ক্যারাটে সেন্টার
প্রতীক মিত্র
শ্রীময়ীর ব্যস্ততা আর একটু বাড়লো। মেয়েকে ক্যারাটেতে ভর্তি করেছে। মেয়ের বয়স কত আর?সাত-আট। একদম অচেনা পরিবেশ। ফলে চট করে ছেড়ে যে চলে আসবে সেটাও শ্রীময়ী পারে না। অগত্যা মেয়ে যখন কসরত শেখার চেষ্টা করে, শ্রীময়ীও একটা অচেনা পরিবেশে অন্যদের সাথে বসে থাকে। দু'একদিন বই বের করে পড়ার চেষ্টা করেছিল, বাকি অভিভাবক যার মধ্যে অধিকাংশই মহিলা তারা এমন অবাক দৃষ্টিতে ওর দিকে চেয়েছিল যে ও সেই ঘুরেফিরে মোবাইলেই মন দিয়েছিল, কানে তার গুঁজে। উদ্দেশ্য বেশি কিছু না আশপাশের রদ্দি পরনিন্দা পরচর্চা থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখা। হয়তো ওর এই দুরত্ব বজায় রাখার ধরণটাও বাকিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছিল বেশি। তাই, বাকিদের মধ্যে মেশার তাগিদেই, শ্রীময়ী অনেকটা জোর করেই কথা শুরু করলো বাকিদের সাথে। কথা বলার কিছুক্ষণের মধ্যেই বুঝলো, ওর মতন ও কেউ কেউ আছে যে একটু আলাদা। কিন্তু কথা শুরু হলে সেইসব মহিলা নিজের সম্বন্ধে এত বেশি বেশি বেশি করে বকতে শুরু করলো যে শ্রীময়ী বাধ্য হল জোর করে ঢেকুর তুলতে। যদি ইঙ্গিতে সেইসব মহিলা কিছু বোঝে। মেয়েকে সন্ধ্যেবেলা একদিন নেওয়ার সময় ওখানে শ্রীময়ীর স্বামী হাজির হলে আবারো অবাক হল বাকিরা। তারাতো অন্য কিছুই ভেবেছিলো…স্বামী তমাল বেশ হাসিখুশি। যদিও মেয়ের ক্যারাটেতে বিশেষ ভবিষ্যত আছে বলে মনে হয়না। মেয়ে বাবাকে দেখে হাত নাড়লো বটে তবে সেখানে উচ্ছাস বিশেষ ছিল না। সে সেভাবেই বড় হচ্ছে। বাবা আছে তো আছে। মা একাই যথেষ্ট। তমাল কিছু মনে করে না। তারও সামাজিক জীবন আছে। এই একসাথে থাকা কম কি? ক্যারাটের সেন্টার থেকে বেরোনোর পরই তমাল গেল অন্যদিকে। শ্রীময়ী মেয়েকে নিয়ে গেল অন্যদিকে। সেটা অবশ্য কারোর চোখে পড়লো না।
========================
প্রতীক মিত্র
কোন্নগর-712235, পশ্চিমবঙ্গ