স্বাধীনতা-আন্দোলনে তিন  বঙ্গললনা
রমলা মুখার্জী
ভারতের স্বাধীনতা-আন্দোলনে  পুরুষের সাথে নারীদেরও বিশেষ অবদান ছিল। কিন্তু অনেক নারীর কথাই ইতিহাসে লেখা নেই। আজ  এরকমই তিনজন বঙ্গনারীর কথা বলবো।
    চট্টগ্রামের রায়বাহাদুর পরিবারের মেয়ে কল্পনা দত্ত কলকাতা বেথুন কলেজের বিজ্ঞানের ছাত্রী থাকাকালীন স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। যখন তিনি বাড়িতে আসতেন বোমা তৈরীর মশলা নিয়ে এসে তাই দিয়ে বোমা তৈরী করতেন। পুলিশের সন্দেহে বিপ্লবী পুরুষের সাথে বাইরে থাকতেও তিনি পিছপা হন নি। কিন্তু নাদিরা গ্রামে ধরা পড়ে তিনি ছ'বছর কারাবন্দী ছিলেন।
       বীরভূমের স্বাধীনতা সংগ্রামী দুকড়ি বালা দেবী ছিলেন বিপ্লবী নিবারণ ঘটকের মাসিমা। বোনপোর দলে যোগদান করতে তিনি ইচ্ছুক হলে নিবারণ ঘটক বিপদের কথা ভেবে বারণ করলে তাঁর মাসিমা বলেছিলেন, "সন্তান যদি পারে তো মাও পারবে"। তিনি বিপ্লবে যোগদান করলেন। ১৯১৭ সালের ৮ই জানুয়ারি পিস্তল লুকিয়ে রাখার অপরাধে দুকড়ি বালাদেবীকে শিশুপুত্রকে ফেলে দুবছর সশ্রম কারাবাসে থাকতে হয়। জেলে অসীম নির্যাতন ও অমানুষিক পরিশ্রম সহ্য করেও তিনি বাড়িতে ভালো আছেন বলে চিঠি পাঠাতেন।
         আরও একজন  স্বাধীনতা  সংগ্রামী বঙ্গললনার নাম কল্যানী দাস।
১৯০৭ সালের ২৮ শে মে কৃষ্ণনগরে জন্ম গ্রহন করেন তিনি।   ১৯৩২ সালে 'আইন অমান্য" আন্দোলনে অংশ নেওয়ার কারণে তিনি গ্রেপ্তার হন। তিনি ছাত্রী সংঘের উদ্যোক্তা এবং ব্রিটিশ বিরোধী রাজনীতির জন্য কারাবরণ করেন। ১৯৪২ সালের 'ভারত ছাড়' আন্দোলনেও তিনি  যোগদান করেন এবং বোম্বেতে তিন মাসের জন্য তিনি  কারাবরণ করেন।
 স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় অনেক বাঙালি নারীরাও এইভাবে নিজের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে দেশমাতার মুক্তিতে অগ্রণী হয়েছিলেন। আমরা সেই সমস্ত বীরাঙ্গনা নারীদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ রাখবো।
=======================
 ডঃঃ রমলা মুখার্জী
বৈঁচী, হুগলী। 
 
  

 
 
 
 
