মাতৃ দিবস
এস এম মঈনুল হক
মাতৃত্বের অনুভূতি পৃথিবীর সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ অনুভূতি। একজন নারী যেদিন মা হন সেদিন শিশুর প্রথম স্পর্শে, শিশুর প্রথম কান্নায়, মায়ের মুখে হাসি ফোটে। এসব কিছু তাঁর কাছে একটা আলাদা অনুভূতি। শিশু যখন প্রথম মা বলে ডাকে তখন মায়ের অন্তরে এক অনাবিল আনন্দের সৃষ্টি হয়। মা হল পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। মায়ের গুনে শিশুর ভবিষ্যৎ তৈরি হয়। মায়েরা সবসময় তাদের সন্তানদের সমস্ত বাধা-বিপত্তি থেকে ঢালের মত রক্ষা করে। মায়ের ঋণ কোনদিনই শোধ করা যায় না। মা ডাকের মধ্যে আছে স্বর্গসুখ। মায়ের আদরে যে আরাম আছে ,ভরসা আছে, তা আর পৃথিবীর কারও আদরে। নেই মায়ের কোলে যখন প্রথম শিশু জন্ম নেয় সর্বাগ্রে খুশি হন তার স্বামী। গর্ব করে বলে আমি পিতা হয়েছি। তারপর এই আনন্দ পরিবারের মধ্যে স্বর্গীয় অনুভূতির সৃষ্টি করে। মায়ের পায়ে সন্তানদের স্বর্গ। মায়ের হাতের স্পর্শে সন্তানের রোগের উপশম হয়। মা-ই হচ্ছেন স্বর্গ সুখের প্রথম সোপান। পৃথিবীতে যেসব নারীরা মা হতে পারেননি, তারা মাতৃত্বের স্বাদও অনুভব করতে পারেননি। তবে এটা সত্য যে তিনিও একজন নারী। সম্মানের দিক থেকে মা যেমন সন্তানের শিরোমণি, ঠিক নারী জাতীও সমাজের শিরোমণি। নারীদের জন্যই এই পৃথিবীর পরিব্যাপ্তি। নারী যদি তার গর্ভে সন্তান ধারণ না করত তাহলে এই পৃথিবী অনেক আগেই শেষ হয়ে যেত। আমাদের সুখ, আনন্দ, বিলাসময় জীবনের প্রথম ধাপই হচ্ছেন মা। পৃথিবীর সব সম্পর্কের মধ্যে স্বার্থ থাকলেও মায়ের সম্পর্কে কোন স্বার্থ নেই। বাজার থেকে আমরা আসলে পরিবারের অন্য সদস্যরা বাজারের ব্যাগের দিকে তাকিয়ে থাকে। মা কিন্তু তাকিয়ে দেখেন ছেলের মুখ। মা ঠিকই অনুভব করতে পারেন তার ছেলের শারীরিক অবস্থা এখন কেমন। স্বামী ছেলে-মেয়েদের কষ্টে মায়ের অন্তর চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। মা যে সম্মানের যোগ্য তাকে সেভাবে সম্মান দেওয়া আমাদের সার্বজনীন কর্তব্য। মায়ের অবদান, তার আত্মত্যাগ, তার সবকিছু স্বীকৃতির জন্য সারা বিশ্বে মাতৃ দিবস পালন করা হয়। মায়েদের জন্য এটি বিশেষ দিন। প্রত্যেকটি জীবনের বেঁচে থাকার জন্য একজন মায়ের কিছু না কিছু আত্মত্যাগ থেকেই যায়। অনেকে মনে করেন, আনা জারভিস নামে আমেরিকান মহিলা তার প্রয়াত মায়ের সম্মানে গির্জায় উপাসনার আয়োজন করেন ১৯০০ সালে। সেই থেকেই দিনটি পালন করা শুরু হয়। ২০২৪ সালে মাতৃ দিবস পালিত হবে ১৪ ই মে। আসুন, আজ আমরা এই দিনটিকে প্রাণের থেকেও বেশি ভালোবেসে পালন করি।
----------------------------------
গ্রাম: ফুলসহরী, ডাক: রমনা সেখদিঘী, জেলা: মুর্শিদাবাদ ।