Click the image to explore all Offers

অণুগল্প।। ঘড়ির প্রয়োজনীয়তা।। মিনাক্ষী মন্ডল


 



টাকা পয়সা অনেক থাকলেও তিনকূলে কেউ নেই তাই খবরের কাগজে খোঁজ পেয়ে অরুণ  যাচ্ছে মেয়ে দেখতে । অর্ধেক রাস্তায় যেতেই অ্যাম্বাসেডরটি গেল খারাপ হয়ে। গাড়িটি গ্যারেজে পাঠিয়ে রিক্সা করে বাস স্ট্যান্ড গেলো, অগত্যা এখন বাসে করেই যেতে হবে গন্তব্যস্থলে। সেই রুটের বাস কখন ছাড়বে তার অপেক্ষায় অরুণ, এদিকে মেয়ে দেখতে যাওয়ার জন্য একটা সময়ের ব্যাপার আছে। কটা বাজে বুঝতে পারছে না। 
পাশে  দাঁড়িয়ে থাকা এক ভদ্রলোককে জিজ্ঞেস করল- কটা বাজে ?
ভদ্রলোক বললেন- চারটা।
বাস ছাড়ার সময় হলে অরুণ বাসে উঠল, সাথে ওই ভদ্রলোকটিও উঠলো বাসে।
 অরুণ আবার  জিজ্ঞেস করল,-' কটা বাজে'? 
ভদ্রলোক বললেন , -'সুয়া চারটে'।
স্টপেজে এলে অরুণ নামলে, সাথে ভদ্রলোকটিও নামলেন।
আবার একবার অরুন জিজ্ঞেস করল,-'কটা বাজে'?
ভদ্রলোক অরুণের দিকে বিরক্তির চোখে তাকিয়ে  সেই উত্তর না দিয়ে বললেন,- 'আপনি কোথায় যাবেন'? 
অরুণ  বলল,-'কমল ভট্টাচার্যের বাড়ি'। 
ভদ্রলোক আবার জিজ্ঞেস করলেন- ' নাম কি' ?
অরুণ বলল, 'অরুণ গাঙ্গুলী'।
একটা বাড়িতে ঢোকার পর অরুণ বুঝতে পারল ভদ্রলোকটিও সেই বাড়িতেই আসছিলেন। এটা তার বোনের বাড়ি।
অরুণের মেয়ে দেখে খুব পছন্দ হলো এবং সে মহা আনন্দে বাড়ি ফিরে এলো কিন্তু ভদ্রলোকটির এ বিয়েতে আপত্তি । ওনার মতে," যে ছেলের কাছে সময়ের মূল্য এত বেশি তার ক্ষমতা থাকলে নিশ্চয়ই একটা ঘড়ি কিনে হাতে পড়ত । সে যে কতটা দরিদ্র এখানেই প্রমাণ, আমি আমার  মা মরা মেয়ের বিয়ে এত গরীব ঘরে দেব না"।
 ঘড়ি না পড়ার অভ্যাস থাকার জন্য যে এতটা মূল্য দিতে হতে পারে এটা অরুণ কখনো ভাবেনি। 
 
                                       ---------------------------
 
 

 
 
মিনাক্ষী মন্ডল
খামারপাড়া, রায়লেন
বাঁশবেড়িয়া, হুগলি
থানা- চুঁচুড়া


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.