প্ল্যাস্টিকের ফুল
অজিত কুমার জানা
উঠতি রাজা সদ্য একুশ,শরীরে মরুর উষ্ণ আস্ফালন, আর মনে সমুদ্রের সাইক্লোন।
মাত্র কদিন হল,পাড়ার রাণীর সাথে বন্ধুত্বের গীট বেঁধেছে।দুজনে প্রায় সমবয়সী,ঐ দু,চার মাসের এদিক ওদিক হবে।সম্পর্কটা খুবই কাঁচা,তবুও দেখলে মনে হয়-হাজার বছর ধরে পথ হাঁটিতেছি !
রাজা খুবই আবেগ প্রাণ,ছিনে জোঁকের মত।নিজের সমস্ত কিছু জড়িয়ে ফেলেছে, রাণীর বন্ধুত্বের গাঁতিজালে।বাবা মায়ের শক্ত বাঁধন দুহাতে ছিঁড়ে কেটে নিজের স্বর্ণসিংহাসনে বসিয়েছে রাণীকে।
রাণী কিন্তু একটু অন্য রকম, বন্ধুত্বটাই তার কাছে বড় মূলধন।অন্য কিছু চিন্তার অনুভূতিগুলো অনাথ ও অসহায়। গোলাপের মত লাল টকটকে রূপ সবার চোখে ঢুকে গিয়ে ভিতরে বসে।রাজাও তার ব্যতিক্রম নয়।
সহসা একদিন রাজার বাড়ীর কাছে জনসমুদ্রের মিছিল। গলায় দড়ির খবরটা রাষ্ট্র হয়ে গেছে।রাজার বন্ধু-বান্ধব ছুটে এসেছে।হায়!হায়! শব্দটা মানুষের মুখে মুখে ধ্বনি ও প্রতিধ্বনিত হতে হতে ক্রমশই চকচক করছে।সন্ধান, অনুসন্ধান, রটনা, ঘটনা, সত্য-মিথ্যা সব ভেতরে ঘুরতে ঘুরতে মূল সত্যটা যখন বেরিয়ে আসে,তখন কারো কিছু করার থাকে না।
সবার মত রাজারও নীড় বাঁধবার স্বপ্ন ছিল।রাণী কিন্তু রাজাকে বারবার তার আসল সত্যটা বলেছে-সে আসলে মধুহীন মৌচাক, কোনকিছু দেওয়ার ক্ষমতা রাণীর নেই।ফুলদানিতে সাজানো ফুলের মতই রাণীর সৌন্দর্য। নারীর ভেতরের মূল অনুভূতিগুলো নীলাকাশের মতই ধূ ধূ শূন্য। পৃথিবীতে রাণীর মত এমন কিছু নারী আছে,যারা এরূপ ক্যাটাগরিতে পড়ে। জানি না ভগবান কেন এমন নির্ণয় !
রাজার আবেগী মনের মহাভূলের পরিনতি আত্মহত্যা।রাণীর শপথ সে কোনদিনও আর বন্ধুত্বের পথে হাঁটবে না। রাজার অস্বাভাবিক মৃত্যুতে পাগলী শব্দটা আজও রাণীর কাঁধে চড়ে বেড়ায়।
---------------------
অজিত কুমার জানা
গ্রাম +পোষ্ট-কোটরা, থানা-শ্যামপুর, জেলা-হাওড়া
পিন-৭১১৩০১,পশ্চিমবঙ্গ।
ফোন-৯৭৩২৫৭৮৪৩৮