গল্প।। অক্ষরমালা ।। মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় রায়
অক্ষরমালা
মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় রায়
কয়েকটা শব্দ জোগাড় করে বেরিয়ে পড়লাম জীবনদর্শনে । সেখানে দিনরাত সব সমান অর্থাৎ কি না কোনো কিছুতেই কিছু যায় আসে না। সময় থেমে থাকে না সেকারণে রাতের তারারা ঘুমিয়ে থাকে দিনের আলোর মাঝে। মেঠো পথ কুড়িয়ে নিয়েছিল অভিমান। আনন্দ , আন্দোলন , অধিকার, অভিশাপ গুছিয়ে বিভিন্ন ভাবে গচ্ছিত হয়ে রইলো। সবুজ ঘেরা মায়ার খেলায় খুদকুঁড়ো দুমুঠো খুব আপন করে নেয় অথচ এখান থেকেই এই দানা দিয়েই ফাইভ স্টার , সিক্সটিন বালিগঞ্জ প্লেস জমে জমজমাট। অভিমান জমে ক্ষির টাকিলা। আমার বাঁ বুকে বেশ কিছুদিন ব্যথা হয়। সহজ সমাধান ডাক্তার দেখানো, ই সি জি, এনজিওপ্লাস্টি ইত্যাদি প্রভৃতি। কিন্তু যদি কয়েকটা শব্দের মধ্যে থেকে ওই অবক্ষয় নামক শব্দটি পাওয়া যায় তার কি চিকিৎসা জানা নেই। আসতে আসতে সূর্য ডুবে বিকেল থেকে সন্ধ্যা নামে এখানে ।অন্য কোথাও সূর্য উঠে হয় আলোময়। নতুন পুরোনো প্রজন্মের মধ্যে একটা সুতোর ভূমিকা কিন্তু উল্লেখযোগ্য। আমরা যখন মাঝ আকাশে পাক খাচ্ছি তখন সারাক্ষণ দ্বিধা দ্বন্দ্বে বুঁদ হয়ে থাকি। আমাদের সময় এমন টা ছিল না , আমরা এটা করতাম না, আমরা এটা পাই নি, আমাদের সময় আমরা এসব ভাবতেই পারতাম না, আমাদের সময় জিনিসের দাম এমন ছিল না , আমাদের ছোটবেলা কেটেছে যৌথ পরিবারে যা কি না আজকালকার ছেলেপুলেরা কল্পনা ও করতে পারে না।এমন কত বিতর্ক দানাবেঁধে অনায়াসে এক ঘন্টা কেন , ঘন্টার পর ঘন্টা সঙ্গে সুমন জমে যেতে পারে।
আসলে আমরা যখন যেটা পাই সেটাকে উপভোগ করার থেকে পিছনে যেমন তাকাই , আগামীর কথা বেশী ভাবতে গিয়ে বর্তমানকে উপভোগ করতেই ভুলে যাই।
সব ক্ষেত্রে ভালো মন্দ চুলচেরা বিচারে সহজ সরল পরিবেশকে গুমোট করে তুলতে পারলেই একটা বিজ্ঞচিত হয়ে ওঠা একটা ফ্যাশন। আর এভাবেই নিজেকে একটা অন্য পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা। তাতে কতটা সুখ আছে সেই বোঝে যে সুখ আশা করে। এক এক জীবনের এক্সপেটেশন এক এক । আর তার থেকেই ভালো থাকা ম্যাটার করে। শিশুকাল থেকে সেই পরিচিত বর্ণ পরিচয় অ , আ, থেকে ৎ ং চন্দ্রবিন্দু চাঁদ। হয়তো পরপর বলাও ভুল হয়ে যেতেই পারে । তাতে কি বা এসে যায় এই সব নিয়েই কোটি কোটি আগোনা অক্ষর বিন্যাস। ভালো মন্দের খেলায় মেতে থাকি । হারজিত, লাভ ,লোকসান , হিংসা, আক্রোশ, সুখ, দুখ, ভালোবাসায় রাত কেটে দিন হয় । অন্ধকারের পর আসে আলো । সেই আলোয় খুঁজে নিই অ আ। আকাশে ফুটে থাকে ঝলমলে অক্ষরমালা।
চিত্রঋন- ইন্টারনেট।
===========================
লেখিকা- মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায় রায়