আরতি মিত্র
ধ্বংস এবং সৃষ্টি এই পৃথিবীতে অহরহ চলছে।
মানুষের মধ্যে হানাহানি হিংসার মনোভাব চিরবিরাজমান।
মানুষ বিশ্বস্রষ্টার হাত থেকে ধ্বংসের ভার নিজের হাতে তুলে নেবার জন্য আদিষ্ট হয়েছে।
নিজেরাই নিজেদের বিচারকের আসনে আসীন হয়েছে।
কিন্ত দিকে দিকে এই যে অপমৃত্যুর লীলা চলছে ,
তাতে অগ্নির বন্যা নেই।
সহমরণের মতো অগ্নির লেলিহান শিখা তাকে গ্রাস করে নি।
মানুষের মনের পুঞ্জীভূত বেদনা থেকে তার পাপ যদি ক্ষয় না হয় তাহলে নবসৃষ্টির পথ প্রসারিত হবে না।
সুপ্তির অতলে বিলীন হয়ে যাবে।
কাঁটার আঘাত তাকে প্রতি পদক্ষেপে বিভ্রান্ত করবে।
বিভিন্ন বাঁধায় মানুষের চলার পথ কন্টকাকীর্ণ হবে।
মানুষের পাপের ক্ষয় না হলে প্রলয়ের ভস্মস্তুপের মধ্যে তার অঙ্কুরোদ্গম হবে না,
নবসৃষ্টির বুকে সেই বীজ কাঁটার আঘাতের মতো আবার জেগে উঠবে।
নিজহাতে হত্যার ভার গ্রহণ করলো মানুষ ধর্মরাজের আদেশে।
পথিক পথভ্রষ্ট হয়ে গ্রহের সাহায্যে দিক নির্ণয় করে থাকে।
মানুষ হত্যা করছে ঠিকই কিন্ত সেই হঠাৎ মৃত্যুর চিতানলে দগ্ধ হচ্ছে না,
সহমরণের মতো অগ্নিদেবতা তাকে গ্রাস করছে না।
প্রতিনিয়ত মানুষ এই যে পাপ করছে ,
এর ক্ষয়সাধন করা অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠেছে।
এই কাজ করার পরে অনুতাপের যে দুঃখ তা পলে পলে যদি মানুষকে দগ্ধ করে তবে সেই দুঃখের অনির্বাণ শিখার দ্বারা তাদের পাপের ক্ষয় সাধন সম্ভব হবে।
চলার পথে অহরহ বিভিন্ন বাঁধা রয়েছে।
এই বাঁধাকে অতিক্রম করেই মানুষ নতুন সৃষ্টির পথকে সুগম করবে।
যদি মানুষ পাপকে জয় করতে না পারে তাহলে নবসৃষ্টির বীজ কোন সুফল নিয়ে আসবে না।
পথ সংকট-বন্ধুর দীর্ঘ ---
কিন্ত এই কন্টকে জর্জরিত না হয়ে কন্টককে অতিক্রম করতে হবে।
নিজের বিচারের ভার মানুষ নিজে গ্রহণ করে বিচারকের আসনে বসেছে !
একই হাতে সে ধ্বংস এবং সৃষ্টিকার্য করতে সচেষ্ট হয়েছে !
পাপভারে জর্জরিত হবার কারণে একাধারে ধ্বংস এবং সৃষ্টি করতে সক্ষম হচ্ছে না।
একমাত্র দুঃখভোগই এই নবসৃষ্টির পথকে সুগম করতে পারবে।
তা না হলে সৃষ্টির বীজ প্রলয়ের ভস্মস্তুপে সুপ্ত হয়ে যাবে ,
পরিশেষে নবসৃষ্টির বুকের উপর কাঁটার মতো উত্থিত হবে।
===============================
Arati Mitra.
267/3 Nayabad. Garia.
Kol.700094