Click the image to explore all Offers

অণুগল্প।। বি পজেটিভ।। অমিত কুমার সাহা


  বি পজেটিভ

 অমিত কুমার সাহা


  রাত তখন প্রায় ন'টা। বৃষ্টির ফোনটা বেজে উঠল।ফোনে চোখ যেতেই বৃষ্টির মুখটা এক অদ্ভুত বিতৃষ্ণায় ভরে উঠল।এ তো অর্ণবের নম্বর! দীর্ঘ প্রায় দু'বছর ওদের কোনো যোগাযোগ নেই। এমন কি ডিভোর্সের কেসও চলছে। অনেকক্ষণ ধরে বেজেই চলল ফোনটা। বৃষ্টি কিছুতেই রিসিভ করলো না।

একটুপর একটা মেসেজ এলো, অর্ণবের নম্বর থেকেই----

মা'কে হসপিটালে ভর্তি করেছি। প্রচুর ব্লিডিং হচ্ছে। তোমায় দেখার জন্য ছটফট করছে।

"দূর!যার সঙ্গে সম্পর্কবিচ্ছেদ শুধু সময়ের অপেক্ষা, তার মায়ের জন্য আবার আমায় জানাচ্ছে!কি নির্লজ্জ!"এসব ভাবতে থাকে বৃষ্টি।

না,কাল সকালে মা মামার বাড়ি থেকে ফিরলে মা'কে জানাতে হবে, অর্ণবের এই বিষয়টা। এতটা সাহস ও পায় কোথা থেকে?

এসব ভাবতে ভাবতে রাত ভোর হয়ে আসে। তখন প্রায় সকাল আটটা। কিন্তু মা তো এখনো ফিরল না!এমন সময় এক অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে। কি জানি অর্ণবই আবার ফোন করছে নাকি অন্য নম্বর থেকে? বৃষ্টি ফোনটা রিসিভ করে না। অনেকসময় ধরে বারবার ফোনটা আসার পর,একসময় বৃষ্টি ফোনটা রিসিভ করে।

"হ‍্যলো!"

"হ‍্যলো! আপনি কি বৃষ্টি মুখার্জি বলছেন?"একজন মহিলার গলা।

"হুম। কিন্তু আপনি কে?"

"আমি জেলা হাসপাতাল থেকে বলছি।"

"হাসপাতাল?কি হয়েছে!", বৃষ্টি বলে ওঠে।

"আজ সকালে আপনার মা বীণা মুখার্জি মারা গেছেন। গতকাল ওনার একটা অ‍্যক্সিডেন্ট হয়।
তারপর এক ভদ্রলোক ওনাকে এনে ভর্তি করান। ব্লাডও দেন। ওনার ব্লাড গ্রুপ মিলে যায় আপনার মায়ের সাথে,বি পজেটিভ। কিন্তু আপনার মা'কে বাঁচানো যায় নি!"

বৃষ্টির গলা আটকে আসে,ওর মনে পড়ে অর্ণবের সাথে ওর মায়ের রক্তের গ্রুপ এক ছিল।এই নিয়ে
আগে অর্ণব মজাও করত অনেক।বলত"মায়ের সঙ্গে অর্ণবের রক্তের সম্পর্ক,(কারণ বৃষ্টির গ্রুপ ছিল আলাদা)।"

"কি ম‍্যডম্, আপনি আসছেন তো?",ঐ মহিলা ফোনের ওপার থেকে বলে ওঠায় বৃষ্টির সম্বিত ফেরে।

"হুম, যাচ্ছি। কিন্তু ঐ ভদ্রলোক কি চলে গেছেন? ওনার নাম কিছু বলেছেন?", বৃষ্টি জিগ্গেস করে।

"উনি এখনো আছেন এখানে। আর ওনার নাম উনি জানিয়েছেন, অর্ণব রায়।"


                                সমাপ্ত

✍️ অমিত কুমার সাহা
9002199719

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.