রম্যগল্প ।। মহিলাদের ক্ষমতায়ণ ।। শ্রীমন্ত সেন
মহিলাদের ক্ষমতায়ণ
শ্রীমন্ত সেন
শিরোনাম শুনেই শ্রীপতি সমাজপতি বাবু সসম্ভ্রমে কপালে দুহাত ঠেকালেন। হয় তো বা দেশের তাবৎ নারীসম্প্রদায়ের উদ্দেশেই। গ্রামের বর্ধিষ্ণু পরিবারের তথাকথিত উদারচেতা কর্তা হিসাবে খ্যাত অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ আমলা শ্রীপতিদা বরাবর তাঁদের মানবেতর প্রাণী হিসাবে গণ্য করে এলেও আজ বুঝেছেন সরাসরি নারীবিদ্বেষ কোনও স্বার্থই সিদ্ধ করে না। বরং ছদ্ম নারী সমর্থনই বেশ স্বার্থসাধক।
কাজেই তিনি মোক্ষম অস্ত্রটি প্রয়োগ করলেন, "বলি, মহিলাদের ক্ষমতায়ণের প্রস্তাব বা দাবি প্রথম কে করেছিল জানো?"
আমি কিছু বলার আগেই তিনিই জবাব দিলেন, "হুঁ হুঁ, বাবা, এই— এই শর্মা। তারপর রাজ্য থেকে কেন্দ্র, এমন ভাবনা দিলাম, অচিরেই 'বাপ! বাপ!!' বলে সংবিধানের ৭৩-তম সংশোধনটি করতে হল। পঞ্চায়েত ইত্যাদি গণশাসন মাধ্যমে মহিলাদের অধিকতর সংরক্ষণ তথা অংশগ্রহণের ব্যবস্থা হল।" একটি আকর্ণবিস্তৃত হাসি প্রদর্শন করে তিনি আপাতত মুখবন্ধ করলেন।
আমি বা আমরা, যাঁরা তাঁর বয়ঃকনিষ্ঠ, সবাই শুনে তো থ। 'এ কী কথা শুনি আজ মন্থরার মুখে!'
"ইতিহাস যে অন্য কথা বলে"-- তাঁকে বলতেই তিনি এমন একটি উদ্গার তুললেন যে তার তুড়িতে ইতিহাস কোথায় উড়ে গেল! তাঁর করুণার দৃষ্টি আমাদের একেবারে মাটিতে মিশিয়ে দিল। সত্যিই তাঁর কৃতিত্বের কাছে আমরা যেন খড়কুটো ছাড়া আর কিছুই নই।
এদিকে তিনি একলাই সরকারি আমলা ছিলেন না। 'আম্মো।' মানে এই অধম আমিও তা-ই ছিলাম। মালদহের জেলা গ্রামোন্নয়ন সেলের প্রকল্প পরিচালক হিসাবে গ্রামোন্নয়ন আমারও কর্তব্যের মধ্যে প্রধান কর্ম ছিল। আর নারী তো জনসমাজেরই অংশ। কাজেই তাঁদের ক্ষমতায়ণও আমার দেখার কথা ছিল।
কিন্তু ক্ষমতা এমনই এক বস্তু যে তা হস্তান্তর করতে কারও মন চায় না। পুরুষদের তো নয়ই। এ যেন সেই "যে তোমায় ছাড়ে ছাড়ুক, আমি তোমায় ছাড়ব না নাথ" অবস্থা! আবার 'মরিয়া না মরে রাম, এ কেমন বৈরী'-র মত 'ছাড়িয়া না ছাড়ে রাশ, এ কেমন গ্রাস রে!' নাই বা থাকুক পদ, ঘুরপথে পদের ক্ষমতা ভোগ করতে বাধা কোথায়? বিশেষত দল যদি সহায়ক থাকে।
মালদহের এক ব্লকে স্বয়ং সহায় দল(সেল্ফ হেল্প গ্রুপ বা সংক্ষেপে এস এইচ জি) গঠন নিয়ে ডাকা গ্রাম পঞ্চায়েতের এক সভায় গিয়েছি। ওই পঞ্চায়েতে বর্তমানে প্রধান এক মহিলা। আগে তাঁর স্বামী প্রধান ছিলেন। সভায় সবাই উপস্থিত। প্রধানের কথা জিজ্ঞাসা করায় একজন গুম্ফযুক্ত তাগড়াই ভদ্রলোক(!) উঠে দাঁড়িয়ে বললেন, "আমিই প্রধান।"
"সে কী! আমি তো যতদূর জানি যে এখানে মহিলা প্রধান। তা আপনাকে দেখে তো ঠিক..." ।
"ঠিকই বলেছেন স্যার, আসলে আমি প্রধানের স্বামী। ...হয়েছে কী, উনি একটু ঘরের কাজে ব্যস্ত আছেন, তাই-- তাই আমি ওঁর হয়ে প্রধানের কাজটা একটু সামলে দিচ্ছি।"
আমার মুখের ভাব দেখে উনি সামাল দেন, "না, মানে উনিই রোজ প্রধানের কাজ দেখেন। আজ নেহাত ঘরের কাজে একটু আটকে গেছেন তাই...'' ওঁর বালির বাঁধ দেওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা।
মনে-মনে ভাবলাম, 'প্রধানের স্বামী' তৎপুরুষ সমাস করলে হয় 'প্রধানস্বামী'। এতে পুরুষতন্ত্র ভালই রক্ষিত হয়। আবার, 'প্রধান যে স্বামী' কর্মধারয় সমাস করলেও হয় 'প্রধানস্বামী', সে ক্ষেত্রেও স্ত্রীর কর্মধারণ করে 'কর্মধারক' হতেও বাধা নেই। আবার 'তন্ত্রধারক' বললেও খুব ভুল হবে না কারণ শাসন-তন্ত্র–ধারক তো বটেই। শুধু প্রশ্ন একটাই— 'প্রধান' স্বামী থাকলে 'অপ্রধান' স্বামীও কি আছেন? তওবা, তওবা!
আসলে এ সবই হল পরিকল্পনামাফিক। মহিলাদের জন্য পদটি সংরক্ষিত হওয়ায়, আগের পুরুষ প্রধানের স্ত্রীকেই নোমিনেশন দেওয়া হল, যাতে স্বামীপ্রবর আগের মতই প্রধানের কাজ চালিয়ে যেতে পারেন, তবে অবশ্যই বকলমে, স্ত্রীরূপ মহিলাটিকে শিখণ্ডি খাড়া করে।
আর একবার চাঁচল মহকুমার একটি গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়েছি কোনও কাজে। ওই গ্রাম পঞ্চায়েতেও মহিলা প্রধান। এখানেও সেই একই ব্যাপার। আগে স্বামী প্রধান ছিলেন, এবার সংরক্ষণের গেরোয় স্ত্রীকে প্রধান করা হয়েছে। কালিদাসের কথায় 'গৃহিণী সচিব সখি মিতা প্রিয়শিষ্যা ললিতে কলাবিধৌ'। কিন্তু এহ বাহ্য।
এখানেও যথারীতি আসল মহিলা প্রধান অনুপস্থিত এবং তাঁর স্বামী প্রবলভাবে সমুপস্থিত। কাজকর্ম চলছে, অনায়াস দক্ষতায় প্রধানস্বামী (তৎপুরুষ) তা সামলাচ্ছেন। এমন সময় এক ভদ্রলোক এলেন, তাঁর কোনও বিষয়ে পঞ্চায়েত প্রধানের শংসাপত্র প্রয়োজন। প্রধানস্বামী তাঁকে পাশের টেবিলে কর্মসহায়কের কাছে পাঠালেন।
ঝটিতি একটি মোটা লেটারপ্যাড বের করে কর্মসহায়ক শংসাপত্র লিখে ভদ্রলোকের হাতে দিলেন। ভদ্রলোক গমনোদ্যত হলেন। এমন সময় আমার মাথায় এল-- কই, প্রধানের স্বাক্ষর হল না তো! তবে কি প্রধানের বাড়িতেই উনি স্বাক্ষর করাতে যাচ্ছেন? সঙ্গে-সঙ্গে ওঁকে ডাকলাম। উনি এলে ওঁর হাত থেকে শংসাপত্রটি নিয়ে দেখি, যথাস্থানে প্রধানের স্বাক্ষর জ্বলজ্বল করছে। এমনভাবে মেপে বয়ান লেখা হয়েছে যে শংসাপত্রের বয়ান যেখান শেষ হয়েছে, ঠিক তার নীচেই রয়েছে প্রধানের স্বাক্ষর। আবার বয়ান ও প্রধানের স্বাক্ষরের কালিও একই রঙের। কী করে সম্ভব হল!
এবার কর্মসহায়কের কাছ থেকে প্যাডটি নিয়ে দেখি প্যাডটির প্রতিটি পাতায় একই জায়গায় প্রধানের স্বাক্ষর, যা আগেভাগেই করে রাখা হয়েছে। হা হতোস্মি! একেই কি বলে মহিলাদের ক্ষমতায়ণ! চোরে-কামারে সাক্ষাৎ নেই, সিঁধ কাটি তৈরি হয়ে গেল। ত্রেতায় সীতাকে অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয়েছিল পুরুষপ্রধান শ্রীরামচন্দ্রের কাছে। এ যুগের সীতাকে দিতে হল আরও বড় অগ্নিপরীক্ষা, প্রধানস্বামী পুরুষপ্রধানের কাছে— "স্বাক্ষর আমার, বাকি অক্ষর তোমার, আমার স্বাক্ষরকে মহৎ কর্মে লাগাও আর অসৎ কর্মে লাগাও— সব দায় আমার, তুমি পুরুষপ্রধান, তুমি নির্দায়— 'ত্বয়া হৃষীকেশেন হৃদিস্থিতেন যথা নিযুক্তোস্মি, তথা করোমি'। বা বিপরীতে আমাকে নিয়ে, আমার স্বাক্ষর নিয়ে, যা করবে, করাবে, করতে পারো।"
আমার স্মৃতিচারণা শেষ-হতে-না-হতেই শ্রীপতি দার বাক্যাঘাত, "কী ভায়া, এতেই বাক্য হরে গেল যে! না কি প্রত্যয় হল না?"
"কিন্তু—"।
"কোনও কিন্তু নয়। আমার কথাও যা, কাজও তা। যাকে বলে মন-মুখ এক। ... আচ্ছা, বেশ, তোমার সংশয় দূর করার জন্য মহিলাদের প্রতি আমার সম্মানজনক আচরণের কয়েকটি দৃষ্টান্ত দিচ্ছি—একেবারে আমার সাক্ষাৎ কর্মজীবন থেকে।"
এবার তিনি শুরু করলেন মহিলাদের প্রতি তাঁর চির অনুসরণযোগ্য সম্মানজনক কর্তব্যের নমুনা। "বুঝলে হে, আমি তখন দক্ষিণবঙ্গে এক প্রত্যন্ত ও পিছিয়ে পড়া জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক। আমি আগে থেকে ঠিক করা কর্মসূচি অনুযায়ী একটা গ্রামে গিয়েছি পরিদর্শনের জন্য—আমার উদ্দেশ্য গ্রামের লোকেরা কেমন আছে ইত্যাদি। হঠাৎ দেখি একজন মহিলা তার একটা বাচ্ছা নিয়ে আমার গাড়ির সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ল। ভাগ্যিস ঠিক সময়ে ড্রাইভার ব্রেক কষল, নইলে কী যে হত স্বয়ং ঈশ্বরই জানেন। আমি সঙ্গে-সঙ্গে গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম। ...কেন, কী ব্যাপার ইত্যাদি জিজ্ঞেস করতেই মহিলাটি কাঁদতে-কাঁদতে বলল, "স্যার, গাড়ি থামালেন কেন... আমি তো আমার বাচ্ছা মেয়েকে নিয়ে মরতেই চেয়েছিলাম।"
"কেন, মরতে চেয়েছিলে কেন?"
"আর বেঁচেই বা কী হবে, স্যার?"
"মানে?"
"আমার স্বামী আমাদের ত্যাগ দিয়ে দূরে কোথাও চলে গেছে, হয় তো নতুন ঘরই বেঁধে থাকবে। ...এখন আমরা কী খেয়েই বা বেঁচে থাকব? তাই আপনি আসছেন শুনে আপনার গাড়ির সামনে ঝাঁপিয়ে প্রাণ দেব—ঠিক করলাম।"
"আ-আমার গাড়ির সামনেই কেন?" (যেন অন্য কারও গাড়ির সামনে ঝাঁপিয়ে মারা গেলে শ্রীপতি দার কিছু যেত-আসত না।)
"আজ্ঞে, আপনারা হত্তাকত্তা মানুষ। ... দেখতে এসেছেন আমরা কেমন আছি। ...তা হলে দেখেই যান, আমরা আসলে কেমন আছি।"
শ্রীপতি দা চুপ করে গেলেন দেখে আমি বলি, "তারপর, দাদা, তারপর? ...কী করলেন?"
"কী আর করব, ভাই—তোমরা তো আমার মহিলা জাতির প্রতি শ্রদ্ধার মনোভাব জানোই। তাই..."।
"তাই..."
"তাই গ্রাম পরিদর্শনের শেষে মহিলা ও তার বাচ্ছা মেয়েটাকে নিয়ে বাংলোয় ফিরলাম। কদিন বাদে বাচ্ছাটাকে একটা সরকারি হোমে আশ্রয় তথা পড়াশোনার ব্যবস্থা করে দিলাম।"
"আর ওর মাকে?"
"ওর মাকে কন্টিনজেন্ট মিনিয়ালে আমার বাংলোয় টুকিটাকি কাজে বহাল করে দিলাম।"
শ্রীপতি দাকে বললাম না যে এ কথা কানাঘুষোয় অনেক আগেই শুনেছি আমরা, আমরা মানে প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত লোকেরা। ... এ কথাও শুনেছি যে শ্রীপতি দা ওই মহিলার অসহায়তার সুযোগ পর্যন্ত নিতে ছাড়েননি। ... সেটাই আবার সম্মানের দৃষ্টান্ত হিসেবে উনি দেখাতে চাইছেন। হে ধরণি! দ্বিধা হও।
আমাদের মুখের ভাবে উনি সন্দিগ্ধ হয়ে আরও দৃষ্টান্ত দেবার উদ্যোগ করতেই আমি বললাম, "থাক, দাদা—বুঝে গেছি—সত্যিই মহিলাদের আপনি কত সম্মান করেন। ওঁদের অধিকার নিয়ে আপনি কতটা সচেতন।"
"বলি বিশ্বাস হল না তো? ...ঠিক আছে, কথায় বলে না 'চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম'। ...তা চলো না কেন, কাল তোমরা আমার বাড়িতেই চলো। আমার বাড়িতে মহিলাদের কেমন ক্ষমতায়ণ ঘটিয়েছি, নিজের চোখেই দেখবে চলো। ...তা হলে কাল আমার বাড়িতে তোমাদের মধ্যাহ্ন ভোজের নিমন্ত্রণ রইল। অবশ্যই যেও তোমরা।"
পরদিন মধ্যাহ্নে যথারীতি আমরা ক'জন 'গুটি-গুটি লইয়া চরণ' শ্রীপতি দার আমিরখানায় খানা আর মহিলাদের ক্ষমতার নমুনার লোভে হাজির হলাম। কিন্তু গিয়ে যা দেখলাম আর শুনলাম, তাতেই আক্কেল গুড়ুম হয়ে গেল!
বসার ঘরের দরজা হালকা ভেজানো ছিল, তা যৎসামান্য খুলে উঁকি দিয়েছি মাত্র, দেখি শ্রীপতিগৃহিণী করুণা বৌদি খুন্তিহস্তে কোমর বেঁধে স্বামীপ্রবরের সঙ্গে প্রবল কলহে ব্যস্ত। "বলি আর কতকাল আমাদের ভাঁওতা দেবে? আমরা মেয়েরা ঘাসে মুখ দিয়ে চলি ভাবো, না? ভেবেছিলে চিরটা কাল তোমার ধাষ্টামো সহ্য করে যাব।"
শ্রীপতি দা, "আমি ভাঁওতা দিলাম, তোমাদের মানে মহিলাদের! ...দ্যাখো, তোমরা থাকো তো নিজেদের গণ্ডির মধ্যে নিজেদের নিয়েই। আর আমরা বাইরে বেরোই, বাইরের জগতের হাল ধরি, সেখানে মহিলা পুরুষ—সবাইকে নিয়েই আমাকে কাজ করতে হয়। তাদের সমান চোখেই দেখতে হয়। মহিলা বলেই আমার কাছে অচ্ছুৎ নয় মোটে..."
তাঁকে থামিয়ে দিয়ে করুণা বৌদি, "চুপ, একদম মিথ্যে বলবে না। আমি কিছুই বুঝি না ভেবেছ? ...এই সেবার, গ্রামে ভিজিটে গিয়ে কোথাকার এক দুস্থ মহিলাকে মানে রমলাকে তার বাচ্ছা সহ বাংলোয় নিয়ে এসে তুললে। কিনা, তার স্বামী তাকে ছেড়ে চলে গেছে। তাই তোমার দরদ একেবারে উথলে উঠল! ...দরদ উথলেছে, সে খুব ভাল কথা। তা বাচ্ছাটাকে রেখে এলে সরকারি হোমে। আর রমলার জন্য অন্য কোথাও ঠাঁই হল না? যত সব বদমায়েশি! আমি তোমার ছুঁকছুঁকে স্বভাবের কথা জানি না, বুঝি না ভেবেছ?"
শ্রীপতি দা কাঁচু-মাচু হয়ে কী যেন বলতে যাচ্ছিলেন, অমনই বৌদি ঝাঁঝিয়ে উঠলেন, "বলি সেদিন তো মহিলা সমিতির সভায় বিশেষ অতিথি হয়ে গিয়ে আমাদের জন্য কেঁদে ভাসিয়ে দিলে। আবার ঢং করে দশ হাজার টাকাও দান করলে। আর তার পরের দিনই—।"
"বিশ্বাস করো..."
"বিশ্বাস! তোমাকে! বলি সমিতির সবচেয়ে কম বয়সী মেয়েটাকে চুপিচুপি বাড়িতে ডেকে এনে ফস্টিনস্টি করার চেষ্টা তুমি করোনি? আমি মহিলা সমিতির সদস্য হলাম, আর অমনি তুমি আমাদের ওপর লক্ষ রাখতে ওখানে যাতায়াত শুরু করলে। কি না তুমি মহিলাদের কত আপন জন, তাদের শক্তিশালিনী দেখতে চাও। ...আজ আমাদের শক্তিই দেখাব। তারা সবাই এসে পড়ল বলে।"
"কারা?"
"আমাদের সব সদস্যরা। তারাই তোমার বিচার করবে। তুমি কত মহিলাদরদি তা দেখাবার জন্যে বন্ধুদের দুপুরে খাবার নিমন্ত্রণ করলে। আমাকে কবিরাজের 'শান্তকারিণী বটিকা' খাওয়াতে গিয়ে ভাগ্যিস ভুল করে 'অশান্তকারিণী বটিকা' খাইয়ে বসলে। এবার বোঝো ঠ্যালা।"
ওদিকে অসংখ্য মহিলা সম্মার্জনী হাতে এসেই স্লোগানে-স্লোগানে মুখরিত করে তুললেন তল্লাট, তারপর অনশনে বসে গেলেন-- দাবি 'শ্রীপতি বাবুর শ্রীমুন্ড চাই'।
খানার আশা না দেখে 'যঃ পলায়তে স জীবতি' ঋষিবাক্য স্মরণ করে আমরা খানাখন্দ বিচার না করেই অবিলম্বে পগার পার!
======================
Srimanta Sen,
29/A/1, Bhagirathi Lane,
P.O.—Mahesh,
Dist.—Hooghly,
PIN—712 202