--- আর একটু পায়েস দিই দাদাভাই। তোমার জন্যে তো ভোরে উঠে এত সুন্দর করে রেঁধেছি -- তুমি না-খেলে কী ভালো লাগে, বলো !
" রিয়েলি ডেলিসিয়াস ! কিসমিস-কাজু কত কী মিক্স করেছো বাট অলরেডি টেকেন ফোর টেবল স্পুন ! রাতে আবার পার্টি আছে না !" বলেই ফেলল রুবির নাতি সংলাপ।
এবার রুবি ঘুরে তাকালেন তাঁর একমাত্র পুত্র শৌভিকের দিকে। বললেন, " হ্যাঁরে শুভ এতদিন পরে মাত্র এই একবেলার জন্যে এলি বাবা ! কতদিন তোর পথ চেয়ে বসে থাকি ! রাতটাও থাকবি না !"
একটু থেমে আবার বলে ওঠেন, " কালরাতে যখন বললি -- আজ দাদাভাইয়ের জন্মদিনে তোরা আসছিস -- বিশ্বাস কর আনন্দে আত্মহারা হয়ে গিয়েছিলাম বাবা ! আজ রাতে কী না-গেলেই নয় !"
"কেন যে তুমি এমন অন্যায় আবদার করো মা !" বিরক্তি ঝরে পড়ে শৌভিকের ঠোঁটে, " জানো তো সংকল্পের ক্লাস-মেটরা আসবে, ওর মা মানে রিমি-র বন্ধুরাও আসবে ...।"
কথার মাঝখানে রিমি বলে ওঠে, " আরে নিজের অফিস-কলিগদের বাদ দিচ্ছ কেন !"
"...ও হ্যাঁ তারা তো আসেই" নিজেকে শুধরে নিয়ে শৌভিক বলে ওঠে, " ক্যাণ্ডেল-লাইট ডিনারের অ্যারেঞ্জমেণ্ট করে তবে আসতে পেরেছি আর তুমি এমন অন্যায় বায়না করো না
...!"
সংলাপ এবার বলে ওঠে, " ও আম্মা, ইমাজিন করো তো পাপা-র স্যালারি কত ?"
চৌখমুছে রুবি বলে ওঠেন, " জানি না তো দাদাভাই ! তবে তুমি যখন পৃথিবীতে এলে বারো বছর আগে তখনই তোমার পাপা-র স্যালারি ছিল বিশহাজার টাকা ! আমিই সব গুছিয়ে রাখতাম যে !"
-- নাউ ইউ ইমাজিন সিক্স টাইমস মোর !
কপট বিস্ময়ের সুরে রুবি বলে ওঠেন, "বলো কি দাদাভাই, তোমার পাপার স্যালারি একলাখ বিশ হাজার !"
এবার প্রতিবাদের ঝড় ওঠে রিমি-র ঠোঁটে, " নো সংলাপ, ডোন্ট টেল এ লাই ! " তারপর রুবি-র দিকে চেয়ে বলে ওঠে, " ও খুব বাড়িয়ে বলতে শিখেছে, জানেন তো ! ওর পাপা-র লাখের ওপর স্যালারি হলে আমাদের এই দশা হয় ! লোন শোধ করতেই তো অর্ধেক বেরিয়ে যায় !"
===============
পীযূষ কান্তি সরকার
ব্যাঁটরা, কদমতলা, হাওড়া, পশ্চিমবঙ্গ