অণুগল্প ।। শোধ ।। চন্দন মিত্র
শোধ
চন্দন মিত্র
লক্ষ্মী টি স্টলের সামনের ফুটপাথে দাঁড়িয়ে সান্ধ্যকালীন চায়ে চুমুক দিচ্ছি। একটা বাস এসে থামে; কয়েকজন যাত্রীকে নামিয়ে দেয়। হঠাৎ দেখি মাঝবয়সী কনডাক্টর বাস থেকে নেমে এক ছোকরা যাত্রীর পথ আটকে চেঁচামেচি শুরু করে দিয়েছেন।
কনডাক্টর— ভাড়া না-দিয়ে চলে যাচ্ছিস যে!
ছোকরা— কপাটহাট থেকে তো উঠলাম, এইটুকু রাস্তার জন্য আবার ভাড়া কীসের!
কনডাক্টর— বাসে চড়েছিস মানে মিনিমাম ভাড়াটা দিতেই হবে।
ছোকরা— এক কিলোমিটার রাস্তার জন্য ভাড়া! মগের মুলুক নাকি! আমি লোকাল ছেলে, ভাড়া দেব না কী করার আছে করে নাও।
কনডাক্টর, ছোকরা যাত্রীটির এমন বেয়াড়া আচরণ আর বোলচাল শুনে নিজেকে ঠিক রাখতে না-পেরে দুহাতে তার জামার কলার চেপে ধরেন।
আমি নির্বিকার থাকতে না-পেরে এগিয়ে গিয়ে কনডাক্টরকে নিরস্ত করি। ছোকরাটি কলার সামলে নিয়ে পকেট থেকে একটি দশ টাকার নোট বের করে দুহাতের তালুর মাঝখানে রেখে ঘষে ঘষে তার ভাঁজ ঠিক করতে থাকে। আমি ভাবতে থাকি, গাধা কোথাকার সেই যখন ভাড়া দিবি, তাহলে এত জলঘোলা করার মানে কী! ছোকরা যাত্রীটি আমাকে অবাক করে সেই নোটখানা কনডাক্টরকে দেখিয়ে বলে, 'কী ভেবেছ আমি ভাড়া দেব না। ভাড়া তো দিতাম কিন্তু কলার ধরেছ ওতেই শোধ, ভাড়া আর পাচ্ছ না বুঝলে?'
=====================
চন্দন মিত্র
ভগবানপুর (হরিণডাঙা),
ডায়মন্ড হারবার,
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা।