অনামিকা
অঙ্কিতা পাল
আজ মহা অষ্টমীর শুভ সকাল , দুর্গাপুজো প্রায় মধ্য গগনে। অনামিকা সুন্দর করে সেজে হাতে পুজোর ডালি নিয়ে মন্দির প্রাঙ্গণে উপস্থিত হয়েছে,সাথে রয়েছেন মা ও বোন। সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরেরে মেয়ে সে। হঠাৎ করেই তার দেখা অত্যন্ত প্রিয় বান্ধবী আরোহী র সাথে; আরোহী তার ছেলে বেলার খেলার সাথী। সে প্রথম ছেলেবেলার সাথী কে দেখে আনন্দিত হলেও পরে তার স্বামী রৌদ্র কে দেখে চমকে ওঠে এক পলকেই যেন তার পৃথিবীটা পালটে যায়।
রৌদ্র ছিল অনামিকা র কলেজের বন্ধু, শুধু বন্ধু বললে ভুল তাদের সম্পর্ক প্রথমে বন্ধুত্বের হলেও পরে প্রেমে পরিনতি পায়। অনামিকা কখনোই বাড়িতে তাদের সম্পর্কের কথা জনায়নি, সে অপেক্ষা করেছিল কবে রৌদ্র নিজের পায়ে দাঁড়াবে। কিন্তুু তার দুর্ভাগ্য একপ্রকার রৌদ্র তার সাথে প্রতারনা করলো। যাইহোক অনামিকা মনে মনে কষ্ট পেলেও কখকে কিছু প্রকাশ করেনি। তার আদম্য জেদ ও ইচ্ছে শক্তি তাকে আনেক দুর যেতে সাহায্য করেছে। সে এখন একটি গ্রামের বিডিও। একদিন তাকে অফিসের কাজে শহরে যেতে হয়েছে, এমন সময় তার দেখা রৌদ্রের সাথে। রৌদ্র তাকে দেখে মাথা নিচু করে থাকে এবং বলে - কেমন আছো? অনামিকা তার কথার কোনো উত্তর না দিয়ে চলে যায় এবং অফিসের একটি ঘরে বসে থাকে। রৌদ্র সেখানে আসে কিছু খাতা পত্র, ফাইল নিয়ে; তার হাতে চায়ের কেতলি ও বিস্কুটের প্যাকেট দেখে অনামিকা অবাক হয়ে যায়। রৌদ্র ফাইল গুলো একটি টেবিলের উপর রেখে দিয়ে আনামিকা কে জিজ্ঞেস করে - একটু চা খাবে অনামিকা? অনামিকা সোজাসুজি উঠে দাঁড়িয়ে তাকে তিরস্কারের ভঙ্গিতে বলে ওঠে - কল মি ম্যডাম? আমাকে নাম ধরে ডাকার অনুমতি কি করে হলো এই সামান্য ক্যারানির। সঙ্গে সঙ্গে অফিসে বস এসে বলেন - কি হয়েছে ম্যাম কোনো সমস্যা? অনামিকা খুব শান্ত ভাবে উত্তর দেয় - না কিছু না। একটু জল দেবেন প্লিজ।
তারপর সে অফিসের কাজের আলোচনা শুরু করেন। কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর, বাড়ি ফেরার সময় অনামিকা যখন গাড়িতে হেলান দিয়ে মাথা রাখে তখন যেন তার মনে ভেসে আসে রৌদ্রের কলেজ জীবনের কথা। তার তখনই তার ঠোঁটের কোথায় যেন মৃদু হাসির রেখা; রৌদ্র কি ছিল আর কি অবস্থা তার আজ।
===========================
নাম - অঙ্কিতা পাল
ভাঙ্গড় দক্ষিণ ২৪ পরগনা
দূরাভাষ - ৯৭৪৯৬১৭২২০