Click the image to explore all Offers

ভ্রমণ কাহিনি ।। অরুণাচলের পথে ।। সান্ত্বনা ব্যানার্জী

            



অরুণাচলের পথে

সান্ত্বনা ব্যানার্জী

 

   কথিত আছে অরুণাচল ভারতের সুইজার ল্যান্ড। আবার কারও মতে পূর্ব ভারতের কাশ্মীর। আমি এসব তুলনায় বিশেষ আগ্রহী নই। বাইরে যাওয়ার আনন্দ আর প্রকৃতিকে দুচোখ ভরে দেখা, আর পথে যেতে যেতে মনের কোণে সঞ্চিত করা নানা অভিজ্ঞতার মনিমানিক্য,এটাই আমার ঐকান্তিক চাওয়া। 

      দুই ঘণ্টা বিলম্বে আসা সরাইঘাট এক্সপ্রেসে  সন্ধ্যে ছয়টায় ওঠা হলো সদলবলে, গ্রামেরই একটি ছেলের টুর কোম্পানির তত্বাবোধানে। তাই গ্রামেরই আমাদের বন্ধুস্থানীয় দুটি পরিবারকে পেয়েছি ভ্রমণসঙ্গী হিসেবে, যা সারা যত্রাপথকে বাড়তি আনন্দ আর নির্ভরতায় ভরিয়ে দিয়েছে।

         পরদিন প্রায় বেলা একটায় পৌঁছলাম গৌহাটি এবং গাড়ীতে করে হোটেল সান ভিউ। ঘরটায় ঢুকেই মন ভরে গেলো!চারতলায় বিশাল কাচ ঘেরা ব্যালকনির পর্দা সরাতেই নীল্ পাহাড়ের কোলে গোটা শহরটাই ছবির মত ভেসে উঠলো! কিন্তু সময় নেই, তাড়াতাড়ি চান করে তৈরী হয়ে নীচে গিয়ে খেয়ে নিতে হলো আর বেরিয়ে পড়া হলো কামাখ্যা মায়ের মন্দির দর্শন করতে। এখানেও দক্ষিণ ভারতের তিরুপতি মন্দিরের মতোই ব্যাবস্থাপনা। বিরাট লাইন। আমার গঙ্গাস্নান করা নেই, তাই পুজো দেওয়ার দায়িত্ব কন্যাসম বীথিই নিয়ে নিলো। অগত্যা আমরা যুগলে চারদিক ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলাম, আর কীভাবে যেন প্রহরী বিহীন বেরোনোর পথ দিয়ে ঢুকে গিয়ে একেবারে মায়ের মন্দিরের সামনে পৌঁছে গেলাম এবং মায়ের মূর্তি ও পুজো দর্শন করলাম নির্বিঘ্নে!

তবে গর্ভ গৃহে যাওয়া হলোনা, সে কাজ দলের অন্যান্য রা করলে প্রায় তিন ঘণ্টা লাইন দিয়ে। আর সেই সময়ে আমরা দেখে নিলাম বিবেকানন্দ স্মারক স্তম্ভ, মায়ের নামে দাতব্য হসপিটাল, আর মন্দিরের ও পাহাড়ের ছবি

তুললাম প্রাণ ভরে। এরপর যাওয়া হলো সাদা মার্বেল পাথরে খোদাই করা বালাজী মূর্তি প্রতিষ্ঠিত অপূর্ব কারুকার্য মন্ডিত বিড়লা মন্দির। স্তাপত্য হিসাবে যা সত্যি দৃষ্টিনন্দন। এখানের নিয়ম শৃঙ্খলা যথেষ্ট প্রসংশনীয়।

  পরদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠেই ব্যালকনি থেকে দেখলাম পাহাড়ের কোলে অপূর্ব সূর্যোদয়!তাকে প্রণাম জানিয়ে , তৈরী হয়ে সাতটায় আবার যাত্রা শুরু। গন্তব্য ভালুকপং। সাদা রঙের মিডি বাসে আমাদের গ্রাম থেকে আসা তিনটি পরিবার উঠেছি,আর দানকুনি থেকে আসা প্রাক্তন শিক্ষিকা রমাদি ও ওনার স্বামী। বাকিরা আরও দুটোবাসে।চলেছি ভালো ভালো গান শুনতে শুনতে, বিশেষ করে অসমীয়া গান।বাসের জানলা দিয়ে চোখ মেলে দিয়েছি,চলেছি প্রাকৃতিক শোভা দেখতে দেখতে। কিন্তু ছন্দ পতন! যে সমস্যা আমার নিত্যসঙ্গী, সেই পৈটিক তার আগমন বার্তা ঘোষনা করেছে! অতএব আমাদের পুত্রসম বন্ধু পুত্র অনুর কানে কানে সেই বার্তা পৌঁছে দিতে হলো। আর অনু

যথারীতি পরিত্রাতা হয়ে বাস ড্রাইভারকে পেট্রল পাম্প দেখে দাঁড় করিয়ে টয়লেটে নিয়ে গেলো। গোপাল ভাঁড় রাজাকে পুত্রলাভের আনন্দের যে সঠিক উপমা দিয়েছিলেন তা মর্মে মর্মে উপলব্ধি করলাম। এই যাত্রাপথে অনু যেভাবে আমায়  রক্ষা করেছে সে কথাটি না বললে এই ভ্রমণ কাহিনীটি অপূর্ণ থেকে যেত।ওর কাছে আমি

চির কৃতজ্ঞ। যাই হোক ,সাড়ে তিনটে নাগাদ পৌঁছে গেলাম ভালুকপং। হোটেলে জিনিসপত্র রেখে একটু ফ্রেশ হয়ে যাওয়া হলো টি পি অর্কিড গার্ডেন।খুব বড়ো এলাকা, কিন্তু তুলনায় অর্কিড কম। মন ভরিয়ে দিল পরবর্তী স্পট_কামেং নদী!ব্রহ্মপুত্র নদের উপনদী,পাহাড়ের কোলে কোলে বয়ে চলেছে অজস্র ছোটো বড়ো নুড়ি পাথর বুকে নিয়ে। এখানেই দেখলাম সূর্যাস্ত!লাল হলুদ রঙের প্রতিফলনে সে এক স্বর্গীয় দৃশ্য! অস্তগামী সূর্যকে আবার প্রণাম জানলাম আগামী দিনে আবার উদিত হওয়ার প্রার্থনা জানিয়ে। হোটেলে ফিরে গরম গরম চপ মুড়ি আর চা, সঙ্গে পুরো দলটির সঙ্গে আলাপ ও আড্ডা। 

  পরদিন দিরাং। এই পথটি দীর্ঘ ও মনোরম। যতো ওপরে উঠছি ততই দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তর ঘটছে!গোলাপী পাতায় ভরা কিছু বৃক্ষ জাতীয় গাছ, সাদা আর বেগুণী ফুলে ভরা গাছ। তারপরই অতি উজ্জ্বল সবুজ সরু সরু পাতায় ভরা পাইন গাছের সারি।পাহাড়ের ঢালে ঢালে ছবির মত সাজানো মিলিটারি ক্যাম্প। একটি মন্দির দেখে দাঁড়ানো হলো। শিব দুর্গার মন্দির। তারপর একটা বাঁক ঘুরতেই অপূর্ব দৃশ্য। সেই কামেং নদী , কিন্তু একেবারে অন্য রূপে! সাদা ফেনায় মাখামাখি হয়ে পাথর গুলোর সঙ্গে যেন উদ্দাম নৃত্য করছে! অপর পারে ঘন জঙ্গল। একটা ঝুলন্ত ব্রীজ দু দিক কে জুড়ে দিয়েছে। এখানে বাস থামিয়ে আমরাও আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলাম। সকলেই ছবি তুলতে লাগলো। যে দিকেই চাই ঈশ্বর যেন নিজের হাতে রঙ তুলি দিয়ে এঁকে রেখেছেন মনোলোভা সব ছবি!দুচোখ ভরে দেখতে দেখতে হোটেলে পৌঁছে গেলাম। টুর কোম্পানির ম্যানেজার,আমাদের ভ্রাতৃপ্রতিম সঞ্জিত আমায় একান্তে ডেকে নিয়ে একটা ঘরের চাবি খুলে আমাদের ঢুকিয়ে দিয়ে বললে,"এই ঘরটা তোমার জন্য ভেবে রেখেছি বৌদি, কবি মানুষ তো, তাই।"বলে ব্যালকনি দরজাটা খুলে দিলে। চোখের সামনে যেন সিনেমা দেখছি! দুদিকে বিশাল বিশাল গিরিখাত রচনা করে একটার গায়ে আর একটা পাহাড়ের ঢাল, আর মাঝখান দিয়ে পাথরের ওপর দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে চলেছে মিও নদী(আসলে সেই কামেং), দুধারে ছবির মত সুন্দর নানা রঙের বাড়ী, ছোটো ছোটো উঠোন আর তাতে রংবেরংয়ের ফুল। দেখে যেন আশ মেটেনা। ব্যাগ পত্র রেখে ফ্রেশ হয়ে বেরিয়ে আর এক চমক! পাহাড়ের ঢালে ঢালে গাছগুলোতে কারা যেন কমলা রঙের টুনি বালব জ্বালিয়ে সাজিয়ে দিয়েছে! কমলালেবু! কমলালেবু! চোখ মন সব

ভরে গেলো। বীথি তো ছবি তোলার ফাঁকে ফাঁকে

লেবু তুলে জ্যাকেটের পকেট এত ভারী করে ফেলেছে যে আর ঢাল বেয়ে উঠতেই পারছে না।

ওর অবস্থা দেখে সবাই হেসে অস্থির। এর পর

অন্ধকার হয়ে আসতেই সকলে হোটেলে ফিরে

এলাম।খাওয়া দাওয়ার পর ঘুমনোর আগে পর্যন্ত

ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে রাতের জোনাকী ভরা দীরাং কে দেখলাম দুচোখ ভরে। পরদিন গন্তব্য

তাওয়াং।

            এ পথও অপরূপ সৌন্দর্য আর বৈচিত্র্যে

ভরা। যতো ওপরে উঠছি ততই রূপোর মত ঝকঝকে পাহাড় চূড়া যেন আমাদের অভ্যর্থনা

জানাচ্ছে।তার ওপরে নীল সাদায় ঢেউ তোলা

আকাশ!মাঝে মাঝেই পাহাড়ের ঢালে সুন্দর করে সাজানো মিলিটারি ক্যাম্প।এরপর যতই

ওপর উঠছি ততই বরফ। রাস্তার দুধারে ,গাছের

পাতায়, বাড়ির ছাদে  বরফ দৃশ্যমান হচ্ছে। কোথাও ঝালোরের মত বরফের চাদর ঝুলে আছে। যতো ওপরে উঠছি ততই সাদা বরফের

পাহাড় যেন ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে। ইতস্তত চমরী

গাই চড়ে বেড়াচ্ছে। অবশেষে পৌঁছে গেলাম 

সেলাং পাস। পাহাড় ঘেরা বিশাল এক উপত্যকা,

গরমকালে এটা টলটলে জলের লেক হয়ে যায়।

বাস থামতেই সব দুদ্দার করে নেমে পড়লো।তারপর বাচ্চা বুড়ো গড়াগড়ি করে বরফ নিয়ে

মাতামাতি করতে লাগলো। আমার কর্তার বন্ধু

পত্নী মঞ্জুদি (একটু মোটাসোটা, হৃষ্টপুষ্ট)বরফের

ওপর দিয়ে এমন ভাবে হাঁটছে যেন অ্যান্টার্কটিকার পেঙ্গুইন। তার নাতি মোহর তো

ক্রমাগত ডিগবাজী খেয়ে যাচ্ছে।তবে আমার 

একটু হাঁফ লাগছিল,অনেক উঁচু হওয়ায় অক্সিজেন তো কম। এর পর বরফের দেশ দেখতে দেখতে চললাম। পথে যশবন্ত সিং স্মৃতি সৌধ দেখার জন্য নামা হলো যিনি 1962 সালে

চীনের সঙ্গে যুদ্ধে বীরের মত লড়াই করে শহীদ

হন। এই গুলো দেখলেই মন বড়ো খারাপ হয়ে

যায়। কেন যে আজও যুদ্ধ হয়, কাদের জন্য হয়!

এত প্রাণহানি হয় জানিনা। এই সাংঘাতিক ঠান্ডায় দিনের পর দিন থাকাটাই তো যুদ্ধ!সব

দেশের সৈনিকই তো সাধারণ মানুষ!যায় হোক

বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ হোটেল তাওয়াং 

রিজেন্সি তে পৌঁছলাম।খুব সুন্দর হোটেল। কিন্তু

ঠান্ডায় একেবারে কাবু হয়ে যাচ্ছি। গরম চা আর

পকোড়া খেয়ে একটু ধাতস্থ হলাম।রাতের খাওয়া সেরে বিছানায় উঠে সাংঘাতিক অবস্থা!

ডবল মোজা, সোয়েটার,চাদর, তিনটে কম্বল নিয়েও শীত যায় না। মুশকিল আসান করলে

আমাদের আর এক সঙ্গী দম্পতি জগদীশ ও ঝর্না। বেশ কয়েকটা বড়ো বড়ো খালি জলের

বোতলে গিজার এর গরমজল ভরে বিছানায় দিয়ে দিলে ,তবে ঘুমোতে পারলাম। প্রসঙ্গত

বলে রাখি এর সারা পথই আমাদের এটা ওটা

কিনে কিনে খাইয়েছে।আর ঝর্ণা মজার মজার

কথা বলে খুব হাসিয়েছে।

                 পরদিন সকালে টিফিন করে দেখতে

যাওয়া হলো এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম ও সুপ্রাচীন

বৌদ্ধ গুম্ফা।এত বড়ো যে সবটা ঘুরে দেখার ক্ষমতা হলোনা। শুধু মুগ্ধ করে দিলো সারি সারি

বরফের মুকুট পরা পাহাড়, সবুজ গালিচার মত

বিস্তৃত নানা রঙের ফুলের সমারোহ, হাতের কাছে চলে আসা নীল সাদা আকাশ। দুচোখ ভরে শুধু দেখছি,এই প্রকৃতির রূপ বর্ণনা করি

এমন সাধ্য আমার নেই! 

                  এরপর গেলাম খুব যত্নে সংরক্ষিত

ওয়ার মেমোরিয়াল দেখতে। ১৯৬২ সালে চীন

বর্ডারে গোর্খা, শিখ, পাঞ্জাবী প্রভৃতি রেজিমেন্ট

স্থাপন করা হয়েছিল। সেই সব রেজিমেন্টের শহীদ হওয়া শত শত সৈনিকের নাম লেখা ফলক

গুলি দেখে বড়ো মন খারাপ হয়ে গেলো।আজও

একই ভাবে যুদ্ধ হয়েই চলেছে। জানিনা আর কত সভ্য হলে মানুষ যুদ্ধ করা বন্ধ করবে। সামরিক খাতে প্রতিটি দেশকেই যত খরচ করতে

হয়, যত প্রাণ যায়, টা যদি বন্ধ হতো ,তবে প্রতিটি

দেশই শান্তি আর সমৃদ্ধিতে ভরে উঠতো, পৃথিবী

একটি শান্তির গ্রহে পরিণত হতো। অথচ কিছু

ক্ষমতা লোভী, নিষ্ঠুর মানুষই এই পৃথিবীকে বাসের অযোগ্য করে এক ভয়ঙ্কর গ্রহে পরিণত

করেছে!জানিনা এর শেষ কোথায়! 

                      গতকাল সারারাত বৃষ্টি হয়েছে। সকাল থেকেই মেঘে ঢাকা আকাশ। হোটেলের

বারান্দায় গিয়ে দেখি প্রচুর বরফ পড়েছে। সমস্ত

বাড়ির ছাদ, গাড়ীর ছাদ, রাস্তার দুধার বরফে ঢাকা। আজ পিটিআসো আর সাংগেতসার লেক

দেখতে যাওয়ার কথা। কিন্তু এখনও পারমিশন

দেয়নি মিলিটারী ব্রীগ্রেডিয়ার। তবুও গরম জলে

চানটান সেরে রান্নার টিমের তপনের দৌলতে 

দারুন গরম গরম কচুরী, ছোলার ডাল আর গরম গোলাপজামুন দিয়ে ব্রেকফাস্ট করে বসে

আছি, এমন সময় খবর পাওয়া গেলো পারমিশন পাওয়া গেছে! ঠাকুরের নাম করে তিনটে গাড়িতে করে বেরিয়ে পড়া হলো। যতই

এগোচ্ছি ততই বরফের রাজ্যে ঢুকছি। দুধারের

ছোটো ছোটো গাছগুলো এমন ভাবে বরফে ঢেখেছে মনে হচ্ছে কাচের তৈরী। ঝর্নার জল

ঝরতে ঝরতে হঠাৎ থেমে গিয়ে বরফের ঝালর হয়ে ঝুলে আছে। একধরনের গাছের পাতাগুলো

বরফে ঢেকে মনে হচ্ছে এক গাছ স্টারফিশ! দিগন্ত বিস্তৃত ঝকঝকে সাদা বরফ যেন রাশি রাশি টাটা সল্ট। দুচোখ ভরে দেখছি আর সবার 

জন্য মন খারাপ হচ্ছে, মনে হচ্ছে সবাইকে যদি

এই দৃশ্য দেখাতে পারতাম! অনু আর বীথি আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাচ্ছে,একবার এ জানলা দিয়ে তো পরক্ষনেই অন্য জানলায় গিয়ে

ছবি তুলছে আর ভিডিও করছে। বীথি বলছে,"ওরে বাপরে আমি পাগল হয়ে যাবো! এ

যে লে,লাদাখ, মানালি কাশ্মীর নাথুলা সবের

প্যাকেজ!"সত্যি এরকম মাইলের পর মাইল

বরফ আমি এই প্রথম দেখছি। তবে লেক দুটোর

কোনো চিন্হ নেই, সব বরফ হয়ে গেছে। কেবল

পাতা বিহীন কিছু গাছের ডাল হাত তুলে জানান

দিচ্ছে এটা লেক। এবার চীন বর্ডারের আগে ভারতের শেষ মিলিটারী ক্যাম্পে এসে পৌঁছলাম।

উঃ!ঠান্ডা কাকে বলে! এখানে আর কোনো গাছপালার চিন্হ নেই, কয়েকটি উলের বলের মত লোমে ঢাকা ছোট্ট ছোট্ট কুকুর প্রাণের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। ট্যুরিস্টদের জন্য একটি

মাত্র সার্ভিস সেন্টার রয়েছে, মিলিটারীদের। ফায়ার প্লেসে হাত সেঁকে খুব ভালো লাগলো। গরম চা, কফি, মোমো খাওয়া হলো। ঈশ্বরের অশেষ কৃপায় এমন অপূর্ব সুন্দর প্রকৃতির দর্শন হলো। এবার হোটেলে ফিরে দুপুরের খাওয়া সেরে ঘুম। সন্ধ্যেটা কাটলো পুরো দল একত্রিত হয়ে গান, কবিতা ,গল্প আড্ডায়। পরদিন নামার পালা। গন্তব্য বোমডিলা।

                  সকালে ঘুম ভাঙলো কাচের জানলা দিয়ে লাল সূর্যোদয় দেখে। সূর্যদেব কে প্রণাম করে মনে মনে বললাম,"তোমার দেশে এসেছি ঠাকুর, তাই বুঝি এমন মিষ্টি আলোর স্পর্শে আমায় নিজেই দর্শন দিলে!"আবার যথারীতি তৈরী হয়ে নামা শুরু হলো। আবার সেই বরফের রাজ্যের মধ্যে দিয়ে ফিরতে লাগলাম দুচোখ ভোরে অপার সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে করতে।

বিকেল পাঁচটায় পৌঁছলাম সুন্দর সাজানো ছোটো শৈল শহর বোমডিলা।রাতে বিশ্রাম নিয়ে পরদিন আবার সেই ভালুকপং, কামেং নদী কমলালেবুর গাছ দেখতে দেখতে সমতলে নামতে লাগলাম পাহাড়কে বিদায় জানিয়ে। 

আবার ব্রহ্মপুত্র নদীর ওপর বিশাল ব্রীজ পেরিয়ে আসামের চা বাগানের দেশে ঢুকে পড়লাম। আরও দু রাত আসামে থেকে  কাঞ্জিরাঙা অভয়ারন্য দেখে গৌহাটি হয়ে বাড়ী ফিরলাম ,এত সুন্দর একটি ভ্রমণ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করে বাড়ী ফিরতে পারলাম তার জন্য ঈশ্বরকে শতকোটি প্রণাম জানাতে জানাতে। ================= 

ছবি- ইন্টারনেট ।

----------------------------          

Santwana banerjee

Po+vill Boinchigram

Dist Hooghly

Pin 712135


 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.