মুক্তগদ্য ।। চাষির খুশির কারণ ।। হারান চন্দ্র মিস্ত্রী
ছবিঋণ- ইন্টারনেট।
চাষির খুশির কারণ
হারান চন্দ্র মিস্ত্রী
অনেক বছর পরে আবার পৃথিবীকে নতুন সাজে দেখতে পেয়ে পুলকিত হলাম। আমার এই আনন্দ অনেকে অনুভব করবেন। প্রকৃতির লীলা সবার চোখে ধরা পড়ে না। আমরাও সাংসারিক কাজের চাপে পড়ে প্রকৃতির দিকে ফিরে তাকাবার সময় পাই না। তার মধ্যে যখন কোন আতিশয্য প্রকৃতির মধ্যে ফুটে ওঠে চোখ তখন প্রকৃতিকে এড়িয়ে যেতে পারে না। তখন আমরা প্রকৃতি দর্শন করতে বাধ্য হই। সে সময় মনে এক অনবিল আনন্দ জেগে ওঠে।
২০১৯ সালে মানুষ স্বাভাবিকভাবে কাজকর্ম থেকে বিরত ছিল। রাস্তায় সেভাবে গাড়ি চলে নি। কল-কারখানার ধোঁয়া কম মিশেছে পরিবেশে। বেশি গাছ কাটা পড়ে নি। প্রকৃতি অনেকটা দূষণমুক্ত হয়েছে। কিন্তু এবারে চাষের জমির পরিবেশ আলাদা মাত্রা পেয়েছে।
কোভিডের সময় কারখানায় কাজ না হলেও জমিতে চাষ হয়েছে। এমনকি দো-ফসলী চাষ হয়েছে। জমি বিশ্রাম পায়নি। বৃষ্টি আহামরি হয়নি। ইদানিংকার মতো ক্ষেতে ঘাস জন্মায় নি। জমির দৃশ্যপট বদলায়নি।
এবারের পরিবেশ পুরানো দিনকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে। তখন এক ফসলী চাষ হতো। মাঠে প্রচুর গোরু চরত, মোষ ছাগল ভেড়া চরত। তাদের মল-মূত্র পড়ত জমিতে। জমিতে জৈব সার যোগ হতো। জমি দীর্ঘদিন বিশ্রাম পেত। ঘাস ভরে যেত জমিতে। দূর্বা, ছাবনা, পাতি, চুঁচকোয় ঢেকে দিত জমির মাটি। গরু দিয়ে মাটি চষে ফেলার পর সেগুলো জৈব সারে পরিণত হতো। বিনা রাসায়নিক সারে ভরে যেত ক্ষেতের ধান। সেই দিনগুলো এখন স্বপ্নের মত লাগে।
এ বছর বেশ বৃষ্টি হয়েছে বোরো ধান তোলার সময়। নাড়াও রয়ে গেছে জমিতে। বৃষ্টির জলে মাটি রসাল ছিল। এখন পর্যন্ত ক্ষেতে প্রচুর ঘাস জন্মেছে। গবাদি পশুরা তা তৃপ্তি করে খাচ্ছে। ক্ষেত এ বছর প্রচুর জৈব সার পাবে। বর্ষা আসতে বিলম্ব হাওয়ায় চাষ বিলম্বে হচ্ছে। জমি খানিকটা বিশ্রাম পাচ্ছে। সবুজ ঘাসের জন্য জমি উর্বর হবে। চাষ দেরিতে হলেও ফসল ভালো হবে। চাষিদের চোখে-মুখে তেমনই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
হারান চন্দ্র মিস্ত্রীগ্রাম ও পো:-আমতলা,থানা- ক্যানিং,জেলা-দক্ষিণ ২৪পরগনা