Click the image to explore all Offers

স্মৃতিকথা ।। আমার একজন প্রিয় শিক্ষক ।। হারান চন্দ্র মিস্ত্রী




আমার একজন প্রিয় শিক্ষক    

হারান চন্দ্র মিস্ত্রী        

         
    আমি যে শিক্ষকদের সঙ্গ পেয়েছি তাঁদের একজন সাহাবুদ্দিন লস্কর। তাঁকে ভুলতে পারি না। তিনি সময় পেলে আমাকে পিয়ালী নদীর তীরে বনবিবির মন্দিরের সামনে নিয়ে যেতেন। সেখানে বসে দুজনে পড়াশুনো নিয়ে আলোচনা করতাম। আমার বিশ্বাস তাতে আমি সমৃদ্ধ হয়েছি।    
    আশ্বিন-কার্তিক মাসে ধানক্ষেতের ভিতর দিয়ে আমরা যেতাম।। ওই মেঠো পথ ছিল আমাদের যাতায়াতের রাস্তা। শরৎ-হেমন্তের দিগন্ত জোড়া ধানখেতে বাতাস ঢেউ খেলে যেত। রঙিন মেঘগুলিকে বিদায় জানিয়ে সূর্য অস্ত যেত। নীল আকাশের তলে ভেসে যেত স্বপ্নের বলাকা। তিনি রবীন্দ্রনাথের কবিতার সঙ্গে প্রকৃতিকে  মেলাতেন।     
     একবার এক বর্ষার বিকাল বেলায় আমাকে ঢোষার হাটে নিয়ে যেতে চাইলেন। তিনি  এসে আমাকে ডাকলে আমি তাঁকে "না" বলতে পারতাম না। আকাশে কলো মেঘ গুমরাচ্ছিল। আমি একটি কাঠের বাঁটের বড়ো কালো ছাতা সঙ্গে নিলাম। আমরা যখন খেয়া পেরিয়ে হাটে পৌঁছুলাম, তখন সূর্য ডুবে যাচ্ছে।    
     শিক্ষক মহাশয় কিছু ডাল-মশলাপাতি কিনেছিলেন। আমার কিছু কেনার ছিল না। অন্ধকার ঘনিয়ে এসেছে। আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।  আমরা তাড়াতাড়ি খেয়া পেরিয়ে এপারে চলে এলাম। শুরু হলো মুসলধারে বৃষ্টি। একটি ছাতার মধ্যে দুজনে বাড়ি ফিরছি। কাদাপথে পরস্পরকে  ধরে হাঁটছি পাছে কেউ পড়ে না যাই।    
      তিনি বলেছিলেন, আজকের এই মুহূর্তটি আমাদের চিরদিন মনে থাকবে। তাঁর সঙ্গে এখন আমার যোগযোগ কমে গেছে। সেদিনের মুহূর্তটি তাঁর মনে আছে কিনা জানি না, তবে আমি ভুলতে পরিনি।   
______________
 

 
হারান চন্দ্র মিস্ত্রী
গ্রাম ও পো- আমতলা,
থানা-ক্যানিং,
জেলা-দক্ষিণ ২৪ পরগনা,
পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ,

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.