Click the image to explore all Offers

গল্প।। দায়বদ্ধতা অথবা স্ববিরোধিতা সম্বন্ধীয় একটি ধাঁধা ।। চন্দন মিত্র


দায়বদ্ধতা অথবা স্ববিরোধিতা সম্বন্ধীয় একটি ধাঁধা  

চন্দন মিত্র   

 

হাততালিতে ফেটে পড়ল প্রেসক্লাব। বক্তৃতা শেষ করে তরুণ অধ্যাপক মঞ্চ থেকে নেমে পড়লেন। তাঁকে ঘিরে ধরলেন সাংবাদিক-দঙ্গল। দ্রুততার সঙ্গে বিভিন্ন চ্যানেলে বাইট দিয়ে তিনি গিয়ে বসলেন গাড়িতে। না, আজকে একটি মুহূর্তও নষ্ট করা সম্ভব নয় অনিকেতের। কম করে কুড়িটি প্রোগ্রামে অংশ নিতে হবে তাঁকে। তিনি নিজের হাতে গড়েছেন 'বাংলা ভাষা সুরক্ষা পরিষদ'। বিগত পাঁচ বছরের মতো এবছরও একুশে ফেব্রুয়ারিতে তাঁর দম ফেলবার সময় নেই।

     রাত বারোটায় বাড়ি ফিরে খুব একটা ভালো সংবর্ধনা পেলেন না অনিকেত। তাঁর নৃত্যপটীয়সী অধ্যাপিকা স্ত্রী মুখ ঝামটা দিয়ে বললেন, 'খেয়াল আছে তো সকাল নটায় প্লেন। রাতটাও তো বাইরে কাটিয়ে আসতে পারতে। আমি একা কতো দিক সামলাব।' তাঁর স্ত্রীও ফিরেছেন রাত করে। তবে তিনি ফিরেছেন একটু আগে, এগারোটার দিকে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে তাঁরও ছিল বক্তৃতা-নাচ-গানের ঠাসা প্রোগ্রাম। অনিকেত বুদ্ধিমান, ফলত কৌশলী। তিনি কথা না-বাড়িয়ে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়লেন।    

    সামান্য কিছু স্ন্যাক্স ও কফি খেয়ে অধ্যাপক দম্পত্তি লাগেজ গোছানোয় মন দিলেন। তারপর এলিয়ে পড়লেন সোফায়। ঘুমের ভিতর তাঁদের মস্তিষ্কে বিভিন্ন চ্যানেলের বাইটগুলো কোলাজের মতো ভেসে বেড়াতে লাগল। কাল সকালে তাঁরাও মেঘের ভিতর ভাসতে ভাসতে উড়ে যাবেন কামনার মোক্ষধাম অলকাপুরীর উদ্দেশে। সেই সাত-সাগর-তেরো-নদীর ওপারে স্বপ্নের দেশে তাঁদের আদরের ধন দশ বছরের পিয়ার্স নিপাট সাহেব হয়ে উঠছে।   

=========================

চন্দন মিত্র

ভগবানপুর (হরিণডাঙা)  

ডায়মন্ড হারবার, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

       

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.