ভোলানাথ মণ্ডল : গল্প যাঁর সত্তাজুড়ে
অরবিন্দ পুরকাইত
২০২১-এ প্রকাশিত 'সব ভূতুড়ে কিসসা' নামে ভোলানাথ মণ্ডলের দ্বিতীয় গল্পের বইটি হাতে এসেছে তা নেহাত কম দিন নয়। ইতোমধ্যে প্রথম গল্পের বইটিও একদিন হাতে তুলে দিলেন তিনি — 'নির্বাচিত গল্প সংকলন'। সেটি কবে পড়া হয়ে ওঠে, পঠিত দ্বিতীয়টি কেমন মনে হল তাই-ই একটু লিপির আকারে রাখা।
দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার জয়নগর থানার বেলিয়াচণ্ডী গ্রামের জাতক ভোলানাথ মণ্ডল— বেশ বোঝা যায়— সেই প্রজন্মের, সেই প্রকৃতির, শৈশব-কৈশোরে যাঁরা রাক্ষস-খোক্কস, রাজা-রানি-রাজপুত্তুর-রাজকুমারী, ভূত-পেত্নীর কৌতূহলী মুগ্ধ শ্রোতা ছিলেন। তার সঙ্গে সেই শৈশব-কৈশোরের মায়া-কাজলমাখা অভিজ্ঞতা থেকে আজ তক যাপিত বাস্তব তাঁকে দিয়ে লিখিয়ে নেয় গল্পগুলি। সে মায়া-কাজল, সে বাস্তব তো আমাদের অনেকেরই কাছে বাস্তব, কিন্তু ভোলানাথদের মতো কতিপয়দের ক্ষেত্রে তফাৎটা এই, গল্প যেন এঁদের সত্তারই সঙ্গে জড়িয়ে থাকে! লেখার অক্ষরে সর্বদা তা প্রকাশ পাক আর না পাক।
শ্রী মণ্ডলের গল্প বলার ধরনটি বেশ আকর্ষণীয়। অতীত আর বর্তমান ঘরানার মিশেল আছে। তাঁর কোনও কোনও গল্পের পটভূমি অতীত হলেও বর্তমানের প্রেক্ষিতে ফেলা হয়েছে। বৈঠকী গল্পের আমেজও বর্তমান। বর্তমানে একটি নামি সংবাদপত্রে কর্মরত হলেও, একদা বিভিন্ন পেশায় নিযুক্ত থাকায় এবং কর্মসূত্রে দেশের নানান জায়গায় পদার্পণের সুবাদে তাঁর গল্পের ভুবন বহুদূর বিস্তৃত এবং সে কারণে পটভূমি ও কাহিনিবিন্যাসে বৈচিত্র্যও বর্তমান, যদিও সেসব গল্পের বেশির ভাগেরই পা বাংলার মাটিতেই এবং অনেকসময় তাঁর চৌহদ্দিতেই। 'বেশিরভাগ কাহিনির স্থান-কাল-পাত্রের সঙ্গে বাস্তবের অনেকটাই মিল পাওয়া যেতে পারে। কয়েকটি ঘটনা একেবারেই আমার নিজের অভিজ্ঞতাসঞ্জাত। আবার কিছু ঘটনা আমার মা-ঠাকুমা-দিদিমার কাছে শোনা।'— লিখেছেন ভোলানাথ।
শুরুতে 'কিছু কথা'য় গল্পকার 'সব গল্প ভূতের নয়। ভূত এখানে গৌণ, গল্পটাই মূল বিষয়। ঘটনাটাই আসল।' ইত্যাদি বলে নিলেও, বইটির নামকরণ নিয়ে আপত্তি আছে। প্রচ্ছদ এবং ভূতুড়ে কিসসা-র আগে 'সব' শব্দটি থাকায় প্রাথমিক দৃষ্টিতে যা প্রতীয়মান হয় তাতে করে ভৌতিক গল্প কয়টির বাইরে থাকা গল্প কয়টির প্রতি অবিচারই করা হয়েছে। এই নামে পুস্তকধৃত কোনও গল্পের নামে পুস্তকের নামকরণ করা হলে তবু ব্যাপারটা কিছুটা আলাদা ছিল। এ বইয়ের গল্পগুলিতে বিষয়বস্তুর বৈচিত্র্য তো নেহাত কম নয়। চরিত্রে ভৌতিক, সামাজিক থেকে রহস্য-রোমাঞ্চ, প্রতীকী ইত্যাদির মিশেল— সে স্বতন্ত্র গল্পে হোক বা একই গল্পে একাধিক উপাদান হিসাবেই হোক।
'স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় বসবাস করার সুবাদে আমি ছোটবেলায় দেখেছি বিভিন্ন জীবিকার মানুষ আমাদের গ্রামে যাতায়াত করতে। আসত তারা তাদের পেটের টানে। তাদের বিভিন্ন ধরনের পসরা। বিভিন্ন রকমের গলার স্বর। সুর করে হাঁক দেওয়ার কায়দাই বলো, আর বলার ভঙ্গিমাই বলো, সব ছিল আজব আজব ধরনের।'— এ কথার পর আকর্ষণীয় যে দু-একটি দৃষ্টান্ত দেন কথক তা তো আমাদের ছোটবেলারও এবং সেখান থেকে একটি নির্দিষ্ট জীবিকার মানুষের (কারও কুয়োতে বাসনপত্র ইত্যাদি পড়লে তোলা এঁদের কাজ) কাহিনির বাস্তবতাকে 'ঘটিহারানি' নামক গল্পের মোড়কে ধরে দিয়ে যে ঘোর বিষাদময়তার আবহে নিমজ্জিত করেন পাঠককে, সকৃতজ্ঞ স্যালুট জানাতেই হয় এই গল্পকারকে।
কলকাতার দোকানে নিজের পছন্দের হেলমেটটি প্রায় কেনা-হয়ে-যাওয়ার মুখে অন্য-একরকমের এবং দোকানের অবশিষ্ট একমাত্র হেলমেটটি একজনকে কিনতে দেখে যারপরনাই মনে ধরা এবং তা পাওয়ার প্রভূত চেষ্টা ও ব্যর্থতা, কিন্তু হাল-না-ছাড়া ইত্যাদি নিয়ে ব্যক্তি-মনস্তত্ত্বের অনবদ্য গল্প 'হেলমেট'। গল্পের শেষদিকে এসে পাঠক আবিষ্কার করেন যে গল্পটি এক রহস্য উন্মোচনেরও! সহজ নয় ব্যাপারটা।
প্রত্যন্ত এলাকায় শৌচাগারহীন যেসব পরিবারে 'বাইরে যাওয়া'র জন্যে আজও গাছপালা-ঝোপঝাড়ের আড়াল খুঁজতে হয়, সুন্দরবনের তেমনই এক দলিত পরিবারের দুই বোনের এক রাতে নিরুদ্দেশ হওয়া এবং বিত্তশালী লম্পটদের হাতে তাদের করুণ পরিণতি ও 'গল্পটা এখানেই শেষ হতে পারত' জাতীয় উক্তির অন্তিমে যেখানে পৌঁছায় কাহিনি, পাঠকের কাছে তা আর নিছক গল্প থাকে না, আর একবুক কষ্টের মাঝেও শেষে পাঠক খানিক দম ফেলে বাঁচে। 'রহস্য রহস্যাবৃত' নামের সেই গল্পে, জিজ্ঞাসিত হয়ে 'চোয়াল শক্ত করে' মেয়ে দুটির বাবা বলেছিল, 'ভেড়ি থেকে নষ্ট হয়ে ওরা যদি জ্যান্ত ফিরে আসত, আমি নিজের হাতে তাদের কেটে নদীর জলে ভাসিয়ে দিতাম!' সঙ্গত কারণেই এ উক্তির পূর্বে গল্পকার বলেছেন, 'ভাবতে অবাক লাগে পিছড়েবর্গ কতখানি পিছিয়ে আছে'।
'নির্ঘুম চোখে খোলা জানালার সামনে একটি চেয়ারে বসে আছেন আশিস। বাইরে লকডাউনের পৃথিবী। কখনও সখনও সামনে বাইপাসের আলোর বর্শা বিঁধে নিয়ে ছুটে যাচ্ছে একটা দুটো ছুটন্ত বাইক। নিস্তব্ধ চরাচরে টুই টুই করে ডেকে গেল নিশাচর এক পাখি। সকলেই নিশ্চিন্ত আপন কুলায়। মিটমিট করে জ্বলতে থাকা রাস্তার ভেপারের আলোয় একান্তে পড়ে থাকা রাস্তার দিকে তাকিয়ে উন্মনা হলেন আশিস। পরিযায়ী শ্রমিক নারান ওর বউ-বাচ্চা নিয়ে কতদূর পৌঁছাল আজ রাতে? মাথার উপর কি ছাদ জুটল, নাকি ঈশ্বরের গড়া ছাদের তলাতেই আস্তানা গাড়ল সবাই?' একান্ত বিশ্বস্ত অনবদ্য গল্প 'সংক্রমিত ব্যাধি'। একাধারে মানবিকতার টান এবং পরিবেশ-পরিস্থিতির চাপে অসহায়তা। আবার এক দিক দিয়ে, কাজের নিমিত্ত বাইরে বেরোনো দরিদ্র মানুষের লকডাউনে ঘরে ফেরার জন্যে ক্ষুধাতৃষ্ণাকে সঙ্গী করে দীর্ঘ পথ পাড়ির অসহায়তা আবার আপন আবাসে থাকা সচ্ছল মানুষেরও একরকম অসহায়তা। সময়ের সাক্ষ্যসম্পৃক্ত এ গল্প।
'বিমান দত্ত তার হাতদুটো ভালো করে পেঁচিয়ে ধরে জিজ্ঞাসা করে, সত্যি করে বলো তুমি কে? পাগল কেবলই ক্রূর হাসি হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে আপন মনে। প্রমিলা অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছে পাগলকে নিয়ে কেমন পাগলামি করছে তার কর্তা। হঠাৎ বিমান দত্ত প্রমিলাকে নির্দেশ করেন, "প্রমিলা, তুমি তেল সাবান আর বালতি নিয়ে চলো স্নানঘরে। আমি পাগলশালাকে ঘসে মেজে দেখব, এ ব্যাটা কে?"' কে এই পাগলা আর কে-ই বা এই বিমান দত্ত? কী তাদের পরিণতি? এমনকি আপন স্ত্রীর কাছে এতাবৎ খোলসা-না-করা কুলদেবদাই বা কী বিমান দত্তের? একটি ভাল গল্প 'কুলদেবতা'।
রাজার খনিত দুধপুকুর ব্যবহারের অধিকার নেই আর কারো। সে পুকুরে স্নান সেরে উঠে একটি করে মোহর দান করেন তিনি উপবিষ্ট সাধুকে, আশীর্বাদে সাধু রোজ উচ্চারণ করেন, 'বাবা, তুমি মানুষ হও।' রাজার সন্দেহ হয়, তবে কি তিনি মানুষ নন! একদিন প্রশ্নটা করেই ফেলেন। সাধু রাজাকে দুটি রঙিন পালক দিয়ে, সে দুটি কানের পাশে গুঁজে নিয়ে তাঁর মায়ের নামাঙ্কিত মনমোহিনী বাজারটা পার হওয়ার সময় ভাল করে মনোযোগ সহকারে অবলোকন করতে বলেন। কী হয় তাতে শেষ পর্যন্ত? চমৎকার রূপক গল্প 'ধর্ম'।
ভাল লেগেছে 'মোবাইল সহ ধৃত দুই ছিনতাইবাজ'কে নিয়ে সাম্প্রতিক প্রবণতার গল্প 'চোরের উপর বাটপাড়ি'। পাড়াতুতো দাদার মায়া-পড়ে-যাওয়া অদ্ভুত রঙের মুরগিটা রাত্রে গায়েব হওয়া নিয়ে বছর-তেরোর হীরুর খানিক সরল হিসাবের গোয়েন্দা গল্প 'হীরু গোয়েন্দা' এ বইয়ের পক্ষে একটু খেলো বলে মনে হয়েছে, শিশু-কিশোরদের গল্পগ্রন্থ হলে কথা ছিল।
ভৌতিক গল্প রচনাতেও শ্রী মণ্ডলের মুনসিয়ানা স্বতঃ স্বীকার্য। মূলত দীর্ঘ প্রতিকূল পরিবেশে যাপনের অনুষঙ্গেই ভূতের ধারণার বিকাশ বা প্রতিষ্ঠা। ভূত-ধারণার আয়ুর তুলনায় ভূত-লিখন অর্বাচীন। লেখার তুলনায় ভূত-গল্পের দীর্ঘ ঐতিহ্য দেশে দেশে কালে কালে। ভূত-ভীতির দৃঢ়মূল ভিত্তি আজ অনেকখানি অবসিত হলেও, ভূত-লেখার দীর্ঘ ধারা বজায় রেখে লেখকরা আজও ভূতের গল্প লিখে চলেছেন মূলত কাল্পনিক ভূত বা ভূত-সমাজের কথা-চিত্রে মানুষের সমাজকে প্রতিভাত করার বা দেখার অন্যতম অভিপ্রায়ে। বলা বাহুল্য, শ্রী মণ্ডলের ভৌতিক গল্পও তার ব্যতিক্রম নয়। ভূত-লেখার পাঠক ভূতের প্রতি বিশ্বাস বা বিজ্ঞানের উপর অবিশ্বাস না করতে পারলে, হাতে থাকে শেষ অবধি গল্পেরই প্রতি বিশ্বাস। শ্রী মণ্ডলও লিখেছেন, 'গল্পগুলির মাধ্যমে আমি কখনও ভূতের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে চাইনি— ভগবানেরও না; আবার ভূত বা ভগবানের অস্তিত্ব নেই এমন ধারণা গড়তেও সহযোগিতা করবে না গল্পগুলি। চেয়েছি কেবল ভূতুড়ে বা রহস্যময় গল্পগুলি পাঠকের হাতে তুলে দিতে। পাঠক গল্পপাঠের মজাটুকু পেলেই যথেষ্ট।''
পেত্নীদের গণবিবাহ'তে গণবিবাহের তিন পেত্নী পাত্রীর বিউটি পার্লারে আজকের মেক-আপ, ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট আসা ইত্যাদি নিয়ে মজা-করা আছে। 'বেঁড়ে শিবতলা'র— যেখানে প্রতিষ্ঠিত শিবমন্দিরে প্রতিবছর গাজনমেলা বসে— পিছনের কাহিনি-কিংবদন্তির গল্প 'যখের ধন'। 'মৃত্যুর মুখোমুখি' ও 'লর্ডসের বাংলো বাড়ি'র অনায়াস প্লটনির্মাণ মুগ্ধ করে। তবে এ দুটি, বিশেষত শেষেরটি যেন কোনও কিশোরদের বইয়ে হলে উপযুক্ত ছিল। 'কর্নেল সাহেবের ফিটন গাড়ি', 'মরিচিকা' বা 'ডুবন্ত মন্দির' গল্পের উপস্থাপন প্রসংশনীয়, কিন্তু যুক্তি-বুদ্ধি-বাস্তবতা ইত্যাদি সরিয়ে রেখে অনেকসময় শেষ অবধি কেবল সেই গল্পেরই উপর ভরসা রাখতে হয়, বা তার ব্যঞ্জনাতে। 'মায়াবী মানবী' আমাদের ছোটবেলার ভূতের গল্পের এক অন্যতম আদর্শ উদাহরণ বলা যেতে পারে। কিন্তু এ গল্প কাদের জন্যে? খুব ছোটদের হিসাবে ছাড়া একে মানায় বলে মনে হয় না। বস্তুত এ বইয়ের গল্প বাছাইয়ে আরও একটু মনোযোগের দাবি ছিল বলেই মনে হয়। এই গল্পটির পাশাপাশি পুস্তকের প্রথম গল্প 'ভূত যখন ফিরে আসে'কে দেখলেও তা প্রতীয়মান হবে বলে আশা করি। এই গল্পটিরও বুনন তথা পরিবেশন ভাল, কিন্তু অতীতকে বর্তমানের পটভূমিতে ফেলতে গিয়ে দু-একটি অসঙ্গতি ঘটিয়ে ফেলেছেন গল্পকার। লকডাউনের কালেও 'রণ-পা পাওয়া গিয়েছে দরজার বাইরে।' অতীতকে বর্তমানে এনে ফেললেও, ভৌতিক পরিবেশ সৃষ্টি করতে গল্পকারকে জানিয়ে রাখতে হয় অকুস্থলে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে কি না বা সেসময় লোডশেডিং বা অন্য কোনও কারণে বিদ্যুৎ সাময়িক বন্ধ কি না ইত্যাদি। সুরাট থেকে দুর্যোগপূর্ণ রাতে পুষ্যি ছেলে গুণধর এলে, 'ক্ষ্যান্তমণি মোমবাতি জ্বালিয়ে দিয়ে খাবার বাড়তে গেল হেঁসেলে।' (স্বামী-স্ত্রীর খেয়ে নেওয়ার পরেও যে খিচুড়ি ও বেগুনভাজা ছিল সেটাও জানানো থাকলে ভাল হত) 'পরের দিন রাত্রে ঝড়-বাদলার বালাই নেই। নেই মেঘের ঘনঘটা।... তারা চাঁদনি রাতের জ্যোৎস্না পান করেই চলেছে।' কৃপণ ভবসিন্ধুর স্বরূপ উন্মোচনকারী চমৎকার একটি উক্তি আছে এখানে গুণধরের গলায়, 'আমি ধরা দিতে এসেছি, আমাকে ধরলে তবেই না তুমি পুরস্কার পাবে! ধর আমাকে, কই বাবা, ধরে দেখাও, ধরবে না আমাকে?' এদিন তাদের বাড়িতে দেখা গেল কুপি ও দেশলাই। গল্প নির্মাণের নিমিত্ত গল্পকার কোনও সুবিধা নিতে পারেন, কিন্তু সেটা যথাস্থানে বা যথাসময়ে জানিয়ে রাখার কথা পাঠককে।
পুস্তকধৃত সতেরোটি গল্পের সব কয়টি নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা সম্ভব হল না। আলোচনায় সব কথা বলে ফেলাও সবসময় সঙ্গত নয়, তাতে করে পাঠক মূল গল্পগুলি আস্বাদন থেকে বঞ্চিত করতে পারেন নিজেদেরকে।
সুচেতনা প্রকাশিত বইটির একটি সুন্দর ভূমিকা লিখে দিয়েছেন রাজগড়া সাহিত্য সংস্কৃতি চক্র-র সভাপতি গল্পকার মদনমোহন মাহাতা। পম্পা সরদারের প্রচ্ছদ ভাল।
'কুলদেবতা'য় বিমান দত্ত সম্বন্ধে কখনও তিনি, কখনও সে প্রয়োগ করা হয়ে গেছে। 'লর্ডসের বাংলো বাড়ি'তে উত্তমপুরুষে গল্প বলা হলেও, শেষ অনুচ্ছেদে, 'তারা সেখান থেকে নেমে এসে বাইকটা স্টার্ট দিল।' বলা হয়ে গেল। 'হেলমেট'-এ প্রথম পাতার (পৃ. ১০৬) শেষ লাইনে 'ঠিক সন্ধ্যা সাতটায়...' থেকে একান্তই অনুচ্ছেদ হওয়া দরকার ছিল। 'সংক্রমিত ব্যাধি'তে মাছের ঝোল এক অনুচ্ছেদ পরে মাছের ঝাল হয়ে গেছে।
সুচেতনা রজতজয়ন্তী বর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান ২০২১-এ প্রকাশ উপলক্ষ্যে একাধিক পুস্তকের প্রস্তুতির চাপ থাকায় সম্ভবত, প্রুফ সংশোধনে উপযুক্ত সময় দেওয়া যায়নি আর তাই বানানে ভুল বা অসঙ্গতি রয়ে গেছে যথেষ্টই। 'পরিস্কার' 'ব্যাস্ত' রয়ে গেল পুরো বইজুড়ে!
শ্রী মণ্ডলের প্রতি অনেক শুভেচ্ছা।
=======০০০=======
পুস্তকের নাম : সব ভূতুড়ে কিসসা
লেখকের নাম : ভোলানাথ মণ্ডল
প্রকাশক : সুচেতনা
প্রকাশকাল : সুচেতনা রজতজয়ন্তী বর্ষ উদ্যাপন অনুষ্ঠান ২০২১
মূল্য : দুইশত পঞ্চাশ টাকা।