গুরু যখন ইউটিউব
ঐশ্বর্য্য কর্মকার
কল্যাণীর জীবনে প্রথম রান্নাঘরে ঢোকা ইউটিউব-এর দৌলতে। আসলে লকডাউনে কল্যাণীর সব বন্ধুরা প্রায় প্রতিদিন নিজের তৈরী খাবারের ছবি দিচ্ছিলো। কল্যাণীও তাই গড্ডালিকা প্রবাহে ভেসে গিয়ে নিজের পুড়ে যাওয়া ম্যাংগো কেকের ছবি দিয়েছে একটু ফিল্টার করে।
কল্যাণী এক নন। অনেক মানুষই এই সময়ে ইউটিউব দেখে হরেক রকম রান্না করেছে। আমার নিজের পরিচিত শিলা কাকিমা নিজের রান্নার চ্যানেল খুলে ফেলেছেন এই সময়ে। অনেকে নতুন নতুন খাবারের পেজ , ব্লগও তৈরী করেছেন।
অস্বীকার করার জায়গা নেই ঘরবন্দি অবস্থায় নতুন কিছু করার রসদ জুগিয়েছে ইউটিউব। গত দেড় বছরে রান্না ও খাবারের চ্যানেল বা ফেসবুক পেজের যে বাড়বাড়ন্ত হয়েছে তার হদিস মেলে বিভিন্ন খাবারের পেজের বা চ্যানেলের লিংক দেখলেই। খাবার সংক্রান্ত এক - একটি ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বেড়েছে লক্ষ - লক্ষ।
আসলে গৃহবন্দী অবস্থায় আমরা দেখেছি অনেক মানুষ গাছ লাগাচ্ছেন তাদের ছাদে ,কেউ পুষছেন মাছ , পাখি , কুকুর , বিড়াল। ঠিক একই ভাবে নিজের একঘেয়েমিতা কাটাতে অনেকে মন দিয়েছেন দেশি - বিদেশী রান্নায়।
নানা অচেনা রান্নার এই নতুন শখের কারণে পাড়ার মুদিখানা দোকানে এমন - এমন সব উপকরণের খোঁজ পড়ছে- যার ব্যবহার বা বিক্রি কোনোটাই আগে ছিল না। যেমন ধরুন , মেয়নিজ , চিলি ফ্লেক্স , বিভিন্ন ধরণের হার্বস যা মফস্সলের মুদিখানার দোকানে পাওয়া যেত না , কিন্তু এখন এই গুলোর চাহিদার কারণে দোকানে মজুত রাখতে হচ্ছে। প্রয়োজনীয় কোনো উপকরণ যদি দোকানে না মেলে তাহলে অর্ডার দেওয়া হচ্ছে অনলাইনে। যে সব বিক্রেতারা পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে শাক - সবজি বিক্রি করছেন , তাদের সাথে রাখতে হচ্ছে রঙিন বেলপেপার থেকে মাশরুম, লেটুস পাতা।
আসলে সময়ের সাথে মানিয়ে চলতে হচ্ছে আমাদের কিংবা বলা ভালো মানিয়ে নিতে হচ্ছে। পিছিয়ে পড়ার ভয়ে পাড়ার দোকানেও রাখতে হচ্ছে বিদেশী সব উপকরণ। ইউটিউব দেখে শুধু রান্না নয় , যে কোনো কিছু শেখা যাচ্ছে। মাংসের ঝোল বানানোর পদ্ধতি থেকে উপকরণ কথা থেকে পাওয়া যাবে - সবারই হদিশ দেবে " গুরু " ইউটিউব।
ছবিঋণ- ইন্টারনেট ।
-------------------
ঐশ্বর্য্য কর্মকার
রানাঘাট
নদীয়া