রিভিউ ।। 'আগামী সাহিত্য'র শারদ সংখ্যা ১৪৩০ ।। অরবিন্দ পুরকাইত
নিশিকান্ত
সামন্ত সম্পাদিত ষাণ্মাসিক 'আগামী সাহিত্য' পত্রের শারদ সংখ্যা ১৪৩০ (২৩
তম বর্ষ, প্রথম ও দ্বিতীয় সংখ্যা,
অক্টোবর ২০২৩)
পড়লাম। পত্রিকাটিতে রয়েছে কবিতা প্রবন্ধ-নিবন্ধ, অণুগল্প ইত্যাদি। স্থানীয় ইতিহাস, ঐতিহ্য, স্থান, ব্যক্তিত্ব প্রভৃতি গুরুত্ব পায় এ পত্রিকায়।
'সাম্প্রতিক আঞ্চলিক ইতিহাস চর্চা : কিছু ভালো লাগা, কিছু কথা' শীর্ষক দৃষ্টান্ত সহযোগে দেবীশঙ্কর মিদ্যার লেখাটি নবীন-প্রবীণ লেখক-গবেষকরা অনুধাবন
করলে মঙ্গল। 'হরদম প্রায় একই বিষয় ঘুরিয়ে ফিরিয়ে অসংখ্য বই লেখার থেকে
সারা জীবনে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নির্ভুল একটি মাত্র বই লেখা অনেক
আদরণীয়।'— এ বক্তব্যের সঙ্গে
সাহমত্য স্বাভাবিক (ঠিকমতো বলতে গেলে, যতদূর সম্ভব নির্ভুল)। দেবীশঙ্করবাবুদের আজও এসব
কথা বলতে হচ্ছে সেটাই তো বেদনার। জ্ঞানপাপীও
কম নই আমরা। ভাল
লেগেছে 'স্বাধীনতা সংগ্রামে ফলতার কিছু কথা' শীর্ষক তপনকান্তি মণ্ডলের লেখা, চট্টগ্রাম নোয়াপাড়ার জাতক এবং পরবর্তীতে বুড়ুল হাই স্কুলের শিক্ষক বিপ্লবী অনুরূপ চন্দ্র সেনের স্মৃতিতে ২০০৪ সালে শুরু-হওয়া মেলাকে নিয়ে 'বিপ্লব তীর্থ শহীদ অনুরূপ মেলা (বুড়ুল)' শীর্ষক শৈলেন মাইতির লেখা, 'আমতলা হাটের ইতিকথা' শীর্ষক অলক মণ্ডলের লেখা, ওয়াজেদ আলির কলকাতা পর্বকে নিয়ে 'মেটিয়াব্রুজে নবাবী শিল্প ও সংস্কৃতি' শীর্ষক
হৃষীকেশ পালের লেখা, নিশিকান্ত সামন্তর সংবাদমূলক নিবন্ধ 'মন্দিরময় শিবক্ষেত্র জয়চণ্ডীপুর' এবং সাক্ষাৎকারমূলক নিবন্ধ 'হীরকদ্যুতি'। অকালপ্রয়াত নাট্যব্যক্তিত্ব
মধুসূদন চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে তাঁর সহোদর অর্ঘ্যচন্দন চট্টোপাধ্যায়ের লেখাটি পড়ে মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে গেল।
সুব্রত সুন্দর জানার 'সুন্দরবনে মাসির বাড়ি' ও সঞ্জয় গায়েনের
'বাসা' গল্প দুটি ভাল লাগল। শ্রী জানার গল্পটি কেন অণুগল্প হিসাবে সূচিপত্রে দেওয়া হল বোঝা গেল
না। এই বিভাগেই পিন্টু
পোহানের নামটা দেখলাম, কিন্তু তাঁর লেখা 'তিনি দীনেশচন্দ্র সেন' তো একটি নিবন্ধ
! গুটিকয় কবিতা ভাল লেগেছে।
রয়েছে 'বনছায়া পত্রিকা প্রকাশ অনুষ্ঠান', "'বিসারী নীল দিগন্ত' পত্রিকার প্রকাশ অনুষ্ঠান", 'মাথুরে গ্রামালোক সাহিত্য বাসর', 'নামখানায় সাহিত্য সম্মেলন', 'রাধাকান্তপুরে সাহিত্য সভা' ও 'বুড়ুল কবিতা
উৎসব' শীর্ষক সংবাদমূলক টুকরো টুকরো লেখা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রচ্ছদে।
স্থানীয় এমন ইতিহাস-ঐতিহ্য বা বিষয়-ব্যক্তিত্ব
নিয়ে প্রবন্ধ-নিবন্ধ রচনা একান্তই দরকার, বিশেষত দীর্ঘদিন যেদিকে চোখ ফেরানো হয়নি। তবে লেখায় যথাযথ উল্লেখসূত্র রাখাটা একান্ত আবশ্যক। বিশেষত স্থানীয় একই বিষয়াদি একাধিক কলমে প্রকাশিত হয়, কতখানি তার চর্বিতচর্বন আর সত্যি নব
সংযোজন কতটা তা খানিক বোঝা
যায় এমন উল্লেখে, পূর্ববর্তী কাজের প্রতি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে সঙ্গে ফুটে ওঠে গবেষক-লেখকের নিজ নিজ কৃতিত্বও। প্রুফ দেখা আরও যত্নের দাবি রাখে।
পত্রিকার
নাম : আগামী সাহিত্য
সম্পাদকের নাম : নিশিকান্ত সামন্ত
সম্পাদকীয় দপ্তর : গ্রাম— দেউলবেড়িয়া, ডাক— পাথরবেড়িয়া, থানা— বিষ্ণুপুর, জেলা— দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা, ডাকসূচক সংখ্যা— ৭৪৩ ৩৭৭। চলভাষ— ৯৮৩৬৬ ৮৪৯৬০
------------------------------------------------------
অরবিন্দ পুরকাইত
গ্রাম ও ডাক — গোকর্ণী,
থানা — মগরাহাট,
জেলা — দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা।