভিজে আপাত সুন্দরী এক মেয়ে। বাস্তবে সে ততটা আকর্ষণীয় নয়। তার বুক দুটি তার কাঁধের তুলনায় বেশ ছোট তারপরে কোমরের কাছটা হঠাৎ উথলে উঠেছে। ভেজা কাপড় তার শরীরে এমন ভাবে লেপটে রয়েছে যে বোঝা যাচ্ছে তার গায়ের অপ্রয়োজনীয় চর্বি। পেটের নিচ থেকে নেমে আসা ঝুলন্ত জামা যেন তাদের মালিকানাহীন অস্তিত্বের জন্য হাওয়া আর জলের মধ্যে দোলা খাচ্ছে। তার নীচে দুটি খুব সরু সরু পা। অবাক লেগছে এই সরু পা দুটি কিভাবে উপরে উঠে অতটা কমর আর পাছাকে ধরে আছে। কিভাবে সে অতটা শরীরের ভাব বইছে। তার মুখে আর নাকের নীচে হালকা চুলের রেখা। সে কিন্তু বাস্তবে শুধু ঐ জামাটুকুই পরে আছে।   

 

অন্যদিকে মেয়েটি দেখছে কোনো পুরুষের মালিকানা হওয়ার আগে সত্যি এক ছেলের সাথে কিছুটা জীবন ভাগ করা যেতে পারে। যদিও সে জানে তার ভাগ্য তাকে যে কোনো বিছানায় শুতে বাধ্য করবে। যেখানে সে জামা খুলেও আসলে লজ্জাহীন হতে পারবে না। অজানা এক পর্দা থেকে যাবে তার আর প্রকৃত সুখের মাঝে। যদিও ভেজা জামার উপর দিয়ে এমন লাগছে যে, তার দেহের অবাঞ্ছিত চর্বি পেটের কাছে জমা হয়ে এসেছে। আর তার বুক দুটিকে নির্মম ভাবে ছোট দেখাচ্ছেকিন্তু তারা আসলে অতটা ছোটও নয়। যখন সে বাথরুমে আয়নার সামনে দাঁড়ায় দেখেছে, কই নাতো যত ছোট লাগে উপর থেকে বাস্তবে তারা যে কোনো ছেলের পক্ষেই যথেষ্ট। সামান্য হলেও তার কিছুটা অস্তিত্ব আছে। অথচ এখন উপর থেকে মনে হচ্ছে অসহায় ভাবে পরাজিত শ্রমিকের মুখের মতো নত হয়ে আছে তারা। কিভাবে সে ছেলেটিকে বোঝাবে। সে দেখছে ছেলেটির সঙ্কোচহীন দৃষ্টি তার চেতনার ভিতরে বসে থাকা লজ্জায় প্রায় মৃত দেহে, প্রাণ প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে একটু একটু। অথচ তার বুকের কাছে যেন আটকে আছে। নামতে পারছেনা। কিভাবে কিভাবে সে দেখাবে সে যা ভাবছে আসলে তা একেবারেই নয়। 

 

গল্পের আরও কাছে যাই

 

ছেলে আর মেয়ে এবার তাদের পরিপূর্ণ লাগছে, মেয়েটি কখন জানে না বসে পড়েছে ছাদের উপর। খুলে দিয়েছে যেটুকু বাঁধা ছিল। ছেলেটিও অদ্ভুত ভাবে তাকে নকল করেছে। কে খুলেছে? সে নাকি ও জানে না। এক পাশে পা করে যেভাবে মেয়েরা বসে সে ভাবে বসে আছে। ছেলেটি দাঁড়িয়ে আছে আর তার পৌরুষ বিনম্র সন্ন্যাসীর মতো সমর্পণ করছে নিজেকে। মেয়েটি এক হাতের অঞ্জলি করে হালকা ভাবে তুলে ধরেছে আর দেখছে তার কল্পনার অন্ধকারে বসে থাকা অমৃতের উৎস মুখ। যেন একটু একটু করে প্রাণ পাচ্ছে তারই ছোঁয়াতে। কি অদ্ভুত এই মাংসপিণ্ডটুকু। যে মাঝে থেকে ছেলে আর মেয়ের অস্তিত্বের মুল্য তৈরি করে। ছাদের জলে তার সানুদেশ নিমজ্জিত। ঠাণ্ডা আর গরম জলের স্রোতে ঘুর্নির জন্ম হচ্ছে সে বুঝতে পারছে। ব্যাখ্যাহীন এক দুঃখ তাকে ঘিরতে চাইছে কেন সে জানে না। হঠাৎ মনে হচ্ছে কত খালি তার বুক, কোনো মানুষের হাত নেই। ভয়ে আর আতঙ্কে কাঁটা হয়ে আছে কবে থেকে।  

 

ছেলেটি দেখছে নীরব এক চোখ কিভাবে সমর্পণ করছে নিজেকে। যার বুক যেন কয়েক হাজার বছরের অপেক্ষায় আছে কবে কেউ হাত রাখবে। ঠোঁট দুটো যে কথা বলতে চায় তা শোনার কেউ নেই। সে হাতে করে তার মুখ উপরের দিকে তুলে ধরে। তারপর কয়েক মূহুর্তের পজ, ছেলেটির সব কল্পনা এক অতলের মধ্যে হারিয়ে যায়। সে যেন তার ভাবনা চিন্তার সব কটি লেবেল থেকে অনেক দূরে চলে আসে। জেলের ভিতরে পায়ু মেহনের কিছুটা অভিজ্ঞতা তার আছে। সে ভাবছে,

 

আমি ভাবতেই পারিনি এত খানি আগুনও থাকতে পারে কোথাও। যেখানে আমার গা জ্বলে যাবে, পুড়ে যাবে প্রতিবার ওঠা নামার সাথে। এত দিন পরে মনে হবে আমি হয়তো ভুল করেছিলাম ঐ লোকটাকে ছুরি মেরে। সে আর তার সাথী এতটাও ভুল ছিল না।  

 

অথচ অন্যদিকে মেয়েটি! সে কি পাচ্ছে সেটাও তো দেখতে হবে। সে মেয়ে দেখছে তার দেহ অস্বাভাবিক রকমের হালকা। যা সে তার কল্পনাতেও আনতে পারেনি কোনোদিন। এও কি সম্ভব কিভাবে সে এতটাই হালকা হয়ে গেছে? তাহলে কি মানুষ প্রতিবার প্রতিবার নিজেকে হালকা করার জন্যই এই কাজটা করতে থাকে? তার গায়ের অতিরিক্ত মাংস বা চর্বি তাকে মুক্তি দিয়ে চলে গেছে অন্য কোথাও।

 

এখন যা কিছু বাস্তব

 

কয়েক মিনিট মাত্র দুটি মানুষের ভিতরে বসে থাকা কল্পিত সুখ থেকে আমরা তাদের টেনে বার করে আনবো। এবার আমরা গল্পের থেকে বেরিয়ে আসবো। পাশে সরে দাঁড়িয়ে দেখবো ওরা কি চাইছে নিজেদের কাছে আর ছেলেটি হঠাৎ গলায় ফাঁসের মতো এত ব্যথা পাচ্ছে কেন।  

 

একটি হিংস্র জন্তু দাঁত মুখ খিঁচিয়ে উঠেছে। পিছন থেকে সে তার কোমরের বেল্ট দিয়ে সামনের ছেলেটির গলায় ফাঁসের মতো জড়িয়ে টেনে ধরে আছে। যার গলায় ফাঁস সেই ছেলেটি হঠাৎ স্বর্গ থেকে পড়ে যেতে যেতে দেখছে মেয়েটি যে হাত দিয়ে তাকে জড়িয়ে ছিল এতক্ষণ, এখন সে হাত দিয়েই নিজের বুক দুটিকে এভাবে লুকাচ্ছে যেন এ পৃথিবীর সমস্ত ভয় তার দেহের উপর নেমে এসেছে। সে শুধু বাঁচার তাগিদে সেই ভয় অতিক্রম করছেসামনের ছেলেটি পেছনের ছেলেটিকে কিন্তু দেখতে পাচ্ছে না। মেয়েটি দেখছে তার ভাই তাকে রক্ষা করার গৌরবে দাঁতে মুখ খিঁচিয়ে ধরে আছে বেল্টআর সে একটু একটু করে তার লজ্জা সমেত ডুবে যাচ্ছেবৃষ্টির ফোঁটা এতদিনে তার কল্পনা থেকে নেমে এসেছে, তার ঠাণ্ডা লাগছে। বৃষ্টিতে ভেজার ভয় করছে। কিন্তু তাকে তো বাঁচতে হবে। আর সে এই ছেলেটিকে চেনেই না।    

 

ছেলেটি ভাবছে সত্যি মাকে তো বলাই হল না, সে জেল থেকে ছাড়া পেয়েছিল। সে খুব ভালো হয়ে গেছিল যদিও সে খারাপ ছেলে ছিল না কোনো দিনসে মেয়েদেরকে বিশ্বাস করতে শুরু করেছিল। ভেবে ছিল অনেক কিছু যা সবাই ভাবে। যা আজকে এই মেয়েটা খুব খারাপ ভাবে ভেঙে দিচ্ছে। পিছন থেকে কেউ একজন তার নিঃশ্বাস আটকে রেখেছে। আর মেয়েটি দল বদলাচ্ছে, সায় দিচ্ছে তাকে শেষ করার।

 

মেয়েটির অবশ্য একটা অবলম্বন দরকার আছে তাই সে স্বার্থপর হতে বাধ্য। অথচ সে যে দেখেছে তার দেহ তার জন্মের পরে সব থেকে বেশি হালকা হয়ে গেছে। যা সে কোনদিন কল্পনাও করতে পারেনি। যা তার নীরস লেখা পড়া বা বান্ধবীদের সাথে গল্প বা না দেখা স্বপ্ন দেখাচ্ছে। সে উঠে পড়েছে সেই ছেলের দেহের নিচ থেকে। তাকে যেন উঠে পড়তে কেউ বাধ্য করেছে। সে যেন নিজের মধ্যে নেই। সে ভেসে যাচ্ছে বাতাসে। ভাসতে ভাসতে ছাদের কিনারে চলে এসেছে। তারপর প্যারাপিঠের উপর থেকে উড়ে গেছে যেদিকে তার ইচ্ছে বয়ে যাচ্ছে।

 

অথচ ছেলেটি দেখছে, গাছের মতো একটি মেয়ে যে কিছুক্ষণ আগেই দল বদল করেছে। তার তল থেকে উঠে এই মাত্র ঝাঁপ দিল। তারপর আবার একটা পজ। গতানুগতিক ছুটোছুটি। এই সব ঝামের মাঝে তাকে ভুলে গেছে সবাই

 

এখন যে বাস্তব পৃথিবী সবাই চায় তার আসল রূপ    

 

কিছুদিন পরেই দেখা গেল মেয়েটি এক অদ্ভুত মানসিক দোলাচালে ভুগছে। সে সর্বদাই ভাবে এক কাল্পনিক দোলনায় দুলছে সে। যেখানে পিছনে তার স্বামী তাকে জোরে জোরে ঠেলে দিচ্ছে আর সামনে তার সেই প্রেমিক পুরুষ। যার কাছে যাচ্ছে অথচ তাকে ছুঁতে পারছে না। ছেলেটি তাকে অবশ্য প্রতিবারই হালকা একটি চুমু দিচ্ছে ঠোঁটে, গালে, বুকে, পেটে বা তার ইচ্ছে মত যে কোনো জায়গায়যা মনে হচ্ছে তার সান্তনা পুরষ্কার। স্বামী তাকে কতটা ভালবাসে বা চায় তা নিয়ে সে যথেষ্ট সন্ধিয়ান। কখনও মনে হয় তাকে ঠেলে তার স্বামী কিছুটা সময় মুক্তির আনন্দ পায়, আবার কখনও মনে হয় সে তার ফেরার অপেক্ষা করে। অথচ তার এই অপেক্ষা কতটা আকাঙ্ক্ষিত তা বোঝা যায় না। সে যখন সামনের দিকে দুলে এগিয়ে যায় তখন স্বামীর প্রতি সন্ধিয়ান আবার প্রেমিকের প্রতি অভিমানী। আবার যখন পিছনে ফিরে আসছে তখন দ্যাখে তার এই কাল্পনিক দোলনা তার প্রমিকের বুক আর স্বামীর লিঙ্গের মাঝে যেন এক সংযোগ তৈরি করছে। প্রেমিকের লিঙ্গটিকে সে হাতে করে দেখেছিল যদিও তার সঞ্চরণের অনুভূতি সে পায়নি এখন স্বামীর বৈশিষ্টের সাথে তার অমিলগুলি তাকে সপ্তম স্বর্গ থেকে মাটির দিকে নামিয়ে আনছে।   

 

না বলা যে কথা সব গল্পেই থাকে

   

চলমান জীবনের অচলমান গল্প। না এভাবে নাও হতে পারে। মেয়েটি বাস্তবে স্বপ্ন দেখছিল। প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে আধভেজা চোখে এক স্বপ্ন। চরম বিষাদের মাঝে স্বামীর পাশে ঘুমের মধ্যে প্রাণহীন সঙ্গমের পরে স্বপ্ন মায়ের কাছে না বলার পরেও বাবা বা ভাইয়ের কথায় মাকে দাবিয়ে দেওয়ার পরে স্বপ্ন। এমনই একটি বৃষ্টির মঝে যেখানে কোনও একটা ছেলে, যে মায়ের মর্যাদার জন্য ছুরি মারতে পারে। কিশোর অবস্থায় জেলে যেতে পারে। সে রকম এক দূর্বার চরম ছেলের সাথে সঙ্গমের স্বপ্ন। ভুল বললাম আসলে প্রতিবার স্বামীর সাথে সঙ্গমে সে ওই ছেলেটিকেই দেখে, যে ছেলের বুকে জড়িয়ে পিষে দেবার ক্ষমতা আছে।

 

কেননা ছাদ থেকে পড়ে, মাথায় চোট লেগে কয়েকদিন হসপিটালে অজ্ঞান ছিল সে। তারপর যখন ফিরে আসে তখন তার বাস্তব আর কল্পনা মিলে মিশে এক হয়ে গিয়েছে।

 ------------------------------------------------

 

সুকান্ত দেবনাথ,

সি ২/১৪ বিদ্যাসাগর পল্লী,

দুর্গাপুর ১৩,

৯০৬৪২০০২৬৯

santu.dgp81@gmail.com

 

 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.