Click the image to explore all Offers

গল্প ।। মননে ।। ঊষা দত্ত


ছবিঋণ- ইন্টারনেট


মননে 

ঊষা দত্ত


প্রচন্ড ঝড় হচ্ছে। জানি না কে কোথায় আছে। ফিরেছে কি টুকটুক স্কুল থেকে?

মেয়েটা যা বোকা। একটুতেই ভয় ভীষণ পায়। তপুটা এখনো দোকানে। এখন তার বাড়ি যাওয়ার সময়। গোয়ার্তুমি করে ভীষণ। পারলে ঝড়ের মুখে মোটরসাইকেলে স্টার্ট দিচ্ছে।ফোন দিয়ে কিছু বলারচে না বলাই ভাল।ফোন ধরতে গিয়ে একরাশ বিরক্ত ঝাড়বে।

 এইমাত্র একটা বাজ পড়ল।পথে পথে কত মানুষ। ঈশ্বর করেন কারো বিপদ না হয়।  এ সময়টা খুব ভয় করে আমার। মুহুর্মুহু বাজ পড়া ভয়ানক লাগে যদিও আমি ঘরের ভিতর দাঁড়িয়ে থাকি।


অথচ যারা ক্ষেতে খামারে কাজ করছে,যাদের ঘর নেই তাদের?কারোর বা নড়বড়ে ঘর ওদের কি অবস্থা হবে?এসব ভেবে বেশ মন খারাপ হয়। মাঝে মাঝে মন বলে আমার যদি অনেক অনেক টাকা পয়সা থাকতো তাহলে যারা কুড়ে ঘরে থাকে  যাদের ঘর নেই ওদের সবার জন্য বেশ কয়েকটা বহুতল বিশিষ্ট  বিল্ডিং মজবুত করে বানিয়ে দিতাম। 

অথবা যদি প্রধান মন্ত্রী বা প্রেসিডেন্ট হতাম সরকারী ভাবে মানুষগুলোকে স্থায়ী ভাবে স্বস্তির একটু  ব্যবস্থা করে দিতাম। ফুটপাত রেলস্টেশন অদুরের বস্তিগুলো তুলে  নিয়ে যেতাম অট্টালিকায়।

মাটির যেমন চেয়ে থাকা আকাশের দিকে।আর আকাশ মাটির দিকে। সহস্র যোজন দুর থেকে একে অপরের প্রকাশোন্মুখ ভাব প্রকাশের ইচ্ছার আকুলতা করে তেমনি এটা আমার ভাবের বিলাসিতাই বটে।


যদি আসলেই থাকতো তখন হয়ত এই মনটাই থাকতো না।


তা না হলে বৃষ্টিঝরা ভরদুপুরে লাইটপোষ্টের গায়ে সেটে থাকা সাত আট বছরের ভয় বিহ্বল শীতার্ত ছেলেটি  উঠে আসতে পারতো নিদেনপক্ষে প্রেমসিক্ত সেই ত্রিযান বাহনটির পা দানিতে। নেয় নি।


করুনার সাঁচ বৃষ্টি ঢেলে চলে গেছে। ফিরে তাকায় নি। ভাবেনি একবারও ওখানে ছেলেটি নিরাপদ নয়।

জনমানবহীন ছাউনি বিহীন লাইটপোষ্টে জড়িয়ে থাকা ছেলেটি আজও কি সেভাবেই দাঁড়িয়ে আছে? হয়ত সে নয়। আজ হয়ত সে অন্য কেউ। 


যাকে এড়িয়ে চলে গিয়েছিল  আনন্দময় ত্রিজানটির যাত্রীরা তন্নতন্ন করে খুঁজলেও ওকে আর খুঁজে পাবে কি? 


মুহুর্মুহু বজ্রপাতে কেঁপে ওঠছে মাটি।




Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.