ছবি - সংগৃহীত ।
স্মরণে নজরুল
প্রদীপ কুমার দে
কিশোর বয়সে আমার এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু আমাকে কবি কাজী নজরুল এর বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা বলতো প্রায়শই। ওর সঙ্গে কবিদের পরিবারের মেলামেশা ছিল। কথাটা কোনভাবে স্কুলে ছড়িয়ে যায়। আমাদের শ্রেণী শিক্ষক সুনীল বাবু কথাটি লুফে নেয়। শুরু হয় তোড়জোড়। আয়োজন সমাপ্ত হলে একদিন আমরা সবাই মিলে পদ্মপুকুর, ক্রিষ্টোফার রোডে ওনার বাড়িতে গিয়ে উঠি।
ভালোই ব্যবস্থা ছিলো। আমরা যাবো তাই। বন্ধুর ক্ষমতা ছিলো। কবি তখন প্রকৃতিস্থ ছিলেন না। তবুও ওনার ছেলে বৌমা ওনাকে সুন্দর ভাবে পরিধান পড়িয়ে বসিয়ে রেখেছিলেন।
ওনাকে দেখে আমরা আনন্দ পেলেও যেই না একে একে সবাই পায়ে হাত রেখেছি, ব্যস সর্বনাশ! দেখে কে? চিৎকার করে উঠেছেন উনি। সে কি গর্জন! সেদিনই বুঝেছিলাম সুস্থ অবস্থায় ওনার ক্ষমতা কি ছিলো! পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছিল আমার বন্ধু ও ওনার ছেলে আর বৌমা। আমার আর এক বন্ধু সুদীপ তার ক্যামেরা নিয়ে সাহসের সংগে মিলিত ছবিও তুলেছিলো। কিন্তু দুর্ভাগ্য আমাদের, পরবর্তী কালে ছবি ধুতে গিয়ে দেখা যায় সব ছবিই জ্বলে গেছে।
আজ সেই কথা বারবার মনে পড়ছে। ভুলিনি। শুধু ভুলে গেছি সেই ঘনিষ্ঠ বন্ধুটির নাম। সবই বয়সের দোষ! তবে তাকে জীবনেও ভুলবো না। আর জীবনের এই প্রথম একজন ভগবান কবির পায়ে হাত রাখার কথাও বুকে ছবি হয়ে আঁকা রইলো। হাত আমার ধন্য তাই!
আজ কবির জন্মদিনে ওনার জন্য এই হাত দিয়েই সেই স্মৃতি লিখে ফেললাম । প্রনাম।
==========================
প্রদীপ কুমার দে
বিরাটী আবাসন
এল আই জি -৯
এম বি রোড
নিমতা
কোলকাতা।