তার আসল নাম থানার ওসিও জানেন না। আসলে জানতে চান না তাই জানেন না।ছোটোখাটো কানের দুল থেকে শুরু করে দামি হার, ল্যাপটপ যাই-ই চুরি যাক-না-কেন -- সোনাতলা থানা সঙ্গে সঙ্গেই কেস-ডায়েরি নিয়ে যাচাই করে নেয়, ঘটনাটা কতটা সত্যি ! তারপরই ট্যাবলেটের ডাক পড়ে। দেখতে লিকপিকে সিং হলে কী হবে, এলাকার ডন সে। লোকে চিনে ফেলার ভয়ে সে আগে গোঁফ-দাড়ি লাগিয়ে ঘুরে বড়াত। ইদানীং 'করোনা'-র দৌলতে চওড়া মুখোশে মুখ ঢেকে ঘোরে। চোর-ছ্যাঁচোড় দের সুবিধা বেড়ে গেছে এইসময়। অন্যান্য বিধি-নিষেধ শিথিল হলেও মাস্ক-স্যানিটাইজার রয়েই গেছে।
কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর থানা ফাঁকা হতেই মেজোবাবুর ঘরে ডাক পড়ল তার। হাত কচলাতে কচলাতে ঘরে ঢুকল ট্যাবলেট - " এমন অসময়ে কেন ডাক দিলেন স্যার ? নজরানা তো খামে ভরে দিয়েই গেছি !"
মেজোবাবুর জলদ্গম্ভীর কণ্ঠস্বর, "যা দিচ্ছিস সে তো বুঝতেই পারছি, ভাগে কুলোচ্ছে না। রেট তো বাড়াতেই হবে। তবে এখন একটা জরুরি কথা বলি শোন ! দিন তিনেক আগে তোর স্যাঙাৎরা ধামাইতলার নতুন রাস্তার মোড়ে যে নতুন ফ্ল্যাটগুলো হয়েছে তার তিন নম্বর ব্লকের সেকেণ্ড ফ্লোর থেকে যে ল্যাপটপটা বের করে এনেছে ওটা ধামাইতলা পুরসভার চেয়ারম্যানের ..."
কথার মাঝখানেই ট্যাবলেট বলে উঠল -- "না স্যার ! আমি চেয়ারম্যানের বাড়ির ধারেকাছেও কাউকে পাঠাই নি। উনি আপনাদের বন্ধুলোক , জানি তো স্যার !"
মেজোবাবু আবার বলতে শুরু করলেন, "লেট মি ফিনিশ মাই ওয়ার্ডস ! ওই ল্যাপটপ চেয়ারম্যানের ভাগ্নির ! ওটা দু-তিনদিনের মধ্যেই চাই , বলে রাখলাম !"
--- কিন্তু স্যার সে-মাল তো পাচার ...
--- ওসব জানতে চাই না। দরকার হলে এক হপ্তা টাইম নে কিন্তু ফেরৎ তোকে দিতেই হবে । মনে রাখবি, এটা সোনাতলা থানার প্রেস্টিজ ইস্যু !
-------------
পীযূষ কান্তি সরকার, ১/১, কুচিল ঘোষাল লেন, কদমতলা, হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত।