সুনীপা শী
তানিয়া, তোকে লেখা আমার প্রথম চিঠি। তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। তোকে একদিন না দেখলে আমার মোনটা বড়ো অস্থির করে। বুঝতে না পারা পড়া আমরা দুইজনে কলেজের লাইব্রেরি তে দুজন দুজনকে বুঝিয়ে দিই। তারপর প্রতিদিন এর চোখে দেখা কতো সব ঘটনা আমরা দুইজনে ক্যান্টিনে বসে চা খেতে খেতে গল্প করি। এমন কি মাঝেমধ্যে আমি বাড়ি থেকে টিফিন নিয়ে জেতে ভুলে গেলে তোর আনা টিফিন আমরা দুইজনে ভাগ করে খেতাম। জানিস তো তানিয়া কিছুদিন হলো তোকে আমি একটা কথা বলব বলব করে বলতে পারছি না। তাই তোকে আমি চিঠিতে লিখে জানাচ্ছি। যে কথাটা বলব বলে তোকে এই চিঠিটা দিচ্ছি, সেই কথাটা হলো-আমি তোর সাথে সারাটা জীবন পথ চলতে চাই। আমি তোকে ভালোবাসি। I love you Taniya. I love you. তুই হয়তো ভাবছিস এই কথাটা তোকে আমি সামনাসামনি বললাম না কেন? কিংবা ফোনে জানালাম না কেন? এ ও নিশ্চয়ই ভাবছিস আমরা দুই জনে প্রতিদিন ফোনে কতক্ষণ ধরে chating করি আর chating এই বা বললাম না কেন? কিংবা whatapp এ জানালাম না কেন? বলছি বলছি ফোনে কিংবা সামনাসামনি যদি বলতাম তাহলে সাদা কাগজের উপরে হাত দিয়ে খস খস করে লেখার মজাটাই পেতাম না। তাছাড়া ফোনে কিংবা সামনাসামনি যদি তোকে আমি আমার ভালোবাসার কথা বলতাম তাহলে যে তোকে একবার কি দুইবার বলতাম আর তারপর তোর উত্তর আমি পেয়ে জেতাম। আর chating কিংবা whatapp এ যদি জানাতাম তাহলে তুই আমার লেখা গুলো বার বার ফোনে দেখতিস। আর তখন তোর ফোনে চার্জ ই ফুরিয়ে যেতো। এবার হয়তো তুই ভাবছিস চিঠিতে লিখে জানালাম কেন? কারন আমার এই লেখা চিঠি খানি তোর যতবার মন চাই বে ততবার ই তুই পরতে পারবি। আর সেই সাথে আমার কথা ও তোর মনে পরবে। আমি তোর চিঠির উত্তরের অপেক্ষায় রইলাম। সেই সাথে এও বলছি কাল valenties day. আমাদের কলেজের পিছনে যে বাগান আছে আমি ঐ বাগানে সকাল দশটার সময় তোর জন্য অপেক্ষা করব। আমার বিশ্বাস তুই আসবি। ইতি তোর প্রিয় বন্ধু রাজ।
পরের দিন আমি কলেজের পিছনে বাগানে দশটার সময় হাতে একটি গোলাপ আর ছোট্ট একটি উপহার নিয়ে তানিয়ার জন্য অপেক্ষা করছি, আর বার বার ঘড়ির দিকে আর রাস্তার দিকে তাকিয়ে দেখছি। আর মনে মনে ভাবছি তানিয়া কখন আসবে। এগারোটা বেজে গেলো তানিয়া এলো না। আর তানিয়া আসছে না দেখে আমার ইচ্ছা করছে তানিয়ার ফোনে একবার ফোন করি। আবার ভাবছি না আজ আমি তানিয়াকে ফোন করব না। ওর সাথে একার সামনাসামনি কথা বলব। তানিয়া আসছে না দেখে আবার আমি মনে মনে ভাবি আমার ভালোবাসার কথা তানিয়াকে আমি সামনাসামনি ভাবে বলিনি বলে তাই হয়তো ওর অভিমান হয়েছে। আর সেই জন্যেই আমাকে একা একা এখানে অপেক্ষা করছে। আবার ও মাঝে মধ্যে ভাবি তানিয়া আজ নিশ্চয়ই খুব সুন্দর করে আমার জন্য সেজে আসবে, আর সাজতে গিয়ে হয়তো তানিয়ার দেরি হচ্ছে। আমি জানি তানিয়া তুমি ও আমার ই মতন আমাকে একদিন না দেখলে তোর ও মনটা অস্থির করে। তানিয়ার জন্য আমি অপেক্ষা করতে থাকলাম। আর অপেক্ষা করতে করতে ঘড়িতে দেখি চারটে বেজে গেছে। তারপর আমি আর থাকতে না পেরে তানিয়াকে ফোন করলাম। তানিয়ার ফোনে আমি যতবার ই ফোন করি ততবার ই বলে সুইজ অফ। আমি ফোনটা রেখে দিয়ে বাগানে থাকা বেঞ্চির মধ্যে বসে পরলাম। আমার দুই চোখ দিয়ে টপ টপ করে জল পরতে লাগল। জলভরা চোখে কণ্ঠ কাঁপা গলায় বলতে লাগলাম- তানিয়া তুই ও আমার মতন বলতিস না, তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড। একদিন আমাকে তুই না যদি দেখতিস তাহলে তোর মোনটা ও আমার মতন অস্থির করত। তাহলে তুই কি করে পারলি তোর বেস্ট ফ্রেন্ড এর ভালোবাসা কে refused করতে। আমাদের বাগানের ফোটা গোলাপ টি আমি তোর জন্য এনেছিলাম। আর এই যে gift Ta তোর জন্য এনেছি এটা জানিস কিভাবে কিনেছি? প্রতিদিন টিফিন এর টাকা জমিয়ে জমিয়ে। তুই তো আজ আর এলি না আর তোকে ও এই ফুল আর এই ছোট্ট gift টাও দেওয়া হলো না। না না না এ আমি কি বলছি, তোকে দেবো বলেই না আমি এই গোলাপ আর এই gift টাএনেছি। তোকে না দিয়ে আমি কি করে চলে যাবো।দেখবি কি করে তোকে আমি আমার ভালোবাসার উপহার দিই। দেখ তবে বলে নিজের হাত কেটে বাগানে থাকা বেঞ্চির উপরে I love you Taniya লিখে লেখার উপর গোলাপ ফুলটা আর গিফট টা রেখে বললো- কোনো দিন যদি তুই এই বাগানে আসিস তাহলে দেখবি তোর এই বেস্ট ফ্রেন্ড রাজ তোর জন্য এই ছোট্ট উপহার রেখে গেছে। বলে চলে যেতে লাগল। পিছন থেকে তানিয়া রাজকে ডাকে রাজ I love you. রাজ পিছন ফিরে দেখে তানিয়া খুঁরিয়ে খুঁরিয়ে আসছে। আর তানিয়ার মাথায় ব্যান্ডেজ। রাজ ছুটে গিয়ে তানিয়া কে জিজ্ঞেস করে এই অবস্থা তোর কেমন করে হলো? তানিয়া তখন বললো তোর কাছেই আমি আসছিলাম। আর আস্তে আস্তে রাস্তায় একটা বাইক এসে আমাকে ধাক্কা মারে। আর আমি স্নেসলেস হয়ে যাই। তারপর আমার যখন গ্যান ফেরে আমি দেখি হসপিটালের বেডে শুয়ে আছি। আর তারপর ই তোর কথা আমার মনে পরে। আর তখনই আমি ছুটে তোর কাছে চলেআসি। আমার ভালোবাসার কথা জানাব বলে। রাজ তখন তানিয়াকে বলে তুই আমাকে এতোটা ভালোবাসিস। আর আমি কি না - তানিয়া তখন বললো তুই ভাবলি আমি আমার বেস্ট ফ্রেন্ড কে ভালোবাসি না। আচ্ছা বেশ তুই নয় ভাবলি আমি তোকে ভালো বাসি না। কিন্তু তুই তো আমাকে ভালোবাসিস। আর ভালোবেসে আজকের দিনে আমার জন্য যে gift টা এনেছিস সেটা তো দে। রাজ তানিয়াকে বেঞ্চির কাছে নিয়ে গেলো। তারপর তানিয়া দেখল রাজ নিজের রক্ত দিয়ে i Love you Taniya লিখে লেখার উপর গোলাপ ফুল আর একটা gift রেখেদিয়েছে। তারপর তানিয়া রাজ এর হাতটা দেখল। রাজ এর হাত দিয়ে তখনও রক্ত বের হচ্ছে। তারপর তানিয়া চুরিদারের অন্যা ছিড়ে রাজ এ হাতে বেঁধে দিয়ে বললো - রাজ তুই আমাকে এতোটা ভালোবাসিস আমি আসিনি দেখে নিজের হাত কেটে রক্ত দিয়ে আমার নাম লিখেছিস বলে রাজ কে জরিয়ে ধরল আর বললো রাজ I love you. রাজ ও তানিয়াকে জরিয়ে ধরে বললো I love you.
===============
নাম- সুনীপা শী
গ্রাম- মামুদপুর
থানা- ফলতা
পোষ্ট- রাজারামপুর
জেলা - দক্ষিণ২৪ পরগনা।