গল্প ।। যেমন কর্ম তেমন ফল ।। সমীর কুমার দত্ত
0
জানুয়ারী ০১, ২০২৫
চিত্রঋণ - ইন্টারনেট
যেমন কর্ম তেমন ফল
সমীর কুমার দত্ত
সৌম্যময় গুপ্তের পলিটিক্যাল সায়েন্সে মাষ্টার্সের ফাইনাল ইয়ার। কোচিং খুলে বসেছে বাড়ির নীচের তলায়। মাষ্টার্স কমপ্লিট হলে পি.এইচ.ডি করে অধ্যাপনা করার ইচ্ছা আছে। পাড়ার ও পাড়ার বাইরের ছেলে মেয়েরা পড়তে আসে। পাড়ার মেয়ে সিঞ্জিনি সেনও পড়তে আসে। সিঞ্জিনি মাধ্যমিকে নব্বই পার্সেন্ট পেয়ে একাদশ শ্রেণীতে ভর্তি হয়েছে। সিঞ্জিনির বাবা সত্যব্রত সেন সিটি কলেজ অফ কমার্সের নৈশ বিভাগের অধ্যাপক। এছাড়া সেন্ট স্টিফেন স্কুলের কমার্সের টিচার।
সিঞ্জিনিকে সৌম্যময় মুখ চিনতো মাত্র। কথাবার্তা ছিলো না। পাড়ার হলে কি হবে ওদের বাড়ির কেউই সৌম্যময়েদের বাড়ির কারোর সঙ্গে কথা বলে না। ঘটনা একটা আছে নিশ্চয়ই। সেই ঘটনাই উভয় বাড়ির লোকজনদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করেছে।
সত্যব্রত সেন সত্যের মুখোমুখি হতে ভয় পায়। তাই সত্যকে এড়িয়ে চলতে চায়। বহিরঙ্গে একটু গাম্ভীর্যপূর্ণ। অন্তরঙ্গে সুবিধাবাদী। শিঞ্জিনিকে সৌম্যের ভর্তি করতে নিয়ে গেছে সত্যব্রতের স্ত্রী সোমলতা। ইচ্ছা না থাকলেও আপত্তি করে নি। গুপ্ত বাড়ির প্রতি সত্যব্রতের কৃত অপরাধ তাকে তাড়িয়ে বেড়ায়। মনে প্রাণে চায় ব্যাপারটা যাতে মিটে যায়। কিন্তু মেটাবার মুখ তার নেই। সিঞ্জিনি মাধ্যমিক পাশ করার পর সোমলতা স্বামী সত্যব্রতকে জিজ্ঞাসা করেছিলো," কিগো, তুমি সিঞ্জিনিকে সৌম্যের কোচিংয়ে ভর্তি করাতে নিয়ে যাবে তো? উত্তরে সত্যব্রত বলেছিলো, "ও তুমি নিয়ে যাও।"
সোমলতা জানে না সত্যব্রতের ও বাড়িতে না যাওয়ার কারণ কি। সোমলতা জানলে সত্যব্রত স্ত্রীর কাছে মুখ দেখাতে পারতো না।
সৌম্যময় মনে মনে নিশ্চয়ই ভাবে —এটাই তো সে চেয়েছিলো। সিঞ্জিনি ও সোমলতা দুজনেই সুন্দরী। সত্যব্রকেও সুপুরুষ বলা যায়। পড়া শুরু হলো। সিঞ্জিনির সৌম্যের পড়ানো ভালো লাগলো। কালক্রমে সৌম্য ও সিঞ্জিনির মধ্যে একটা সম্পর্ক তৈরি হলো। পড়াতে পড়াতে দৈবাৎ শারীরিক স্পর্শে উভয়ের মধ্যে প্রেমাকর্ষণ অনুভূত হলো।তারপর উভয়ের দৃষ্টির মধ্যে একটা মাদকতা দেখাদিল। এসব অনেক ছাত্রছাত্রীর তা দৃষ্টি এড়ায় নি। চিঠি লেনদেন চলতে শুরু হলো। সৌম্যের অপরাধ বোধ সিঞ্জিনিকে বলতে বাধ্য করে, "চিঠি গুলো বাইরে পড়ে ছিঁড়ে ফেলে দিও। নাহলে বাড়ির কেউ হাতে পেয়ে গেলে সব শেষ তো হয়েই যাবে,উল্টে পড়তে আসাও বন্ধ হয়ে যাবে।" সিঞ্জিনিও তাই ভাবে, তাই সৌম্যের কথা মতো ওখানে আড়ালে গিয়ে পড়ে রাস্তায় ফেলে দেয়। কিন্তু সিঞ্জিনি তো প্রেমের ব্যাপারে ততটা পাকাপোক্ত নয়। তাতে যে সৌম্যের দেওয়া চিঠির কোন প্রমাণ রইলো না , ভবিষ্যতে সেরূপ কিছু হলে সৌম্য বেঁচে যেতে পারে। ফাঁসলে সিঞ্জিনিই ফাঁসে। এ কথা ভাবার মতো মানসিকতা কোমলস্বভাবা অনভিজ্ঞ সিঞ্জিনির নেই।
সৌম্যের কথায় সিঞ্জিনি খুব অনুপ্রাণিত হয়। সৌম্যকে ভীষনভাবে ভালোবেসে ফেলে। সৌম্য ছাড়া সে অন্ধকার দেখে। সৌম্যের সঙ্গে সে গাঁটছড়া বাঁধতে চায়। বাড়ি থেকে আপত্তি করলেও সে শুনবে না। সৌম্যকে তার জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করে। মাঝে মাঝে সকলে চলে গেলেও সে নানা ছুঁতোয় কোচিং থেকে বেরোতে দেরি করে। উভয়ের মধ্যে চোখ চুখি ইশারা হয়। নির্জনে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হয়। এইভাবে শারীরিক সম্পর্কও চলতে থাকে আবার শিক্ষক সৌম্যের বিশেষ তত্ত্বাবধানে পড়াশোনাও চলতে থাকে সমানতালে। ফলত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সিঞ্জিনি শতকরা নব্বইভাগ নম্বর পেয়ে পাশ করে। সত্যব্রত স্বভাবতই খুশি হয়। পলিটিক্যাল সায়েন্সে অনার্স নিয়ে কলেজে ভর্তি হয় সিঞ্জিনি। কলেজে পার্ট ওয়ান পাশ করার পর ওরা রেজিস্টি ম্যারেজ সেরে ফেলে। কারণ বলা তো যায় না গ্রাজুয়েশন করার পরেই হয়তো বাবা মেয়ের বিয়ে দিয়ে দেবে। তাহলে তো সৌম্যের উদ্দেশ্য সফল হবে না। উদ্দেশ্য বিয়ের আগেই সিঞ্জিনিকে অন্তঃসত্ত্বা করার পর তাকে বিয়ে করে সত্যব্রতকে উপযুক্ত শিক্ষা দেওয়া। তাতে তো কিছু বলার থাকবে না। কারণ তারা ইতিমধ্যে রেজিস্টি ম্যারেজ করে দম্পতি হয়ে গেছে। সুতরাং আইন অনুযায়ী তারা দম্পতি। কেউ তাদের অবৈধ বলতে পারবে না। কিন্তু সত্যব্রত যা করেছে সর্বৈব অবৈধ। সময় থেমে থাকে না। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যারা পারে না তারা সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষ। যুবক যুবতীদের থেমে থাকলে চলবে না। ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে বি.এ পাশ করলো সিঞ্জিনি। এদিকে সিঞ্জিনি ও সৌম্য গোপনে রেজিস্টি করার কথা ফাঁস হয়ে গেলো কারো মারফৎ। সোমলতা সিঞ্জিনিকে জিজ্ঞাসা করে," যা শুনছি তা কি সত্যি?"
"হ্যাঁ মা, সত্যি। তোমরা যদি বাধা দাও তাই গোপনে আমরা রেজিস্ট্রি করেছি। আমি ওকে ভালোবাসি। ও আমাকে ভালোবাসে।তোমরা মেনে না নিলে, আমার কিছু করার নেই। আর তাছাড়া আমি প্রেগন্যান্ট। নষ্ট করতে চাই না। তোমরা বিয়ে না দিলে আমরা মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করে নেবো। আমাদের আর দেরি করলে চলবে না।" সপ্রতিভ সিঞ্জিনি উত্তর দিলো।
—বাঃ বাঃ, চমৎকার! বলতে লজ্জা করছে না! পড়তে গিয়ে এইসব হয়েছে! ছেলেটাই বা কি রকম? ছাত্রীদের সঙ্গে প্রেম ভালোবাসা!আর কেউ পড়তে আসবে?
—আসবে মা আসবে। ভালো পড়ালে আসবে নাই বা কেন? সবার সঙ্গে তো প্রেম হয়ে যায় না। ওর দিকে আঙুল তোলার আগে নিজেদের দিকে আঙুল তোলা উচিত। আর লজ্জার কথা বলছো। সেটা আমাদেরও কি আছে? আমারও ভাবতে লজ্জা করছে। ও ইচ্ছা করেই এই কাজ করেছে। আমার আর মুখ খুলিও না। বাবাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করো। ওর সঙ্গে আমার ভালোবাসা না হলে কিছুই জানতে পারতাম না।
—কী জানতে পেরেছিস্ তুই বাবার অপকর্মই তো আমার সাহস বাড়িয়ে দিয়েছে।
—কী অপকর্মের কথা তুই বলছিস তুই?
—বাবাকে গিয়ে জিজ্ঞেস করো। আমি নির্লজ্জের মতো বলতে পারবো না।
সিঞ্জিনি আর আগের মতো নেই। সৌম্য ওকে তৈরি করে দিয়েছে। প্রেম যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে,দেহ আর বাঁধ মানতে চায় নি, সব যখন একাকার হয়ে গেছে। সৌম্য সিঞ্জিনিকে বলেছিলো," যেদিন বুঝলাম তুমি আমায় ভালবাসো, সেইদিনই ঠিক করে ফেলেছিলাম তোমার বাবাকে যোগ্য জবাব দেবার সময় এসেগেছে। একে হাতছাড়া করা যাবে না।
—ঠিক বুঝলাম না। 'যোগ্য জবাব দেবার ' ব্যাপারটা ঠিক বুঝলাম না।
—এখনই জেনে নেবে না বিয়ের পর জানবে? বিয়ের পর জানলে আবার পিছিয়ে যাবে না তো? শুনলে তুমি অবশ্য তোমার বাবাকে ঘৃণাই করবে।
—আহা, পিছিয়ে যাবো কেন? তা হলে রেজিস্ট্রি করতাম?
—সে তুমি এ সব জানোনা বলেই করেছো।
—কী জানি না সেটা বলবে তো। আমি ধৈর্য্য ধরতে পারছি না।
—তবে শোনো।
সৌম্য শুরু করলো সিঞ্জিনির বাবার কাহিনী—"তুমি তোমার বাবাকে শ্রদ্ধা করতেই পারো তাঁর চরিত্র না জেনে। জানলেও কিছু করার নেই। কারণ মানুষ নিজের লোকের দোষ দেখতে পায় না। সবাই পক্ষপাত দোষে দুষ্ট। আত্মপক্ষ সমর্থন সবাই করে। আর করে বলেই তো ভুক্তভোগীরা সঠিক বিচার পায় না।
—হেঁয়ালী করো না তো।
—তবে শোনো—আমার ছোট পিসি মন্দিরা তোমার বাবার কাছে পড়তে যেতো। মন্দিরা পিসি কমার্স পড়তো চাকরি করার জন্য। মন্দিরা পিসিকে তোমার বাবা একদিন প্রোপোজ করে। পিসি তোমাদের মতো সুন্দরী নয় বটে তবে দেখতেও খারাপ নয়। বরং আলাদা একটা আকর্ষণ আছে। তোমার বাবাই যে প্রোপোজ করেন তার প্রমাণ আছে। মন্দিরা পিসি একটু লাজুক প্রকৃতির। সেইদিন কোন উত্তর দেননি। প্রাণের বন্ধু অপরাজকে জিজ্ঞাসা করে। অপরাজিতা পিসি বলে," এখন কোন উত্তর দিস্ না। আগে দুদিন দেখ। যদি দেখিস খুব ঘ্যান ঘ্যান করছে তখন না হয় রাজি হয়ে যাস্ । মন্দিরা পিসি হ্যাঁ বলতে পারেনি। শুধু বলেছিলো,
" আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।"
—কি করলে বিশ্বাস করবে?
—না না,থাক কিছু করতে হবে না। মুখে বললেই হবে।
বলে মন্দিরা পিসি হেসে গড়িয়ে পড়ে। এইভাবেই প্রেমের সূত্রপাত এবং প্রেম চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে যায়। মন্দিরা পিসি বিশ্বাস করেছিলো তোমার বাবাকে। পিসি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে তোমার বাবাকে বিয়ের জন্য বলে। তোমার বাবা কতো সহজে পিসিকে অ্যাবোরশন করিয়ে নিতে বলেন। উনি আরও বলেন, " এ বিয়ে আমার পক্ষে এই মুহূর্তে করা সম্ভব নয়। তুমি বরং অ্যাবোরশনটা করিয়ে নাও। বেড়াতে যাবার নাম করে কোন জানাশোনা নার্সিংহোমে গিয়ে। যা খরচ লাগে আমি দিয়ে দেবো।"
এই কথা শোনার পর মন্দিরা পিসি আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
তখন অপরাজিতা পিসি বাড়িতে সব কথা বলে দেন।
বাড়ির সকলে জানতে পেরে লোকলজ্জার ভয়ে বড় পিসির বাড়ি শিলিগুড়িতে পাঠিয়ে দেন। সেখানে এক নার্সিংহোমে অ্যাবোরশন করিয়ে দেয়। ছোট পিসি আর আমাদের বাড়িতে ফিরে আসেননি। মাঝখান থেকে পড়াশোনা বারোটা বাজলো এবং চাকরি করার স্বপ্ন চুরমার হয়ে গেলো।তার ছমাস পর বড়ো পিসি ওখানে একজন বয়স্ক বিপত্নীক পাত্রের কাছে কোন কিছু গোপন না করে বিয়ে দিয়ে দেন পাত্রের দুটি বাচ্চাকে দেখার শর্তে।
এবার তুমি বলো ছোট পিসির এই অবস্থার জন্য কে দায়ী? বিয়ে করার সময় সুপাত্রটি সেজে তোমার মাকে বিয়ে করে ঘরে তুললেন। সহধর্মিনী কি জানেন পতি পরমগুরুর কেচ্ছা কাহিনী?"
কথাগুলো বলতে বলতে সৌম্যের চোখে জল এসে যায়। কিছুক্ষণ পরে নিজেকে সংযত করে বলতে শুরু করে,"শুধু তাই নয়, আমার ঠাকুমা হার্টের রোগী। তাঁকে এই ঘটনা আড়াল করার চেষ্টা করা হয় কিন্তু ফলপ্রসূ হয়নি। বাড়ির সকলের উত্তপ্ত কথোপকথনে ঠাকুমা জানতে পেরে যান। তিনি হার্টফেল করেন। দাদু বেঁচে থাকলে তোমার বাবা রেহাই পেতেন? তোমার বাবার জন্য আমাদের দু দুটো জীবন নষ্ট হয়ে গেছে। আমি যদি ঠিক তোমাকে তোমার বাবার মতো অস্বীকার করি তাহলে কি খুব অন্যায় করা হবে? কিন্তু আমি তা করবো না। আমি তোমায় বিয়ে করে তোমার বাবাকে শিক্ষা দিতে চাই। যদিও এই সুযোগে আমার বাড়ির লোকের তোমাকে অস্বীকার করার অধিকার আছে। তবুও আমার বাড়ির লোক তা করবে না। তাহলে তো দুপক্ষই সমান অপরাধী হয়ে যাবে। তবে এ বাড়িতে সত্যব্রত সেনের উপস্থিতি তারা সহজে মেনে নেবে না। কারণ তাতে আমার পিসির প্রতি অবিচার করা হবে।আর কোন মুখ নিয়েই বা তিনি এ বাড়িতে ঢুকবেন। তবে সোমলতা অর্থাৎ সিঞ্জিনির মায়ের জন্য এ বাড়ির দ্বার অবারিত।এবার তুমি বলো তোমার বাবাকে তুমি শ্রদ্ধা করবে না ঘৃণা করবে?"
শিঞ্জিনি সৌম্যের কথাগুলো শুনছিলো আর মনে মনে বাবার প্রতি ঘৃণা হচ্ছিলো। এতোদিন পর স্পষ্ট হলো, এই দু বাড়ির লোকেদের কথাবার্তা বন্ধ থাকার কারণ। তার নারীত্ব জেগে উঠলো। সৌম্যের ছোট পিসির নারীত্বের এই অবমাননা সহ্য করতে পারছিলো না। সৌম্য তার বাবার থেকে অধিকতর মানবিক, সৎ মানুষ বলে তার মনে হলো। বাবা ওদের বিয়েতে বাধা দিলে যা এতোদিন গোপন ছিলো, চিৎকার করে বলে বকধার্মিক বাবার মুখোশটা খুলে দেবে।
সিঞ্জিনি মা সোমলতাকে জানালো, এই মুহূর্তে সৌম্যকে তার বিয়ে করে নেওয়া ছাড়া পথ নেই , কারণ সে কনসীভ করেছে। সৌমের পিসি যা করেছেন তা সে করতে রাজি নয়। এর পর দেরি করলে দুপক্ষেরই মুখ পোড়া যাবে। সে সৌম্যদের মুখ অন্তত পোড়াতে পারবে না। বাবা কি করেছিলো সৌম্যের ছোট পিসির সঙ্গে এতো তাড়াতাড়ি ভুলে গেলো? সৌম্য বাবার মতো নয়। ও তাকে সোশ্যাল মেরেজের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। সোমলতা সব কথা শুনে সত্যব্রতকে বোঝতে লাগলো। সত্যব্রতের মুখ খোলার আর জায়গা নেই। স্ত্রীর কাছে তার চরিত্রটা স্পষ্ট হয়ে গেছে ,যা এতোদিন গোপন ছিলো। আবার মনে মনে ভাবলো,ও মন্দিরার সঙ্গে যা করেছে, তা ক্ষমার্ঘ নয়। এ বিয়েটা মেনে নেওয়া সমীচীন। তাতে মন্দিরাদের বাড়ির লোকজনের কাছে কিছুটা হলেও মান রক্ষে হবে। ওদের মনের যে ঘা,তার কিছুটা হলেও উপশম হবে। তবে তিনি ও বাড়িতে তিনি যাবেন না,কারণ যাওয়ার মতো মুখ তাঁর নেই। বিশেষ করে মন্দিরকে এ মুখ তিনি দেখাতে পারবেন না। তাছাড়া সোমলতার উপস্থিতিতে মন্দিরার মুখোমুখি হওয়া লজ্জার। তারপর সৌম্য-সিঞ্জিনির বিবাহ ঘটা করে মিটে গেলো। তবে যার জন্য সত্যব্রত ও বাড়িতে যেতে চাইলো না, সেই মন্দিরাই বিয়েতে আসেনি। সত্যব্রতের জন্যই মন্দিরা বাপের বাড়ি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়লো।
সমীর কুমার দত্ত
(বালি, হাওড়া)