ছবিঋন- ইন্টারনেট
ছোটোবেলার গ্রীষ্মকালীন স্মৃতি
সুইটি রয়
ঘাম ঝরে দরদর গ্রীষ্মের দুপুরে
খালবিল চৌচির জল খাই পুকুরে
ছোটো বেলায় আমার কাছে তো প্রচন্ড রাগী ঋতু হলো গ্রীষ্মকাল। এর থেকে যত তাড়াতাড়ি বাঁচার একটা ই উপায় হলো স্কুলে গরমের ছুটি পড়া।
স্কুলে যেদিন ছুটি পড়তো সেদিন বন্ধু দের হাত ধরে গাইতাম,
আমাদের ছুটি ছুটি
চল নেব লুটি
ঐই আনন্দ ঝড়নায়।
প্রচন্ড গরমে মধ্যে হঠাৎ করে সব গাছপালাকে নাড়িয়ে দিয়ে আসে কালবৈশাখী ঝড়। বেশ ভালো লাগতো। না একটু মন খারাপ হতো কারন বিকেল বেলায় গরমকালে বন্ধুদের সাথে খেলা, একসাথে আলুকাবলি খাওয়া - এই গুলো বৃষ্টির জন্য করতে পারতাম না।
কোনো কোনো দিন দুপুরে মা ঠাকুমা ঘুমিয়ে পড়লে বন্ধুদের জন্য আমের আচার, আমের মোড়ব্বা চুরি করে নিয়ে মাঠে যেতাম। চুরি করে বন্ধুদের সাথে বসে খাওয়ার এক দারুণ মজা।
গ্রীষ্মকাল মানেই তো রবিঠাকুরের জন্মদিন। আমাদের পাড়ায় বড়ো করে রবীন্দ্র জয়ন্তী হয়। তার জন্য এক মাস ধরে বিশাল তোড়জোড় চলে। রবিঠাকুরের গান নাচ এবং আবৃত্তি করত। বড়োরা নাটক করত। সেও এক আলাদা অনুভূতি। একবার মাকে আবদার করে বলেছিলাম ২৫শে বৈশাখে জোঁড়াসাকো নিয়ে যাবার জন্য। মা নিয়ে গিয়েছিল। কতো মস্ত বড়ো বাড়ি!
গরমকাল মানেই গ্রামের বাড়ি থেকে আম আসবে। কত আম আসতো। ল্যাঙড়া, বোম্বাই, গোলাপখাস, সে কত রকমের পাকা পাকা মিষ্টি মিষ্টি আম!
ঠাকুমা আম দিয়ে আম তেল বানিয়ে রাখতেন কাঁচের বোয়ামে। বিকেলবেলায় আম তেল দিয়ে মুড়ি মেখে দিত।
বিকেল হলেই ঠাম্মার কাছে আবদার হতো ice cream - এর। ঠাম্মা শাড়ির আঁচলের কোনা থেকে গাঁট খুলে কয়ন দিত ice cream কেনার।
প্রতিদিন তো ঠাম্মার কাছে চাইতে পারতাম না তাই মাঝে মাঝে দাদাকে রাজী করতাম কুলফির জন্য। পাড়ায় পাড়ায় ঘন্টা বাজিয়ে কুলফিওলা যেত দাদার থেকে পয়সা নিয়ে কুলফি খেতাম।
যতোই গ্রীষ্মকালে গরম লাগুক বা প্রচন্ড রাগী ঋতু হোক না কেন এই সময় যেই মজা গুলো করা যায়, সেটা অন্য ঋতুতে হয় না।
---------------------------
Sweety Roy, K.G SCHOOL.
Address- Sarat Bose Lane, Birati