রত্না রা দুই ভাই বোন। ভাইয়ের পড়ার ক্ষতি না হয় তার জন্য রত্নাকেই সব কাজ করতে হতো। ভাইকে দিয়ে কোন কাজই করানো হতো না। রত্না মেয়ে ,আজ বাদে কাল বিয়ে হয়ে যাবে তাই তার পড়াশোনা না করলেও চলবে ।রত্না মা মনে মনে চেয়েছিল রত্না একটু লেখাপড়া শিখুক, কিন্তু নুন আনতে পান্তা ফুরনো পরিবারে লেখাপড়া শেখা মেয়েদের একটা বিলাসিতা। সংসারে বলি মেয়েদেরই হতে হয়। টাকা খরচ করে পড়ালে সেই পয়সা ঘরে উঠে আসবে না! বরং আরো খরচ করে পাত্রস্ত করতে হবে। তাই সংসারের সব কাজে রত্নাকেই পাঠানো হতো। সেদিন রতনদের বাড়ি পুজো ছিল, সকাল থেকে রত্না গিয়েছিল ফাইফর মাস খাটতে।
রতন এই বাড়ি ছোট ছেলে ,পেশায় ইঞ্জিনিয়ার, তিন বছর হলো বিয়ে হয়েছে ছোট্ট একটি সন্তান আছে । রত্না রতনকে ছোট কাকা বলে ডাকত।
১২ বছরের সদ্য কিশোরী বুকের দুপাশে হালকা নরম মাংসপিণ্ড উঁকি দেওয়ার চেষ্টা করছে, সব সময় রত্না নিজেও হাত দিতে পারে না পাকা ফোড়ার মতন ব্যথা ।স্নানের সময় খুব আস্তে গামছা দিয়ে জল গুলো মোছে ওই পদ্মকুরী দুটোর।
ছেলেদের সামনে যেতে এখন কেমন যেন লজ্জা করে ।তার বাইরে যেতে ভালো লাগে না। অভাবের সংসার !মেয়ের এই আদিখ্যেতা রত্নার মায়ের ভালো লাগে না। গালাগালি দিয়ে বলে ছিনাল পানা করিস না, রতনদের বাড়ি ফর মাস কাজগুলো করে দিলে বাবা ও ভাইয়ের ভাত রান্না করে রত্নার মা রতনদের বাড়ির বাকি কাজগুলো তাড়াতাড়ি করে দিয়ে আসতে পারবে।
মল্লিকা জেঠি চায়ের কাপ রত্নার হাতে দিয়ে বলে রতনের ঘরে দিয়ে আসতে। রত্না চা নিয়ে রতনের ঘরে যখন ঢোকে রতন তখন শুয়েছিল, হঠাৎ রত্নাকে জড়িয়ে ধরে বুকের মাংসপিণ্ড দুটো জোরে চেপে ধরে !যন্ত্রণায় রত্না চিৎকার করতে গেলে মুখ চেপে ধরে হাতে ৫০ টাকার নোট গুঁজে দিয়ে বলে যা ইচ্ছে কিনিস কাউকে কিছু বলবি না।
ফুপিয়ে কাঁদতে কাঁদতে রত্না এক ছুটে বাড়ি চলে আসে বুকে অসহ্য যন্ত্রণা! সাথে অপমানের জ্বালা, চোখের জলে মিলেমিশে একাকার সদ্যকৈশোরের পা দেওয়া মেয়েটি।
উপলব্ধি করে বুকের উপর ফুটে ওঠা পদ্ম কুড়ি দুটির ওপর পুরুষের লোভের পরিমান
আদি যুগের মনি ঋষিরাও মেয়েদের বুকের এই পদ্মকুরী চটকানোর লোভ পরিহার করতে পারেনি !
ব্রহ্মা পর্যন্ত নিজের কন্যা সরস্বতী কে দেখে কামাসক্ত হয়ে ধর্ষণ করতে পিছুপা হয়নি !
দুদিন অজ্ঞান হয়ে থাকার পর জ্ঞান ফিরলে মাকে সব জানায়।। প্রথমে মা চিৎকার করে উঠলেও বাবা বোঝায় ওরা বড়লোক ,রত্না অভিযোগ সহজে প্রমাণ করতে পারবে না। রত্নার বাবার কাজ চলে যাবে, রত্নার ভাইয়ের সামনেই পরীক্ষা, ছেলেটার ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাবে !তাদের সবাইকে গ্রাম ছাড়া হতে হবে।
তার চাইতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রত্নার বিয়ে দিয়ে দিলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে!
অসহায় রত্না ভয় কয়েক দিন বাইরেই বেরোতে পারেনি।
দুর্গাপূজার সময় দেখেছিল। রতন বউ-বাচ্চার সাথে দুর্গা পূজার অঞ্জলি দিচ্ছে। রত্না ভেবেছিল ঠাকুর ওর শাস্তি দেবে, কোথায় কি ?বহাল তবিরাতে তারা বেঁচে আছে।
১৪ বছর বয়সেই কলকাতা শহরের বাসিন্দা ধীমানের সাথে রত্নার বিয়ে হয়ে যায় ।ধীমান পেশায় বাস ড্রাইভার অর্থনৈতিক অবস্থা খুব খারাপ ,নেশা তো আছেই সাথে। ছোট পরিবার অসুস্থ মা আর ধীমান গ্রাম বাংলার অভাবে ঘরের মেয়ে হবার জন্য রত্না সংসারে সব কাজই করতে পারতো ,ধীমান রত্নাকে খুব ভালোবাসতো। ওদের দুটি সন্তান ,মেয়েটি লেখাপড়ায় ভালো। ছেলেটা হাতের কাজ জানে। তবে উড়নচণ্ডী। রত্নার ভাই হাই স্কুলের টিচার অবস্থা এখন খুব ভালো। অনেক জমি জায়গা কিনেছে। লোক দিয়ে চাষ ও করায় রত্না বাপের বাড়ি গেলে কিছু হাত খরচা চাইলে তবেই ভাই দেয় এখন রত্না একটি ব্যাগের কারখানায় কাজ করে মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়ে তখন এসাইলামের ভর্তি হতে হয় চিকিৎসার জন্য খরচ বেশ টাকা। স্বামী ছেলে মেয়ে কষ্ট করে জোগাড় করে চিকিৎসা করায় কখনো ইচ্ছে হলে ভাই সামান্য টাকা দেয় কখনো আবার দেয় না যে সংসারের জন্য রত্না অপরাধী শাস্তি দিতে পারল না। সব অন্যায় মুখ বুঝে মেনে নিতে বাধ্য হল সেই সংসারে থেকে সে কেবল পেল অবহেলা আমাদের দেশে মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়েদের বিয়ে হয়ে গেলে বাপের বাড়িটা হয়ে যায় বেড়াবার জায়গা খুব বিপদে পড়লে সামান্য কিছু ধার পাওয়া যায় যতই আইন থাকুক মনের দিক দিয়ে মেয়ে সন্তানকে বাপের বাড়ির বাবা মা ভাইরা কিছুই দিতে চায় না আঙ্গুল দেখিয়ে দেয়। শ্বশুর বাড়ির দিকে সেখানেই তাকে মানিয়ে চলতে হবে রত্না আজ বুঝে গিয়েছে, মেয়েরা কেবলই শ্রমিক মৌচাকে কেবল মধু সংগ্রহ করে এনে জমা করাই তাদের কাজ। তার স্বাদ গ্রহণ করা নয়।
===================