প্রতীক মিত্র
রাস্তার প্রস্থ ফুট দুয়েক হবে।দুর থেকে দেখলে ফাঁকা জমির দেওয়ালটাকেই মনে হয় যেন জায়গাটার সবটুকু গিলে খেয়ে নিয়েছে।সুমন্ত সাইকেল নিয়ে ওই রাস্তাটুকু দিয়েই অনায়াসে গলে গেল তাই অভীকই জানতে পারলো যে ওই রাস্তা দিয়েও যাওয়া যায়।।অভীক সুমন্তকে চেনে না।সুমন্তও অভীককে চেনে না। অথচ গত দিন পাঁচেক আগেই ওই সুমন্তই অভীকের একটা উপকার করেছে। করতে চায়নি হয়তো, করে ফেলেছে। অভীকের চুরি হওয়া ফোনটাকে ফিরিয়ে দিয়েছে এই বলে যে যে ফোনটা অভীকের পকেট থেকে পড়ে গিয়েছিল। অভীক নিশ্চিত ছিল যে ফোনটা পকেটমারিই হয়েছে। কথা বাড়ায়নি। ভালোয় ভালোয় স্বেচ্ছায় যখন চোর নিজেই ফোন ফেরত দিতে রাজী হয়েছে মন্দ কি।অথচ সুমন্ত চুরি সত্যিই করেনি। তবে চোর ওর পরিচিত। চোর নাকি চুরির পর আরো দুটো দিন অভীককে লক্ষ্য করেছে। অভীক মায়ের কিসব ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন, রিপোর্টের ছবি ওই ফোনে আছে বলছিল পাশের যাত্রীকে। চোর মানে সুমন্তের ওই পরিচিত দারিদ্র্য এবং সিস্টেমে গাফিলতির কারণে নিজের মাকে বাঁচাতে পারেনি। অভীকের বেলা মাএর কথা শুনে নড়েচড়ে বসেছে।সুমন্তকে বলেছে ফোনটা ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব নিতে।সে বাস অফিসে দিয়ে এসেছে। তার আগে অবশ্য অভীককে ফোন করেছিল। অভীক মনে মনে জ্বললেও ধন্যবাদ দেওয়ার পাশাপাশি কিছু বখশিশও দিতে চেয়েছিল। সুমন্ত নেয়নি।কারণটাও বলেছে।তবে একটু মিথ্যে মিশিয়ে। ওর বন্ধু যে চুরি করেছিল সে নাকি এটা খুঁজে পেয়েছে। সে বখশিশ চায় না।ভীষণ লাজুক।তাই ওকে বলেছিল অভীকের সাথে কথা বলতে।ব্যস। কথা ওখানেই শেষ হয়েছে। জীবন আবার নিজের গতিতে কখনো ধীমেতালে কখনো দ্রুত বইতে লেগেছে। রোজকারের মতন সরু রাস্তাটা দেখে অভীকের কৌতুহল ছিল কিছুটা।আজ সুমন্তকে দেখে আন্দাজ করতে পারলো এইটুকু রাস্তা দিয়েও যাওয়া যায়। রাস্তাটা টপকানোর সময় সুমন্তের সাথে অভীকের চোখাচুখি হল।ব্যস। ওই অবধিই। রোদে উত্যপ্ত দিন বাকি দুজনের কৌতুহলই ঘামের সাথে ধুইয়ে দিল।
--------------------------------------
প্রতীক মিত্র
কোন্নগর-712235, পশ্চিমবঙ্গ
ফোন: 8902418417