Click the image to explore all Offers

গল্প।। শান্তি ।। চন্দন মিত্র





মধ্য হেমন্তের কুয়াশা ভেদ করে যাত্রীবিহীন ৮৯    ছুটে চলেছে জুমাইনস্করের দিকে। ফ্রাস্ট ট্রিপ। কন্ডাক্টর, হেলপার দুজনে বিড়িতে সুখটান দিতে দিতে গল্প করছিল। হঠাৎ ড্রাইভার বাস থামিয়ে দেয়। দশজনের একটি দল ওঠে, প্রত্যেকের মুখে রুমাল বাঁধা। হেলপার শিবুর কেমন যেন সন্দেহ হয়, এত ভোরে এতগুলো লোক একসঙ্গে কোথায় চলেছে ! মুখে রুমাল বেঁধে রেখেছে কেন? কন্ডাক্টর অভিজ্ঞ। সে তড়িঘড়ি করে ড্রাইভারের কাছ থেকে টিকিট ব্যাগ ও তার নিজের ব্যাগটি কাঁধে-পিঠে ঝুলিয়ে নেয়। কিছুক্ষণ পর সে দলের একজনকে বলে, ভাই ভাড়াটা করে নাও। ছেলেটি কেমন যেন খেঁকিয়ে ওঠে, এই দেখে বুঝতে পারছিস না ! গানে গেছিলাম হয়নি, মামা ঢুকেছে। মনমেজাজ ঠিক নেই, কানের ধারে বকবক করিস না। বলেই সে পকেট থেকে খইনির ডিবে বের করে পাকাতে থাকে। কন্ডাক্টর, বলে, দ্যাখ ভাই আমরা গানবাজনা বুঝি না । বাসে উঠেছিস ভাড়া দিবি ব্যাস ফুরিয়ে গেল। ছেলেটি বেশ বিরক্ত হয়। খইনিটা ঝেড়ে মুখে ঢুকিয়ে বলে, গান বুঝিস না, তাইতো ! বলেই সে বাম হাতে সিট ধরে দাঁড়িয়ে পড়ে। তারপর ডানহাতে কোমর থেকে কী একটা টেনে বের করে কন্ডাক্টরের পেটে চেপে ধরে বলে, এটা বুঝিস! কন্ডাক্টর  থতমত খেয়ে চেঁচিয়ে ওঠে, ও ড্রাইভারদা গাড়িটা একটু থামিয়ে দাও। ড্রাইভার ব্রেক কষে। গাড়ি থমকে যায়। কন্ডাক্টর বলে, জানে মারিস না ভাই, এই নে আমার যা আছে। দলের ছেলেরা মজা পায় । হো হো করে হেসে ওঠে তারা। এই ফাঁকে কন্ডাক্টর, ব্যাগ থেকে ঝটপট দুটো একই জিনিস বের করে একটা ছেলেটির পেটে ও  অন্যটি কপালে চেপে ধরে। ছেলেটি তো হতভম্ব ! দলের ছেলেদের মুখ বাংলার পাঁচের মতো চুপসে যায়। কন্ডাক্টর বলে, ছোটো কালুর নাম শুনেছিস ? ওসব গানবাজনা একসময় বহুত করেছি বুঝলি !ওসব ফালতু । শুধরে যা, খেটে খা শান্তি পাবি... 
 
                                                    ---------------------------- 


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.