Click the image to explore all Offers

মুক্তগদ্য ।। "বিবেক" ।। জুয়েল রুহানী



 ছবিঋণ- ইন্টারনেট 

 
 
মানব জীবনের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় হলো বিবেকহীন হয়ে যাওয়া। জীবন চলার দুর্গম পথে শত বাঁধা-বিপত্তি উপেক্ষা করতে হয়, বিনিময়ে সফলতার দর্শন মিলে। আমরা যে কোন কর্ম সম্পাদনের শুরুতেই নানান চিন্তার উদ্রেক ঘটাই আমাদের মনোজগতে। কল্পনার জগতে পা বাড়াই, ভাবতে থাকি কী হতে পারে কর্মফল? ইতিবাচক-নেতিবাচক উভয় চিন্তাই ঘুরপাক খায় স্মৃতিপটে। যখন সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে না পারি, তখন হয়তো কর্ম সম্পাদন করে যাই অতৃপ্তির স্রোতে গা ভাসিয়ে। এ ক্ষেতে যে সমস্যার সৃষ্টি হয় তা থেকে পরিত্রানের কোন উপায় থাকে না! যার ফলশ্রুতিতে বয়ে যাওয়া জীবন নদীর একূল-ওকূল উভয়ই হারাতে হয়! আর তাইতো সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়ার জন্য প্রয়োজন বিবেকের কাছে প্রশ্ন করা।

একজন ব্যাক্তি সাধু সেজে যতই বলুক সে মিথ্যা বলেনি তথাপি এ কথা বলার পূর্বে অন্তত দশবার বিবেক নাড়া দিয়েছে যে, "তুমি মিথ্যা বলছো"? এহেন পরিস্থিতে যদি বিবেকের উদয়ে সদয় হয়ে একবারও সাড়া দেয়া যেত তবে সফলতার মুখয়বয়ব দেখা যেত নিঃসন্দেহে।

বিবেকের ডাকে সাড়া দিয়ে যদি একবার চলা যায়, তবে জীবনের বাকীটা পথ সহজ-সরলই হয়। কেননা বিবেকের কাছে প্রশ্ন না করে যদি জীবনের পথে পা বাড়ানো যায় তবে সারা জীবন ঐ ভুলের মাশুল দেওয়ার জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনতে হয়! 

আমি কে? এ প্রশ্নের উত্তর আমিই জানি। অন্য কেউ নয়। জীবনে যতটা পথ পাড়ি দিয়েছি ততটা সময়ই সঙ্গ দিতে হয়েছে নিজেকে। তাই আমিই আমাকে চিনি। আমি ভালো কাজের ডাকে সাড়া দিয়েছি? না কি মন্দের দিকে ঝাঁপিয়ে পড়েছি? ন্যায়সঙ্গত কথা বলেছি? না কি অন্যায়ের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছি নিজেকে? সে তো আমিই জানি। 
উদাত্ত কন্ঠে সত্য বাণী ছড়িয়ে দিয়েছি? না কি মিথ্যার গ্লানি ভোগ করেছি? সে কথা কে জানে? আমি নিজেই। আমি যদি সমাজের মানুষের কাছে উচ্চস্বরে বলি আমি অন্যায় করিনি, অন্যায়ের পথে পা বাড়াইনি, সে ক্ষেত্রে বিবেকই স্বাক্ষী থাকবে স্বীয় কৃতকর্মের।

আমি যদি আমাকে না চিনি তবে অন্যের কাছে নিজেকে চেনার কোন উপায় নেই। অন্যের কাছে সুখী থাকলেও কখনও কখনও গুমড়ে উঠবে বুকের ভিতর অসহনীয় যন্ত্রনা। সে কথাই  বা কে জানে আমি ব্যতিত?  কেউ কি বলবে সে কথা? নিঃসন্দেহে না।
 
জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমাদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় পরীক্ষা স্বরূপ। তবে কি আমাদের উচিৎ নয়? ভাবনার উদয়ে সদয় হয়ে কঠিন পরিক্ষায় অংশগ্রহন করা? তবেই তো সফলতা নিশ্চিত। তাই কর্ম সম্পাদনের পূর্বে বিবেকের কাছে প্রশ্ন করে আত্মবিশ্বাসের সাথে দ্বিধাহীনচিত্ত্বে কর্ম সম্পন্নের নিমিত্তে কর্ম শুরু কর, তবে কর্মের সুমিষ্ট ফল ভোগ করতে পারবে। কর্ম সম্পাদনের পূর্বে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মতামত পরিলক্ষিত হতে পারে সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে আশ্রয় গ্রহন করতে হবে বিবেকের নীড়ে। তবেই সন্দেহের অবকাশ থাকবে না এতটুকু।

আমরা যদি আমাদের বিবেককে জাগ্রত করি, বিবেকের কাছে প্রশ্ন করি, জীবন চলার পথের সঠিক দিক নির্দেশনা খুঁজি বিবেকের কাছে, তবে জুলুমের যাঁতাকলে পিষ্টতার হাত থেকে মুক্তি মিলবে, যুক্তি প্রদর্শনের কোন উপায় থাকবে না বিবেকহীনার ন্যায়। আর তাই যদি বিবেক যে কোন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারে তবে কি উচিৎ বলে গণ্য হবে না বিবেকের দ্বারে দ্বারে ঘুরে আশ্রয় প্রার্থনা করা?
----------------------------------

পরিচয়ঃ 
নামঃ জুয়েল রুহানী।
কালীগঞ্জ, লালমনিরহাট, বাংলাদেশ।


Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.